বিনিয়োগকারীদের ঈদের আনন্দ ম্লান হওয়ার শঙ্কা! বিনিয়োগকারীদের ঈদের আনন্দ ম্লান হওয়ার শঙ্কা! - ajkerparibartan.com
বিনিয়োগকারীদের ঈদের আনন্দ ম্লান হওয়ার শঙ্কা!

4:58 pm , March 19, 2025

ছুটির ফাঁদে সঞ্চয়পত্র সহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে

বিশেষ প্রতিবেদক ॥  আসন্ন ঈদ উল ফিতরের আগে-পরের লম্বা ছুটিতে বরিশালে সঞ্চয়পত্র সহ বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগকারীদের ঈদের আনন্দ ম্লান হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।বরিশাল অঞ্চলে সঞ্চয়পত্র ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন মেয়াদী আমানতের মুনফার ওপর নির্ভরশীল অনেক পরিবারেই ঈদের আনন্দ হবে কিনা এ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। অথচসঞ্চয়পত্র সহ বিভিন্ন ব্যাংকে সব ধরনের আমানত ইতোমধ্যেই ডিজিটালাইজড করা হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সহ জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর থেকে বলা হচ্ছে।
কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখনো প্রতিদিন বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগকৃত মুনফার অর্থ সম্পূর্ণ হাতে কলমেই গ্রাহকের হিসেবে অন লাইনে জমা হচ্ছে। সঞ্চয়পত্র বা ব্যাংকসমূহে গ্রাহকের মুনফার মাসিক কিস্তির তারিখের দিন সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অন লাইনে বাংলদেশ ব্যাংকে পাঠানোর পরের দিন ‘ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফর-ইএফটি’ পদ্ধতিতে গ্রাহকের  ব্যাংক হিসেবে জমা হলেও পুরো কাজটি করতে হচ্ছে ব্যাংক বা সঞ্চয় অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের হাতে কলমে। পুরো কার্যক্রমটিই ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা করে থাকেন।
সঞ্চয় অধিদপ্তর কাগজে কলমে বিনিয়োগকারীদের অটোমেশন পদ্ধতির কথা বললেও সাপ্তাহিক ছুটি সহ যেকোন সরকারি ছুটির দিনে বিনিয়োগারীদের ব্যাংক হিসেবে মুনফার অর্থ স্বয়ংক্রীয়ভাবে জমা হচ্ছেনা। ফলে কোন ‘পরিবার সঞ্চয়পত্র’  ‘৩ মাস অন্তর মুনফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র’ ও ‘পেনশনার সঞ্চয় পত্র’র বিনিয়োগকারী যদি মুনফা পাবার দিন শুক্রবার হলে সে মুনফার অর্থ পাচ্ছেন পরবর্তি সোমবারে। কারণ শুক্র ও শনিবার দুদিন সপ্তাহিক ছুটির পর রোববারে ব্যাংক বা সঞ্চয় অধিদপ্তর থেকে ওইসব বিনিয়োগকারীর তথ্য অনলাইনে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানোর পরবর্তি কর্মদিবসে তা বিনিয়োগকারীর ব্যাংক হিসেবে জমা হলেই কেবল তারা অর্থ তুলতে পারছেন।
ফলে আসন্ন ঈদ উল ফিতরের আগে পরের ১১দিনের ছুটির ফাঁদে এবার বরিশাল অঞ্চলের সঞ্চয় অধিদপ্তরের লক্ষাধিক গ্রাহক সহ বিভিন্ন ব্যাংক সহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আরো অন্তত একলাখ গ্রহক চরম দুর্ভোগে পড়তে যাচ্ছেন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৩১ মার্চ ঈদ উল ফিতর। এ উপলক্ষে ৩০ ও ৩১ মার্চ এবং ১ ও ২ এপ্রির ঈদের ছুটি। কিন্তু ৩০ মার্চের আগের দুদিন ২৮ ও ২৯ মার্চ সাপ্তাহিক ছুটি এবং ২৭ মার্চ একদিন খোলা থাকলেও তার আগের দিন ২৬ মার্চ স্বাধিনতা দিবসের ছুটি। অপরদিকে ২ এপ্রিল ঈদের ছুটি শেষ হলেও ৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবারের পরের দুদিন শুক্র ও শনিবার আবার সাপ্তাহিক ছুটি।
সঞ্চয় অধিদপ্তর ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমূহের গ্রাহকদের মুনফার অর্থ এখনো হাতে কলমে অন-লাইনে পোষ্টিং দেয়ার কারণে আগামী ২৭ মার্চ যাদের মাসিক বা ত্রৈমাসিক মুনফার মেয়াদপূর্তি তারা তা পাবেন ঈদের পরে ৩ এপ্রিল।  এমনকি ২৮ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিলের মধ্যে যাদের মুনফা পাবার কথা, তারা তা পাবেন ৬ এপ্রিল।  ৩ এপ্রিল যাদের মুনফা পাবার কথা তাদের সে অর্থ ব্যাংক হিসেবে জমা হবে ৬ এপ্রিল। আর ৪-৬ এপ্রিলের মুনফার অর্থ গ্রাহকের ব্যাংক হিসেবে জমা হবে ৭ এপ্রিল।
একটানা বন্ধের কারণে বরিশাল অঞ্চলে বিভিন্ন সঞ্চয়পত্র ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এর বিপুল সংখ্যক বিনিয়োগকারী মুনফার অর্থ বা মেয়াদন্তে আসল টাকা পেতে দীর্ঘ সময়ই অপেক্ষা করতে হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক বিনিয়োগকারী বলেন, ‘সরকার কোনদিন কারো কাছ থেকে একদিনের সুদ আদায়েও ন্যূনতম কোন ছাড় দেয়ার নজির নেই। অথচ প্রতি সপ্তাহে দুদিন সরকারি ছুটি ছাড়াও বিভিন্ন পর্বের বিপুল সংখ্যক বন্ধের দিনগুলোতে গ্রাহকরা তাদের বিনিয়োগকৃত অথের্র মুনফা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে’। তাদের অভিযোগ ‘যদি সঞ্চয়পত্রের পুরো বিষয়টি কম্পিউটারাইজড হয়ে থাকে, তবে বন্ধ আর খোলা যেকোন অবস্থাতেই স্বয়ংক্রীয়ভাবে মুনফার অর্থ বিনিয়োগকারীর ব্যাংক হিসেবে জমা হবার কথা’।
এসব বিষয়ে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের বরিশাল আঞ্চলিক অফিসে যোগাযোগ করা হলে তারা সরকারি ছুটির কারণে বিনিয়োগকারীদের অসুবিধার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমাদের আসলে কিছু করার নেই।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT