4:27 pm , March 15, 2025

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ বিসিসির মশার ওষুধ, এ্যারোসল বা কয়েলে কোন কাজ হচ্ছে না। অপরিচ্ছন্নতার সুবাধে নগরজুড়ে এখন মশার রাজত্ব চলছে। দিন ও রাতে সমানে ঘরে বাইরে মশার কামড় সইতে হচ্ছে নগরবাসীকে। মশা নিয়ন্ত্রন বা নির্মূলের কোন কার্যকর পদক্ষেপ কোথাও দেখা যাচ্ছে না।
বরিশাল নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডেই বেড়েছে মশার উপদ্রব। এতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নগরবাসী। দিন কি রাত সব সময়ই মশা থেকে বাঁচতে মশারি বা কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হচ্ছে। এতেও ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন তারা। অনেকেরই অভিযোগ সিটি করপোরেশন থেকে ময়লা আবর্জনা ও ড্রেন পরিস্কার না করার কারনে মশা দিন দিন বাড়ছে। পাশাপাশি মশার ওষুধ যা দেয়া হচ্ছে তাতে মশা নিধন না হয়ে উল্টো ঘরে প্রবেশ করছে।
নগরবাসীর অভিযোগ সিটি করপোরেশন থেকে ওষুধ ছেটালেও তাতে নিধন হচ্ছেনা মশা। আর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে সিটি করপোরেশন। তবে এর জন্য নগরবাসীকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
একাধিক বাসীন্দা বলেন, মাঝে মধ্যে মশার ওষুধ ছিটাতে আসে। তাতে মশা না মরে আরো বেড়ে যায়। আমরা দিনেও কয়েল আর মশারি টানিয়ে থাকি। মশার কারনে বিভিন্ন রোগেও আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। সিটি করপোরেশনের নজরদারি আরো বাড়ানো দরকার।
বরিশাল নগরীর বিভিন্ন এলাকায় দিনের বেলায়ও ময়লা আবর্জনার বড় বড় স্তুপ দেখা যায়। সময়মত ময়লা আবর্জনা না সরানোর কারনে জন্মনিচ্ছে মশার লার্ভা। নগরীর ড্রেনগুলোর অল্প পানিতে ভাসছে মশার লার্ভা।
দ্রুত মশা নিধন সম্ভব না হলে বর্ষা মৌসুমে মশার উপদ্রব আরো বেড়ে যেতে পারে বলে মনে করছে নগরবাসী।
সচেতন মহলের দাবি, সিটি করপোরেশন থেকে যে ওষুধ ছেটানো হচ্ছে তা মশা নিধনের জন্য কার্যকর নয়।
বরিশাল সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগের চেয়ে তারা মশা নিধনের জন্য স্প্রে মেশিন ও ফগার মেশিনের সংখ্যা বাড়িয়েছে। বর্তমানে সিটি করপোরেশনে ১৮ টি ফগার মেশিন ও ৬০ টি হ্যান্ড স্প্রে মেশিনের মাধ্যমে মশা নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ওষুধের কার্যকারিতা দেখতে সিটি করপোরেশনের ৪ জন চিকিৎসক মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে।
তবে নগরবাসী বলছেন, বরিশাল নগরীতে মশার উৎসব চলছে। মাঝে মাঝে দেখি বিসিসি ওষুধ ছেটায়। ওষুধ দেয়ার পর মশাগুলো ড্রেন ছেড়ে বাসা বাড়িতে চলে যায়। মশার যে ওষুধ দিচ্ছে তা সঠিকভাবে মিশ্রণ করা হচ্ছেনা।
বিসিসির স্বাস্থ্য কর্মকর্তা খন্দকার মঞ্জুরুল ইসলাম শুভ্র বলেন, নগরীতে মশার উপদ্রব কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা মাঠ পর্যায়ে জোর তদারকি শুরু করেছি। প্রতিদিন চারটি ওয়ার্ডে আমাদের কার্যক্রম চলছে। মশার ওষুধ দেয়ার পর মশার লার্ভা নিধনে লার্ভিসাইড প্রয়োগ করি, এতে মশা মরে ভেসে উঠছে। প্রায় ৯০ ভাগ লার্ভা মারা যাচ্ছে। পরে ফগার মেশিনের মাধ্যমে কার্যক্রম জোরদার করি। নিয়মিত চারটি ওয়ার্ডে মশার স্প্রে ও ফগার মেশিন দিয়ে ফগার করা হচ্ছে। মশা নিধনের জন্য যে ওষুধ প্রয়োগ করা হচ্ছে তা সঠিক। এই ওষুধে কোন সমস্যা নেই। নগরবাসীর অসচেতনতার কারনে মশার উপদ্রব বাড়ছে। যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এক্ষেত্রে নগরবাসীর আন্তরিকতার ঘাটতি হচ্ছে বলে দাবি করেন বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারী।
তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা চারটি ওয়ার্ডে একসাথে মশার ওষুধ প্রয়োগ করতে পারি। আমরা যে ওষুধ দিচ্ছি তা ডাক্তার মাঠ পর্যায়ে গিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছে। ওষুধে কোন সমস্যা নেই। তবে এক্ষেত্রে নগরবাসীকে আরো সচেতন হতে হবে।
তবে বাস্তবতা হলো প্রতিদিন মশার উপদ্রব বাড়ছে। ঠিক কোন ধরনের মশা এখন নগরী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তার সঠিক তথ্য কোথাও মেলেনি।