5:26 pm , March 13, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। সেই থেকে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট পর্যন্ত দীর্ঘ সময় শাসন করেছে শেখ হাসিনা সরকার। ২০০৮ সালে ভোটের মাধ্যমে সংসদে গেলেও এরপর টানা তিনটি নির্বাচনে তারা ভোট কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতার মসনদে বসেছে। আর ক্ষমতায় যাওয়ার পর পরই বিএনপি ও জামায়াতকে কোনঠাসা করার মিশনে নামে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দোসররা। এ জন্য ব্যবহার করা হয় পুলিশ ও প্রশাসনকে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং পুলিশের নির্যাতনে দীর্ঘ ১৫ বছর মাঠে দঁড়াতে পারেনি বিএনপি ও জামায়াত। এ সময়ের মধ্যে তাদের অনেক নেতাকর্মী, খুন, গুম, হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন। হাজার হাজার মায়ের বুক খালি হয়েছে। শুধু রাজনৈতিক কর্মসূচি নয় ধর্মীয় কোন অনুষ্ঠানও করতে দেওয়া হয়নি বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের। সবচেয়ে দু:খের বিষয় হলো রমজান মাসে বিএনপি ও জামায়াত ঠিকমতো ইফতার পার্টি পর্যন্ত করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ সরকার সবচেয়ে বেশি আঘাত হেনেছিলো ধর্মীয় অনুভূতিতে। হাসিনা আমলে এদেশের মুসলমানরা ছিলো অনেকটা সংখ্যালঘুদের মতো। আলেমরা ছিলো শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় শত্রু। গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর দেশে অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে হাসিনামুক্ত প্রথম রমজান এদেশের মানুষ সবচেয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে পালন করতে পারছেন। রাজনৈতিক নেতারা উম্মুক্তভাবে আয়োজন করতে পারছেন ইফতার পার্টি। বিশেষ করে ১৫ বছর পর বৃহৎ পরিসরে ইফতার মাহফিল করছে বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল। গত ১১ মার্চ থেকে নগরীতে ইফতার মাহফিল শুরু করেছে বিএনপি। প্রতিদিন ৭-৮টি ওয়ার্ড নিয়ে এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হচ্ছে। এতে উপস্থিত থাকছেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক, সদস্য সচিব জিয়া উদ্দীন সিকদারসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। পর্যায়ক্রমে ৩০টি ওয়ার্ডেই ইফতার মাহফিল ও দোয়া-মোনাজাত করবেন দলটির নেতারা। এর বাইরে মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আফরোজা খানম নাসরিনের উদ্যোগে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ইফতার মাহফিল এর আয়োজন করা হচ্ছে। আজ শুক্রবার ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছেন মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির। অপরদিকে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ার অনুসারীরাও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করবেন বলে জানাগেছে। এছাড়া আজ বরিশাল ক্লাবে ইফতার পার্টির আয়োজন করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এতে দলটির আমীর মুফতি সৈয়দ মো: রেজাউল করিম উপস্থিত থাকবেন। আগামী ১৭ মার্চ আইনজীবী সমিতি ভবনে ইফতার মাহফিল ও দোয়া-মোনাজাতের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মুয়াযযম হোসাইন হেলাল। জাতীয় পাটিও এবার ইফতার পার্টি করবে বলে দলটির নেতারা জানিয়েছেন। সবকিছু মিলিয়ে এবার ইফতার পার্টিকে ঘিরে জমজমাট হয়ে উঠেছে এখানকার রাজনীতি। এ ইফতার মাহফিলের উদ্দেশ্য যাই থাক না কেন দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সমর্থকরা বেজায় খুশী। এতদিন পর মুক্ত আকাশে একসাথে বসে ইফতার করতে পারছেন এতেই তৃপ্ত সবাই।