4:39 pm , March 10, 2025

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ বরিশাল মহানগরীতে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ৮নম্বর জাতীয় মহাসড়কের ওপর নির্মিত সাবেক সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর মায়ের নামে বে-অইনীভাবে নির্মিত শাহানা বেগম পার্কটি ছাত্র-জনতা দু’দফায় ভাঙ্গার পরেও নগরভবন নিশ্চুপ। একটি জাতীয় মহাসড়কের জমি সহ মূল ক্যারেজওয়ের ওপর নির্মিত এ পার্কটি অপসারণে সড়ক বিভাগ থেকে নগরভবনকে দেয়া চিঠিরও কোন জবাব দেয়নি সিটি কর্পোরেশন।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বিগত হাসিনা সরকার পতনের পর একদফা পার্কটিতে ভাংচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। সম্প্রতি ঢাকার ৩২ নম্বরে হামলার পরের দিন সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা বুডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়। ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পার্কটি নিয়ে শুরু থেকেই ক্ষোভের শেষ ছিলনা। পার্কটি নির্মান করতে গিয়ে সাবেক নগর পরিষদ এলাকার সর্বসাধারনের চলাচলের শতাধিক বছরের পুরনো একটি রাস্তা পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়।
সরকার পতনের পর সাবেক মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ ও আবুল খায়ের আবদুল্লাহ বরিশাল থেকে নিরাপদ প্রস্থানে সক্ষম হন। পরবর্তিতে বিভাগীয় কমিশনারকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রশাসকের দায়িত্ব দেয়া সড়ক অধিদপ্তর থেকে পার্কটি অপসারণের জন্য নগরভবনকে চিঠি দেয়া হলেও কোন জবাব নগর প্রশাসনের কাছে নেই। তবে মৌখিকভাবে নগর প্রশাসন থেকে বরিশাল সড়ক বিভাগকেই পার্কটি অপসারণ করতে বলা হয়েছে।
কিন্তু সড়ক অধিদপ্তরের কাছে এজন্য কোন তহবিল নেই। ফলে সড়ক অধিদপ্তরের পক্ষে তা সম্ভব হচ্ছে না। অথচ পার্কটির কারণেই খোদ মহানগরীর অভ্যন্তরে দেশের ৮নম্বর জাতীয় মহাড়কটি অনেকটাই মরনফাঁদে পরিনত হয়েছে।
অপরদিকে সড়ক অধিদপ্তর থেকে নগর প্রশাসনকে পার্কটি অপসারণে চিঠি দেয়ার পরে নগরভবনের ইজরাদার পার্কটির দক্ষিণপ্রান্তে সড়ক অধিধপ্তরের জমির ওপরই নির্মিত একটি দ্বিতল ভবনের অবকাঠামোর উপরীকাঠামোর কাজ শুরু করে। অতিসম্প্রতি ছাত্র-জনতা অবৈধ ওই ভবনটির অবকাঠামোর অনেকটাই ভেঙে দিয়ে ক্ষোভের বহি:প্রকাশ ঘটিয়েছে। সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারী বলেন, নগরভবন এখনো কোন সিদ্ধান্ত গ্রহন করেনি। মৌখিকভাবে বরিশাল সড়ক বিভাগকেই পার্কটি অপসারণ করতে বলা হয়েছে।
সিটি করপোরেশনের প্রশাসক রায়হান কাওসার বলেন, সরকারের অপর একটি প্রতিষ্ঠানের জমিতে বিনা অনুমতিতে সিটি করপোরেশনের পার্ক ও ভবন নির্মানের বৈধতা ছিলনা। এখানে বিপুল সরকারী অর্থ ব্যয় করা ঠিক হয়নি। সড়ক অধিদপ্তর থেকে পার্কটি অপসারণে যে তাগিদ দেয়া হয়েছে, তা সঠিক হলেও এজন্য কোন তহবিল নগরভবনের নেই। পাশাপাশি এ ধরনের অবৈধ অবকাঠামো অপসারণে সরকারী অর্থ ব্যয়ের বিষয়টিও প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। তারপরেও বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ের সাথে আলাপ করে একটি সমাধানসূত্র বের করার চেষ্টা চলছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, একটি জাতীয় মহাসড়কের ওপর এ ধরনের স্থাপনা নির্মান কোনভাবেই সঠিক সিদ্ধান্ত ছিলো না। আমরা মহাসড়কের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। সিটি করপোরেশন যতদ্রুত মহাড়কের ওপর থেকে অবৈধ অবকাঠামো অপসারণ করবে ততই মঙ্গল।