ডায়রিয়া বিস্তারের মধ্যেই হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু ও ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে  ডায়রিয়া বিস্তারের মধ্যেই হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু ও ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে  - ajkerparibartan.com
ডায়রিয়া বিস্তারের মধ্যেই হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু ও ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে 

3:58 pm , March 1, 2025

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ তাপমাত্রার পারদ স্বাভাবিকের ওপরে থাকলেও এখনো বরিশালের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ঠান্ডাজনিত রোগীর আগমন বন্ধ হয়নি। আর বছরের প্রথম দুমাসে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার নারী-পুরুষ ও শিশু হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন। এমনকি স্বাভাবিকের বেশী তাপমাত্রায়ও ডেঙ্গু নির্মূল হয়নি। প্রায় ৯ হাজার নারী-পুরষ ও শিশু ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি সহ ৬৪ জনের মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে ২০২৪ সাল বিদায়ের পর গত দুমাসে বরিশালের সরকারি হাসপাতালগুলোতে আরো প্রায় ৩শ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এখনো গড়ে প্রতিদিন অন্তত ১০জন ডেঙ্গু রোগী সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাধীন থাকছেন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, মানুষ শরীরের অত্যন্ত নাজুক সময় ছাড়া সরকারি হাসপাতালের স্মরণাপন্ন হয়না। ডেঙ্গু, ডায়রিয়া ও ঠান্ডাজনিত যে সংখ্যক রোগী সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন, তার অন্তত তিনগুন বাইরে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলেও দাবী এসব চিকিৎসকদের। ফলে প্রকৃতপক্ষে  কত মানুষ এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন, তার সঠিক পরিসংখ্যান বের করা কষ্টসাধ্য। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, এসব রোগের বিস্তার উদ্বেগজনক। আর এসব রোগ থেকে উত্তরণের কোন কর্ম পরিকল্পনা সরকারি- বেসরকারী পর্যায়ে অনুপস্থিত।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্যমতে, গত নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে নিউমোনিয়া সহ ঠান্ডাজনিত নানা রোগ নিয়ে প্রায় আড়াই হাজার নারী-পুরুষ ও শিশু সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়। এরমধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫ জনের মৃতুর পরে চলতি বছরের প্রথম দুমাসে আরো প্রায় সাড়ে ৩ হাজার ভর্তি হয়েছেন। এসময়ে মৃত্যু হয়েছে আরো ৩জনের। ফেব্রুয়ারীর শেষ দিনে নিউমোনিয়া নিয়ে ২১দিন বয়সী শাহিনুর বেগমের মৃত্যু হয়েছে ভোলার লালমোহন হাসপাতালে।
গত নভেম্বর ও ডিসেম্বরে সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হওয়ার পরে গত দুমাসে আরো সাড়ে ১০ হাজার যোগ হয়েছে। ফলে গত নভেম্বরে যে ডায়রিয়ার সূচনা হয়েছিল গত ৪ মাসে সরকারি হাসপাতালেই এর ভর্তির সংখ্যা ২১ হাজার ছাড়িয়েছে। তবে গত বছরের মত চলতি বছরের প্রথম দুমাসে ডায়রিয়া আক্রান্ত কোন রোগীর মৃত্যু হয়নি বলে দাবী বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের।
বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার অনেক উন্নতির পরেও ডায়রিয়া প্রবন বরিশাল অঞ্চলে এ রোগ প্রতিরোধ সম্ভব না হওয়ার পেছনে এখন পথ খাবারের দোকানের নি¤œমানের মুখরোচক খাবারকে দায়ী করছেন চিকিৎসকরা। খোদ বরিশাল মহানগরীতে সিটি করপোরেশনের অনুমোদিত ও অননুমোদিত পথ খাবারের দোকানের সংখ্যাই কয়েক হাজার। এসব দোকানের নি¤œমানের এবং বাঁসি ও মুখরোচক খাবার নগরবাসীর পেটের পীড়াকে ক্রমাগত বৃদ্ধি করছে।  এ নিয়ে জনসচেতনতার অভাবের সাথে এসব খাবার বিক্রী বন্ধে নগর প্রশাসন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নেই।
এ ব্যাপারে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা: শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, ডায়রিয়া প্রতিরোধে জনসচেতনতা ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নিবিড় কার্যক্রমের কোন বিকল্প নেই। পাশাপাশি ডেঙ্গুর একমাত্র বাহন এডিস মশা নিধনেও তিনি সবগুলো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে মাঠ পর্যায়ে নিবিড় কার্যক্রম পরিচালনার তাগিদ দেন।  পাশাপাশি ডায়রিয়া ও ডেঙ্গু সহ যেকোন অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে সরকারি হাসপাতাল সহ চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
ডায়রিয়া চিকিৎসায় বরিশালে পর্যাপ্ত আইভি স্যালাইন ছাড়াও বিপুল সংখ্যক এ্যান্টিবায়োটিক ক্যাপসুল ও মেট্রোনিডাজল টেবলেট সহ সব ধরনের চিকিৎসা সামগ্রীর মজুতের কথা জানান বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT