4:09 pm , February 22, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে পরিচিত বরিশাল-৪ আসনের (মেহেন্দিগঞ্জ- হিজলা) সাবেক সাংসদ পঙ্কজ নাথ এর ঘনিষ্ঠ সহচর ‘আলিমাবাদ পাতাবুনিয়া ফাজিল মাদ্রাসা’ অধ্যক্ষ মো. জামাল উদ্দিন মাছ লুটের পর ফের হত্যা চেষ্টা ও বিস্ফোরক আইনে মামলার আসামি হয়েছেন। চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় সাবেক সাংসদ পঙ্কজ নাথ সহ নামধারী ১৫১ জন এবং অজ্ঞাতনামা ১০০/১৫০ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের হয়। ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই নগরীর নথুল্লাবাদ বাসটার্মিনাল এলাকায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র ভূমিকায় অংশ নেয় হামলাকারীরা। এ হামলার আহত হয় দায়েরকৃত মামলার বাদীর খালাতো ভাই ও মামলার ১নং সাক্ষী রাকিবুল্লাহ আহসান। ফ্যাসিবাদের দোসর জামাল উদ্দিনের ছেলে মো. সানজিনের বিরুদ্ধে বাদীকে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। বাদী মো. সুলতান খান বলেন, চলতি মাসের ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় তার বাসায় আসামি জামাল উদ্দিনের ছেলে সহ অজ্ঞাতনামা ১০/১৫ জনে ৩০০ টাকার সাদা স্ট্যাম্প দিয়ে এসেছে। তারা বাদীকে ওই স্ট্যাম্পে মাও. জামাল উদ্দিন নির্দোষ বলে লিখে দিতে চাপ প্রয়োগ করেন।
জামাল উদ্দিনের ছেলে সানজিন বলেন, ২০ তারিখ যাইনি। তার আগে গিয়েছিলাম। তিনি কোনো স্ট্যাম্প দেননি। শুধু বাদীকে বলেছেন- তার বাবা নির্দোষ এবং একজন মাওলানা মানুষ। এ সব ঘটনার সাথে তার বাবা জড়িত নয়।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, মেহেন্দিগঞ্জ-ভোলা জেলার সিমান্তবর্তী ১০ নং আলিমাবাদ ইউনিয়নের গাগুরিয়া গ্রামে ৫ একর জমিতে থাকা ‘মেসার্স খান বহুমুখী মৎস্য ও পশুপালন’ নামক ঘেরে ৫ বছর আগে মাছ চাষ করেছিলেন মৎস্যচাষি মোস্থফা কামাল খান (৪৬)। গত ৫ আগস্টের পর গাগুরিয়া গ্রামের মাও. জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে স্থানীয় মাসুদ শিকদার (৩৫), জুয়েল বেপারী (৫৫) ও সাব্বির হাওলাদার (২১) সহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে গভীর রাতে কয়েক দফায় প্রায় ২৫ লাখ টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যায়। মৎস্যচাষি মোস্তফা কামাল খানের ঘের ম্যানেজার আরিফ ফরাজীর কাছে প্রতিপক্ষ ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
এ ঘটনায় ‘মেসার্স খান বহুমুখী মৎস্য ও পশুপালন’ নামক প্রতিষ্ঠানের মালিক মোস্তফা কামাল খান বাদী হয়ে অভিযুক্ত ৪ জনকে আসামি করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। ২০২৪ সালের ১৯ নভেম্বর বরিশাল সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে এ মামলা দায়ের করা হয়। আদালতের বিচারক সারাহ ফারজানা হক মামলা আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বরিশাল ইউনিট কে তদন্ত করে ১৪/০২/ ২৫ইং তারিখে প্রতিবেদন প্রেরণের নির্দেশ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই বরিশাল ইউনিট এর এসআই মো. রবিউল ইসলাম বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। তদন্তের স্বার্থে এখন কিছু বলা যাবে না।
এদিকে, ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই নগরীর নথুল্লাবাদ জিয়া সড়ক ব্রিজ সংলগ্ন টিবিএস শো-রুমের সামনে মহা সড়কের উপর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে অংশ নেয় মেহেন্দিগঞ্জ গাগুরিয়া গ্রামের মৃত. আজিজ খানের ছেলে মাও. জামাল উদ্দিন ও একই গ্রামের মৃত. হাসেম মাঝির ছেলে আজিজুল হক মাঝি (৪৪)। এ হামলার ঘটনায় তারা দুইজন দায়েরকৃত মামলার ১৪৯ ও ১৫০ নং আসামি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতয়ালী মডেল থানার ইন্সপেক্টর মো. ইব্রাহীম খলিলের ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দিলেও রিসিভ করেননি।
মুঠোফোনে মাও. জামাল উদ্দিন বলেন, তাকে ষড়যন্ত্র মূলক মামলায় যুক্ত করা হয়েছে। তিনি নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন।