4:39 pm , February 19, 2025

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ ঐতিহ্যবাহী চরমোনাই দরবারের ৩ দিনব্যাপী ফাল্গুনের বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল শুরু হয়েছে বুধবার বাদ জোহর। চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মো: রেজাউল করিম উদ্বোধনী বয়ান পেশ করেন। তিনি বলেন, এ মাহফিল দুনিয়ার উদ্দেশ্যে নয় বরং পথভোলা মানুষকে আল্লাহর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্যই প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সুতরাং এখানে দুনিয়াবী কোনো উদ্দেশ্য সাধনের জন্য নয়, আল্লাহ ও রাসুলের মহব্বত দিলে পয়দা করার জন্যই আসবেন। যদি এমন কেউ অন্য কোন উদ্দেশ্যে এসে থাকেন তবে নিয়ত পরিবর্তন করে আত্মশুদ্ধির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন।
বুধবার বাদ জোহর চরমোনাই মাদরাসার মূল মাঠ সহ ৫টি মাঠ নিয়ে অনুষ্ঠিত চরমোনাইর বার্ষিক মাহফিলের উদ্বোধনী অধিবেশনে চরমোনাই পীর বলেন, যারা চরমোনাইতে নতুন এসেছেন, তারা দুনিয়ার ধ্যান-খেয়াল বিদায় করে দিয়ে আখেরাতের খেয়াল অন্তরে জায়গা দিন। দিল থেকে বড়ত্ব এবং আমিত্ব ভাব দূর করে আল্লাহর কুদরতি পায়ে নিজেকে সমর্পন করুন। সর্বদা আল্লাহর জিকিরের মাধ্যমে দিলকে তরতাজা রেখে আল্লাহর অলি হয়ে চরমোনাই থেকে বিদায় নেওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণের আহবান জানান চরমোনাই পীর রেজাউল করিম।
উদ্বোধনী বয়ান শেষে মাহফিলের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে বিশদ বর্ণনা করেন। বুধবার সকাল থেকে মাহফিলে আগত মুসল্লীদের কয়েক হাজার হালকায় বিভক্ত করে হাতে-কলমে সালাত ও ইসলামের বুনিয়াদি বিষয়ে বাস্তব প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
মাহফিলে আগত মুসল্লীদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ১০০ শয্যা বিশিষ্ট অস্থায়ী হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে। এতে ১৩ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অধীনে আরো ৪০ জন চিকিৎসকের সমন্বয়ে চিকিৎসা সেবা পরিচালিত হচ্ছে। ১০টি এ্যাম্বুলেন্স ও ২টি নৌ এ্যাম্বুলেন্স হাসপাতাল কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছে।
৫টি মাঠে মাহফিলের শৃঙ্খলা রক্ষায় নিযুক্ত করা হয়েছে বিশাল স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনীর স্পেশাল টিম। হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তি বা বস্তু খুঁজে পাওয়ার জন্য প্রত্যেক মাঠেই রয়েছে হারানো ক্যাম্প।
সারাদেশ থেকে আগত মুসল্লীদের জন্য সকল মাঠের চারিদিকে সুপেয় নিরাপদ পানির ব্যবস্থাসহ রয়েছে সহস্রাধিক মানসম্মত টয়লেট, ওজু এবং গোসলের ব্যবস্থা। তিন দিনব্যাপী এ মাহফিলের প্রথমদিনে বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের উদ্যোগে প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দ্বিতীয় দিন সারাদেশ থেকে আগত ওলামায়ে কেরামদের নিয়ে ওলামা সম্মেলন এবং শেষদিন সকালে সারাদেশ থেকে আগত ছাত্র-জনতাকে নিয়ে ছাত্র গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হবে।
শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় বিদায়ী বয়ানের পরে আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করবেন চরমোনাই পীর।