চৌমাথায় মহাসড়ক অবরোধ ব্যবসায়ীদের ॥ দুর্ভোগে সাধারন মানুষ চৌমাথায় মহাসড়ক অবরোধ ব্যবসায়ীদের ॥ দুর্ভোগে সাধারন মানুষ - ajkerparibartan.com
চৌমাথায় মহাসড়ক অবরোধ ব্যবসায়ীদের ॥ দুর্ভোগে সাধারন মানুষ

3:11 pm , February 4, 2025

স্টলের টেন্ডার বাতিলের দাবীতে

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ প্রকৃত ব্যবসায়ীদের দোকান বরাদ্দ দেওয়া, টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজি বন্ধের দাবীতে বরিশাল-ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কের নগরীর চৌমাথা এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। এতে করে মহাসড়কের দুই প্রান্তে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হলে ভোগান্তি পোহাতে হয় দূর-দূরান্তের যাত্রীদের। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় চৌমাথা বাজার ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ চলাকালে ব্যবসায়ীরা সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন। দাবী পূরণ না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষনা দেন তারা। বিক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা বলেন, বিগত সিটি করপোরেশনের একাধিক মেয়র তাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন চৌমাথা বাজারে নতুন মার্কেটে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। কিন্তু সিটি করপোরেশন এটি নিয়ে বাণিজ্য করছেন অভিযোগ তুলে খুদে ব্যবসায়ীদের নেতা আব্দুল জলিল, খান শহিদসহ ফল বিক্রেতারা বলেন, আমরা এখানে সড়কের পাশে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে আসছি। এখানে মার্কেট হবে এবং আমাদের স্থায়ী বসার ব্যবস্থা হবে বলায় আমরা জায়গা ছেড়ে দিয়ে সামনে এগিয়ে এসেছি। যাতে নির্মাণ কাজে কোনো সমস্যা না হয়। এই বাজার ১৯৮১ সালে মাত্র ৫ হাজার টাকায় ইজারা হতো, আমরা ১ টাকা খাজনা দিয়েছি। আজ সেখানে দোকান প্রতি ৩০০-৫০০ টাকা খাজনা নেওয়া হয়। সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ এখন এই মার্কেটের মোট ২৭টি দোকানের ৮টি দোকান সিটি কর্পোরেশন বরাদ্দ না দিয়ে বাকী ১৯টির জন্য দরপত্র আহ্বান করে। তারা আরো বলেন, ১০/১২ লাখ টাকায় দোকানের বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। আমরা গরীব বলেই আমাদের সাথে চরম অসৌজন্যমূলক আচরণ করছেন প্রশাসক। পরে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারী এর হস্তক্ষেপে এবং আজ বুধবার সকালে ব্যবসায়ীদের সাথে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের বৈঠকের আশ্বাসে সড়ক অবরোধ তুলে নেন ব্যবসায়ীরা। এই বৈঠকের পর আন্দোলন বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানান তারা। মহাসড়ক অবরোধ করে প্রায় ঘন্টাব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশে পুরো চৌমাথা এলাকা যানজটের নগরীতে পরিণত হয়। এ যানজট মহাসড়ক থেকে অভ্যন্তরীণ সড়কেও প্রভাব পড়ে। এতে করে নগরবাসীকে যাতায়াতে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। একাধিক নগরবাসী বলেন, স্টল বরাদ্দ নিয়ে বিসিসি টেন্ডার আহ্বান করেছে। সেখানে কোন সমস্যা হলে সিটি করপোরেশনের সামনে গিয়ে আন্দোলন করেন। তাতে কেউ বাধা দিচ্ছে না। তুচ্ছ সমস্যায় একটি জাতীয় মহাসড়ক আটকে এ ধরনের আন্দোলন সাধারণ মানুষের কাম্য নয়। এতে মানুষের মারাত্মক দুর্ভোগ বাড়ে। বিষয়টি সকলেরই মনে রাখা উচিত। আন্দোলন করার অধিকার সকলেরই রয়েছে। যে আন্দোলন মানুষের দুর্ভোগ বাড়ায় সেখান থেকে সকলকে সরে আসার আহ্বান জানান সাধারণ মানুষ। এ ব্যাপারে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রশাসক বিভাগীয় কমিশনার রায়হান কাওছার বলেন, পিছনে বসে পলাতক সরকারের লোকজন এদের উষ্কে দিচ্ছে তা পরিষ্কার বোঝা যায়। তানা হলে সিটি করপোরেশনের জায়গায় তারা এতোদিন বে-আইনিভাবে ব্যবসা করেছেন। আমরাতো তাদের বলিনি যে আপনারা দোকান পাবেন না। আমরা বলেছি ওপেন টেন্ডার হবে, সর্বোচ্চ দরদাতা বরাদ্দ পাবেন। এটি আমার ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। এখানে উম্মুক্ত টেন্ডারের মাধ্যমে জবাবদিহি নিশ্চিত করা হচ্ছে। যারা টাকা বেশি দেবে তারাই দোকান পাবে। দলমত নির্বিশেষে সবাই এই টেন্ডারে অংশ নিতে পারবেন। তবে বিষয়টিকে সহজ এবং সাদামাঠা বলতে নারাজ চৌমাথা বাজার এলাকার স্থায়ী বড় দোকানের ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান, আরিফ, শরীফ হোসেন বলেন, চৌমাথা বাজারের ইজারা দিনকে দিন বেড়েই চলছে। নগরবাসীর ভালো চাইলে ইজারার টেন্ডার কমাতে হবে। তারা আরো বলেন, ফল ব্যবসায়ীদের দাবীও যৌক্তিক নয়, তারা তাদের দাবী নিয়ে সিটি করপোরেশনে যাবেন, সড়ক অবরোধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করার মতো কিছুই ঘটেনি এখানে। সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ তাদের মার্কেট কাদের বরাদ্দ দেবেন, কীভাবে দেবেন সেটা তাদের ইচ্ছে। তবে টেন্ডারবাজি হোক এটাও কাম্য নয় বলে জানান ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা। প্রসঙ্গত খোকন সেরনিয়াবাত মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর এ মার্কেটের স্টল নির্মাণ শুরু করেন।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT