বাবার মুক্তির দাবীতে মেয়ের সংবাদ সম্মেলন বাবার মুক্তির দাবীতে মেয়ের সংবাদ সম্মেলন - ajkerparibartan.com
বাবার মুক্তির দাবীতে মেয়ের সংবাদ সম্মেলন

3:56 pm , January 27, 2025

পারিবারিক কলহ থেকে আন্দোলনে হামলার মামলায় আসামী

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পারিবারিক কলহের জের ধরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় আসামি করা এবং কোনো ধরণের তদন্ত কিংবা যাচাই-বাছাই না করেই সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে প্রেরণের অভিযোগ উঠেছে। আর এমন অভিযোগ এনে পিতা প্রবোধ হালদারের মুক্তির দাবি জানিয়ে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সোমবার  বেলা ১২টায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন একমাত্র সন্তান সুইটপি প্রিমা হালদার। যদিও মামলার বাদী বাচ্চু দূরানী তার মামলার এজাহারে সত্য ছাড়া কোনো মিথ্যে তথ্য নেই বলে দাবী করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে প্রিমা হালদার বলেন, আমার বাবা নগরের ২৪ নম্বর নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব রুপাতলী এলাকার বাসিন্দা। বাবা শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ার পর ২০১০ সাল থেকে কোন কাজ করেন না। আর মা পেশায় শিক্ষক। মায়ের বেতনের অর্থ দিয়েই চলে আমাদের সংসার।  বর্তমানে মা-বাবা দু’জনই শারীরিকভাবে অসুস্থ।  আর এরমধ্যেই পারিবারিক কলহের জের ধরে প্রতিবেশী বাচ্চু দূরানীর ষড়যন্ত্রে বাবা রয়েছেন জেলহাজতে। তিনি বলেন, ২০১৭ সাল থেকে আমার বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত। পর্যায়ক্রমে নিউরো মেডিসিন রোগে ও চোখে ছানি পড়লেও অর্থের অভাবে সময়মত সব চিকিৎসা সেবা প্রদান এবং ওষুধ ক্রয় করতে পারছি না। ২০২১ সালে আমার বাবা প্রতিবেশী বাচ্চু দূরানীর বিরুদ্ধে ‘টয়লেটে ময়লা দ্বারা আশেপাশের বসবাসকারী জনগণকে ক্ষতিগ্রস্ত এবং পরিবেশ দূষণ থেকে রক্ষা করার আবেদন’ জানিয়ে  বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেছিলেন। এরপর ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহের দিকে নানা বিষয় নিয়ে তর্ক-বির্তক হয়। আমাদের বসতঘরের সামনে সিঁড়ি নির্মাণের সময় আমার বাবাকে মারতে আসে প্রতিবেশী বাচ্চু দূরানী। তখন আমি ৯৯৯এ কল করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সেই থেকেই আমাদের পরিবারের সদস্যদের উপর ক্ষিপ্ত থাকে প্রতিবেশী বাচ্চু । যে কারণে আমার বাবার বিরুদ্ধে প্রতিবেশী বাচ্চু বাদী হয়ে গত বছরের ২৪ নভেম্বর পরিকল্পিতভাবে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় বাবাকে আসামি করে মামলা দায়ের করে। দায়েরকৃত এই মামলার ৯ নম্বর আসামি আমার বাবা।  দায়েরকৃত মামলায় বাচ্চু উল্লেখ করেন- ‘তার ছেলে সাব্বির দূরানী (২৫) বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিলে গত বছরের ৪ আগস্ট দুপুর পৌনে দুইটায় আসামীরা মারধর করে। অথচ আমার বাবা তখন বসতঘরে ছিলেন। তাছাড়া দায়েরকৃত মামলায় ঘটনাস্থলের কোন সাক্ষীও নেই। এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাবার অসুস্থতার তথ্য যাচাই-বাছাই না করে গত ২২ জানুয়ারি দিবাগত রাতে বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায় এবং আদালতে প্রেরণ করেন। বর্তমানে আমার অসুস্থ বাবা জেলহাজতে রয়েছেন। প্রিয়া হালদার বলেন, আমার মায়ের আয়ের অর্থ দিয়ে সংসারের খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হয়। ফলে যখন যে রোগের সমস্যা বেশি হয় তখন সেই রোগের ওষুধ ক্রয় করার চেষ্টা করি।  আর এখন মায়ের আয়ের অর্থ দিয়ে বাবার মামলার পেছনে অর্থ ব্যয় করবো নাকি সংসারের বাজার করবো নাকি মায়ের অসুস্থতার জন্য ওষুধ কিনবো এটাই প্রশ্ন আমার। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থী বরিশাল সিটি কলেজের জুবায়ের রহমান খান ও আবু তাওহিদ, বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস। তারা বলেন, দায়েরকৃত মামলার ঘটনাস্থলে ঘটনার দিন তারা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু সে সময় আসামি  প্রবোধ হালদার ঘটনাস্থলে ছিলেন না। অস্ত্র ছিল পুলিশ ও আ.লীগ নেতাকর্মীদের  কাছে। আর একজন অসুস্থ বয়ষ্ক রোগীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র পূর্বক মামলা হলেও  পুলিশ তা পর্যবেক্ষণ না করে কীভাবে বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। উল্লেখ্য জুলাই আন্দোলনের পর বরিশালে বেশ কিছু মামলা দায়ের হলেও সেখানে আসামীদের সম্পৃক্ত করা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যারা সম্পৃক্ত ছিলেন এমন অনেক আওয়ামী লীগ, যুবলীগ নেতা বাদ যায়। অথচ ঘটনাস্থলে না থেকেও অনেকে মামলার আসামী হয়েছেন। এমনকি বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি সায়েম হোসেন, বাবুগঞ্জের মাধবপাশা ইউনিয়ন তাঁতী দলের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি সোহেল সরদারসহ অনেক বিএনপি কর্মীও মামলার আসামী হয়েছেন।  বরিশালের কর্মস্থলে থেকে অনেকে আবার ঢাকার মামলায়ও আসামী হয়েছেন।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT