১০ মাস পর জানা গেল বাবার হত্যাকারী ছেলে ! ১০ মাস পর জানা গেল বাবার হত্যাকারী ছেলে ! - ajkerparibartan.com
১০ মাস পর জানা গেল বাবার হত্যাকারী ছেলে !

4:06 pm , January 24, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ জীবনসংগ্রামের এক অকুতোভয় সৈনিক বাবা। শত লাঞ্ছনা-বঞ্চনা কিংবা দুর্ব্যবহার জীবন-জীবিকা চক্করে ঘটে চলেছে হরহামেশাই, তবু সব ভুলে দিন শেষে মুচকি হেসে সন্তানদের বুকে জড়িয়ে ধরতে শুধু বাবারাই পারেন। আদর্শ আর শাসনের বুননে তৈরীকৃত যে চাদরে একজন বাবা তাঁর সন্তানকে জড়িয়ে রাখেন, তা একটি সন্তানের কাছে ক্ষণিকের ভালো না লাগার অনুভূতি হলেও জীবনের দীর্ঘ পথচলায় একসময় ঠিকই উপলব্ধি চলে আসে যে কতটুকু ভালোবাসার আবিরমিশ্রিত ছিল সেই অনুশাসন। অথচ সেই বাবাকেই যখন গলাটিপে দুনিয়া থেকে চিরতরের জন্য সরিয়ে দিতে পারে সন্তান তখন বোঝার বাকী থাকেনা কোন সমাজে আমরা বসবাস করছি। যেমনটা ঘটেছে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার দাওকাঠি গ্রামে।
ছেলেকে প্রতিষ্ঠিত করতে অনেক চেষ্টা করেছেন ৭৫ বছরের বৃদ্ধ রুস্তুম আলী হাওলাদার। কিন্তু কোনভাবে সফল না হওয়ায় মাঝেমধ্যে বকাবকি আল শাসন করতেন। আর এই শাসনই এক সময় কাল হয়ে দাঁড়ায় বৃদ্ধ বাবার সামনে। অনুশাসন থেকে রক্ষা ও স্বাধীন জীবন-যাপনের জন্য তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ৪৫ বছরের ছেলে বাদশা হাওলাদার। ২০২৪ সালের ১৭ এপ্রিল বাড়ীর পাশে কচুক্ষেতে কাজ করছিলেন রুস্তুম আলী। এক পর্যায় পেছন থেকে গলায় গামছা পেচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। এরপর পাতা দিয়ে তা ঢেকে রাখা হয়। কয়েকদিন পর অর্ধগলিত অবস্থায় বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রথমদিকে স্বাভাবিক মৃত্যু মনে হলেও সদ্য বিদায়ী বছরের ২৮ ডিসেম্বর ময়না তদন্তের রিপোর্ট এলে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে বৃদ্ধ রুস্তুম আলীকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার ১০ মাস পর চলতি বছরের ২১ জানুয়ারী মামলা করেন নিহতের ভাই আইউব আলী হাওলাদার। ২২ জানুয়ারী ছেলে বাদশা হাওলাদারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২৩ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার বাবাকে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে সে।
নিহত রুস্তুম আলী হাওলাদার দীর্ঘদিন বিদেশে শ্রমিকের কাজ করতেন। বৃদ্ধ বয়সে দেশে ফিরে গ্রামের বাড়ী দাওয়াকাঠীতে দোতলা ভবন তুলে বসবাস শুরু করেন। পরিবারের প্রধান হিসেবে অন্যান্য সদস্যদের নিয়মিত অনুশাসন করতেন তিনি। বিষয়টি তার ছেলে মেনে নিতে পারছিলেন না। এজন্য বাবাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে কয়েক দফায় পরিকল্পনা ও চেষ্টা চালান। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ১৭ এপ্রিল বেলা ১১টার সময় দেখতে পায়, তার বাবা বাড়ির পাশের কচুক্ষেতে কাজ করছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ছেলে কচুক্ষেতে গিয়ে পেছন থেকে একটি গামছা দিয়ে বাবার গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর মরদেহ কচুক্ষেতে রেখে পাতা দিয়ে ঢেকে দেয়। বাবাকে হত্যার পর স্বাভাবিক জীবনযাপন করছিল বাদশা। বাবার হত্যা ও পরিকল্পনাসহ সব বিষয়ে গোপন রাখতে নানা কৌশল অবলম্বন করলেও দিনে দিনে বাদশা হাওলাদারের অস্বাভাবিক আচরণ সবার সন্দেহ হয়। সেই সূত্র ধরে ২২ জানুয়ারি তাকে পুলিশ হেফাজতে নিলে হত্যার কথা স্বীকার করে বাদশা।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT