3:58 pm , January 24, 2025

জসিম জিয়া ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন ও তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুবার্ষিকী ছিলো শুক্রবার (২৪ জানুয়ারী)। শোকাবহ এ দিনটি যখন সারাদেশে পালন করছেন দলটির নেতাকর্মীরা ঠিক তখন বরিশালে লক্ষ্য করা গেছে ভিন্ন চিত্র। মৃত্যুবার্ষিকী পালন না করে আনন্দ ভ্রমণে গেছেন বিএনপিপন্থি ৫ শতাধিক আইনজীবী। জেলা আইনজীবী সমিতির ব্যানারে আয়োজিত বনভোজনের নেতৃত্বে ছিলেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি মহসিন মন্টু ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ। যেসব আইনজীবী এতে অংশ নিয়েছেন তাদের অনেকেই আবার জেলা ও মহানগর বিএনপির সাবেক এবং বর্তমান নেতা। শোকাবহ এমন দিনে এ ধরণের আয়োজনকে নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। তারা বলছেন এতদিন স্বৈরাচার সরকারের নির্যাতন, নিপিড়নের কারণে কোকোর মৃত্যুবার্ষিকীও ঠিকমত পালন করা যায়নি। দীর্ঘ বছর পর এবার যেখানে মুক্ত স্বাধীনভাবে দিনটি স্মরণ করবে সেখানে আনন্দ ভ্রমণে গিয়ে অদূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন বিএনপির আইনজীবীরা।
একাধিক আইনজীবী জানান, আনন্দ ভ্রমণের নির্ধারিত স্থান ছিলো বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া জমিদার বাড়ী। এজন্য এক লাখ ৪০ হাজার টাকায় ভাড়া করা হয় ঢাকা-বরিশাল রুটের বিলাসবহুল এ্যাডভেঞ্চার-৯ নামে একটি লঞ্চ। প্রত্যেক সদস্যের জন্য নির্ধারিত চাঁদার হার ছিলো এক হাজার টাকা। সকাল ৯টায় বরিশাল নৌ-বন্দর থেকে উলানিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চটি পিকনিক স্পটে পৌঁছায় দুপুর ১টার দিকে। সকালের নাস্তা হিসেবে ছিলো ডিম-খিচুরি এবং রং ও দুধ চা। মনের প্রশান্তি দূর করার জন্য ছিলো নাচ-গান আর হাউজি এর ব্যবস্থা। দুপুরের খাবার মেন্যুতে ছিলো পোলাউ-মুরগির রোস্ট, গরু ও খাসির মাংস। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের এ আয়োজনে ৪/৫ জন আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীও অংশ নেন বলে বিশ্বস্ত একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইনজীবী ফোরামের এক নেতা বলেন, আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারী বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন। এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেনা আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা। বিএনপি নিজেরাই নিজেদের প্রতিদ্বন্দ্বি। মূলত নির্বাচন উপলক্ষ্যেই পিকনিকের আয়োজন করেছিলেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রত্যাশীরা। গত বৃহস্পতিবার ২৩ জানুয়ারী সভাপতি পদে ৬ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ১১জন বিএনপিপন্থি আইনজীবী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। যারা মনোনয়নপত্র নিয়েছেন তাদের সবাই শরীক হয়েছিলেন এ আনন্দ যাত্রায়।
এ ব্যাপারে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ার বলেন, আমাদের কতগুলো দিবস আছে যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। যারা আজকের এই দিনে বনভোজন আয়োজন করেছেন তাদের মধ্যে আসলে এই অনুভূতি নাই যে আমাদের নেত্রী এতদিন জেলে ছিলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রত্যাবর্তন করতে পারছেন না। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের পর স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। তারপরেও খুশি হওয়ার কিছু নেই। সামনে আমাদের আরো এক ধাপ পাড়ি দিতে হবে। যারা আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুবার্ষিকীতে আনন্দ ভ্রমণে গেছেন তারা কঠিন কোন আন্দোলন সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়নি বিধায় তাদের সেই অনুভূতিটা নেই।