3:18 pm , January 17, 2025

গৌরনদী প্রতিবেদক ॥ ঢাকা থেকে দাদা বাড়ি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মধ্য হোসনাবাদ গ্রামে বেড়াতে এসে নিহত হন শিশু সাফওয়ান (৬)। এ ঘটনায় শুক্রবার নিহতের বাবা ইমরান সিকদার বাদি হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামাসহ ৯জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ এজাহারনামীয় চার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। এদিকে শুক্রবার বিকেলে নিহতের জানাজা শেষে বিক্ষুব্ধ জনতা দুই আসামির বাড়ি হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়।
গৌরনদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইউনুস মিয়া জানান, গৌরনদী উপজেলার মধ্য হোসনাবাদ গ্রামের বেড়াতে এসে নিহত হয় শিশু সাফওয়ান (৬) । নিহতের বাবা ইমরান সিকদার বাদি হয়ে লোকমান চৌধুরী, রোমান চৌধুরী ও মুজাম্মেল হক চৌধুরীসহ ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৯জনকে আসামি করে শুক্রবার একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ মামলার এজাহারনামীয় আসামি রোমান চৌধুরী, মুজাম্মেল হক চৌধুরী ও আমিনা বেগমসহ চার জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়েছে। এদিকে শুক্রবার বিকেলে নিহত শিশু সাফওয়ানের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে নিহতের স্বজন ও বিক্ষুব্ধ জনতা এজাহারনামীয় লোকমান হোসেন ও সরিকল ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মোজাম্মেল হোসেন চৌধুরীর বাড়িতে হামলা করে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে এক পর্যায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। স্থানীয়রা জানান, শিশু সাফওয়ান হত্যার পর আসামি রোমান চৌধুরী ও মোজাম্মেল হোসেনকে গ্রেপ্তার করলে পরিবারের সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। যে কারনে অগ্নিকান্ডে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। গৌরনদী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইনচার্জ বিপুল জানান, আগুন নেভানোর চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ জনতা বাধা দেন। পরবর্তিতে প্রশাসনের সহায়তায় দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়েছেন। নিহত শিশুর একাধিক স্বজন জানান, জমাজমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষ লোকমান চৌধুরী, রোমান চৌধুরী ও মুজাম্মেল হক চৌধুরী ও তাদের সমর্থকরা শিশুটিকে অপহরণ করে নির্মমভাবে হত্যা করে। নিহতের স্বজন ও স্থানীয় বিক্ষুব্ধরা লাশ উদ্ধারের পর দুপুরে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে লোকমান চৌধুরী ও রোমান চৌধুরীর বাড়িতে হামলা চালায়।
নিহত শিশু সাফওয়ান গৌরনদী উপজেলার মধ্য হোসনাবাদ গ্রামের ইমরান শিকদারের ছেলে। হত্যাকারীদের চিহিৃত করে গ্রেপ্তারের দাবিতে এলাকাবাসী বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে দুই আসামির বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে। এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুর ২ টার দিকে স্থানীয় শিশুদের সাথে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় শিশু সাফওয়ান। পরবর্তীতে অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে শিশুটির দাদা বারেক সিকদার বাদি হয়ে ওই দিনই গৌরনদী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজ শেষে স্থানীয় মুসল্লিরা মান্না বেপারীর বাড়ির পিছনে ডোবায় শিশু সাফওয়ানের লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়।