2:58 pm , January 16, 2025

চরফ্যাসন প্রতিবেদক ॥ ওমান প্রবাসী স্বামী বেল্লালকে ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যা করেছেন গৃহবধূ মেরিনা আক্তার মিতু। বুধবার বিকেলে চরফ্যাসনের শশীভূষণ থানার এওয়াজপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে বাবা কামাল আখনের বাড়িতে আত্মহত্যার এই ঘটনা ঘটে। শশীভূষণ থানা পুলিশ গতকাল বৃহস্পতিবার লাশ উদ্ধার করে ভোলা মর্গে পাঠিয়েছে। শশীভূষণ থানার উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ রাজিব জানান, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
মিতুর মামী মুনিরা বেগম জানান, মাত্র ৯ মাস আগে এওয়াজপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের কামাল আখনের মেয়ে মেরিনা মিতুর সাথে রসুলপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের বাবুল বেপারীর ছেলে বেল্লাল হোসেনের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাসের মধ্যেই স্বামী বেল্লাল হোসেন ওমান প্রবাসী হন। স্বামী প্রবাসে যাওয়ার পর থেকেই শাশুড়ি-ননদের পাতানো ফাঁদে জড়িয়ে পড়েন মিতু। ওই ফাঁস থেকে মুক্তি পেতে বেছে নেন আত্মহত্যার পথ।
মিতুর মা রহিমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, শাশুড়ি কহিনুর বেগম এবং কলেজছাত্রী ননদ লাকি বেগমের শারীরিক-মানসিক নির্যাতনে মিতু বিপর্যস্ত ছিলো। স্বামীর পরিবার প্রতিনিয়ত মিতুকে বলতেন ‘কালো মেয়ে’ বিয়ে করিয়ে তারা ঠকেছেন। এমন ‘কালো মেয়ে’ বউ করে নিলেও নগদ টাকা,ফর্নিচারসহ প্রাপ্য উপহার সামগ্রী তারা পাননি। রীতিমত উপহাসের পাত্রীতে পরিনত হন মিতু। এর জের ধরে বুধবার বিকেলে স্বামী বেল্লালকে ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যা করে সে। মারা যাওয়ার আগে সে ডায়েরিতে লিখে গেছেন ‘এই মৃত্যুর জন্য শ্বশুর বাড়ির লোকজন দায়ী। শ্বশুর-শাশুড়ি এবং স্বামীর অত্যাচারে আমি জীবন দিতে বাধ্য হলাম’।
নিহত মিতুর মা রহিমা বেগম আরো জানান, মিতু শ্বশুর বাড়িতে ছিলো। মঙ্গলবার বাবার বাড়ি ফিরে আসেন। শ্বশুর বাড়ি থেকে ফিরে আসার সময় শ্বশুর-শাশুড়ি মিতুর গহনা,ব্যবহৃত ফোন এবং দামী পোষাকগুলো রেখে দেয়। পাশাপাশি ১০দিন আগে মিতুর বাবার বাড়ি থেকে বেয়াই বাড়ি ( মিতুর শ্বশুর বাড়ি) পাঠানো পিঠাগুলো মিতুর সাথে ফেরৎ পাঠানো হয়। শ্বশুর-শাশুড়ির দাবীকরা ২ লাখ টাকা এবং ফার্নিচার না দেয়ায় মিতুর ব্যবহৃত সবকিছু তারা রেখে দিয়েছে।
শশীভূষণ থানার অফিসার ইনচার্জ তারিক হাসান রাসেল বলেন, লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।