দুইযুগ ধরে নানা জটিলটায় ভুগছে বিএড ও বিপিএড কলেজ দুইযুগ ধরে নানা জটিলটায় ভুগছে বিএড ও বিপিএড কলেজ - ajkerparibartan.com
দুইযুগ ধরে নানা জটিলটায় ভুগছে বিএড ও বিপিএড কলেজ

3:13 pm , January 11, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ প্রতিষ্ঠার পর থেকে দুই যুগের বেশি সময় নানা জটিলতা নিয়ে চলছে বরিশালের বিএড ও বিপিএড কলেজ। কলেজের সার্বিক নিয়ন্ত্রন নিয়ে দালাদলি এবং আর্থিক সহ নানা অনিয়ম দুর্নীতির কারণে প্রতিষ্ঠানটির অবস্থা নাজুক হয়ে পড়ছে। দীর্ঘ এই সময়ে একাধিকবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি দুর্নীতির প্রমান পেলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে টিকে থাকা খন্ডকালীন শিক্ষক মো. ফয়জুল হক মিলন শুরু থেকে এসব কর্মকান্ডের হোতা বলে জানিয়েছেন কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ও শিক্ষক এ্যাড. আব্দুল খালেক মনা। তবে সবকিছু মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র দাবী করে পাল্টা অভিযোগ করেছেন ফয়জুল হক মিলন।
জানা গেছে, ১৯৯৮ সালের ২০ মে নগরীর টিটিসি এলাকার রওনক ম্যানশনের একটি কক্ষে কার্যক্রম শুরু করে বরিশাল কলেজ অব এডুকেশন (বিএড) ও কলেজ অব ফিজিক্যাল এডুকেশন (বিপিএড)। ওই সময় কলেজের সভাপতি ছিলেন প্রয়াত শিক্ষাবিদ প্রফেসর মো. হানিফ এবং সাধারন সম্পাদক ছিলেন অধ্যক্ষ গৌড়াঙ্গ চন্দ্র কুন্ডু। কমিটির সদস্য ও হিসাবরক্ষকের দায়িত্ব পালন করতেন এ্যাড. আব্দুল খালেক মনা। এরপর ২০০০-২০০১ শিক্ষাবর্ষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্তি লাভ করে কলেজ দুটি। প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করে কলেজ রোড মল্লিক প্লাজায়। ২০০১ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক নগরীর উত্তর আমানতগঞ্জ এলাকায় কলেজ ক্যাম্পাস দুটি স্থানান্তর হয়। এরপর থেকে শুরু হয় নানা বিষয়ে আন্ত:দ্বন্দ্ব ও বিভক্তি। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কলেজের নিয়ন্ত্রন নিতে তৈরি হয় একাধিক পক্ষ।
কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ও শিক্ষক এ্যাড. আব্দুল খালেক মনা অভিযোগ করে বলেন, কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি প্রফেসর মো. হানিফ তাকে কলেজের হিসাবরক্ষকের দায়িত্ব দেন ১৯৯৮ সালে। পরর্তীতে আমি কলেজের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হই। সে সময়ে খন্ডকালীন শিক্ষক ছিলেন ফয়জুল হক মিলন। বিএনপি তথা চারদলীয় জোট সরকারের আমলে মিলন প্রভাব খাটিয়ে নানা দুর্নীতি শুরু করে। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ের সকলকে সরিয়ে নিজস্ব একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে ২০০১ সালে নিয়ন্ত্রনে নেয় কলেজটি। এরপর থেকে নানা অভিযোগ প্রমানিত হয় তার বিরুদ্ধে। খন্ডকালীন শিক্ষক থেকে ২০০১ সালের ৩০ জুন তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এর পরেও তিনি যে সময় যে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় এসেছে তাদের সাথে আঁতাত করে নিজের নিয়ন্ত্রনে রেখেছেন কলেজ দুটি। বর্তমানে ব্যাপ্টিস্ট মিশন বালক বিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষক হলেও নিজেকে বিপিএড কলেজের ভারপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ কখনও আবার অধ্যক্ষ হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন। কলেজের বিষয় বিশেষজ্ঞ একেএম শহীদুল ইসলাম মিলন ও আসমা আক্তার নাহিদকে নিয়ে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমান বিপিএড কলেজের অধ্যক্ষ কাজী মোক্তার হোসেনের স্বাক্ষর জাল করে কলেজের অর্থ আত্মসাৎ ও স্থাবর সম্পত্তি দখলের চেষ্টার অভিযোগও রয়েছে মিলনের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর, বিভাগীয় কমিশনার সহ বিভিন্ন পর্যায়ে একাধিক অভিযোগ দেয়া হয়েছে ইতিপূর্বে। তবে কোন লাভ হয়নি। দুটি অভিযোগ এনে ২০২৪ সালে একটি মামলা হলেও কোন সুফল মেলেনি বলে জানান কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য আব্দুল খালেক। সবশেষ গত ১০ জানুয়ারী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তদন্তে আসে একটি টিম। যারা অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে।
তবে সব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন ফয়জুল হক মিলন। পাল্টা অভিযোগ এনে তিনি বলেন, আব্দুল খালেক মনা এখানকার শিক্ষক না। তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের মদদপুষ্ট হয়ে বিগত দিনেও বিপিএড কলেজের নিয়ন্ত্রন নেয়ার চেষ্টা করেছেন। মূলত মনা প্রফেসর হানিফ স্যারের কর্মচারি ছিলেন। সেই থেকে কলেজের সাথে সম্পৃক্ত। আব্দুল খালেক মনাকে নানা অভিযোগে ২০০১ সালে কলেজের সকল দায়িত্ব থেকে সরানো হয়। নিজেকে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পরিচয় দেয়ার বিষয়ে মিলন বলেন, কখনোই তিনি এমনটি বলেননি। আমি বিপিএড কলেজের একজন খন্ডকালীন শিক্ষক। আমার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা।
এ ব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য বিএড কলেজের অধ্যক্ষ লতিফুন্নেছার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।
বিপিএড কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ কাজী মো. মোক্তার হোসেনকে ফোন করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT