শিক্ষকদের চাপ দিয়ে স্বাক্ষর আদায়ের চেষ্টা আটককৃত চারজনকে থানায় সোপর্দ শিক্ষকদের চাপ দিয়ে স্বাক্ষর আদায়ের চেষ্টা আটককৃত চারজনকে থানায় সোপর্দ - ajkerparibartan.com
শিক্ষকদের চাপ দিয়ে স্বাক্ষর আদায়ের চেষ্টা আটককৃত চারজনকে থানায় সোপর্দ

4:11 pm , January 9, 2025

শের ই বাংলা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দীর্ঘদিন ধরে বরিশাল নগরীর বিএম কলেজ রোড এলাকার অবস্থিত শের ই বাংলা বালিকা মাধ্যমিক  বিদ্যালয়ে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে রেখেছে বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ। এরই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ গত বুধবার সরকারি বিএম কলেজের ২৫ থেকে ৩০ শিক্ষার্থী প্রধান শিক্ষককে পুনর্বহাল এবং কমিটি গঠনে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষকদের উপর সন্ত্রাসী কায়দায় সাদা কাগজে স্বাক্ষর আদায়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করে। বিষয়টি সেনাবাহিনীকে অবহিত করা হলে তারা ঘটনাস্থলে যাওয়ার সাথে সাথে তারা পালিয়ে যায়। এরমধ্য থেকে চারজনকে আটক করে কোতোয়ালী মডেল থানায় সোপর্দ করে সেনাবাহিনী। জানা গেছে, সাবেক প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদকে ৭০ লাখ টাকা এবং ৯টি ল্যাপটপ আত্মসাৎ ও শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়। ল্যাপটপ আত্মসাতের ঘটনায় মামলা চলমান রয়েছে। এ বছর মার্চ মাসে তিনি পেনশনে যাবেন। ৫ আগস্টের পর মহানগর বিএনপির এক নেতার সাথে তার কয়েক লাখ টাকায় চুক্তি হয় পুনর্বহালের। সেই চুক্তি মোতাবেক শিক্ষবোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত তার চাকরি পুনর্বহালের জোর লবিং করেন। চেয়ারম্যানও তাকে স্কুলে না গিয়ে বাসায় থাকার পরামর্শ দেন। কিন্তু হারুন অর রশিদ বন্ধ থাকাবস্থায় তালা ভেঙ্গে স্কুলে প্রবেশ করেন। পরবর্তীতে স্কুল খুললে আবারো সেখানে গিয়ে ঘোলাটে পরিবেশ সৃষ্টি করেন। এ কারনে শিক্ষার্থীরা তাকে কোনভাবেই ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেয়নি। তারা আন্দোলন গড়ে তোলে। শিক্ষবোর্ড চেয়ারম্যানের নিকটও আবেদন জানানো হয়। এরপর শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান বরখাস্তের স্থগিতাদেশ তুলে নিলে তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। স্কুলে প্রবেশ করতে মরিয়া হারুন অর রশিদ আবারো সেই বিএনপি নেতার দ্বারস্থ হন। তার নির্দেশে গত বুধবার সকালে বিএম কলেজের শিক্ষার্থী নামধারী ৩০ জনের একটি গ্রুপ শের ই বাংলা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় প্রবেশ করে। এরপর সেখানকার ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক থেকে শুরু করে সকল শিক্ষকদের উপর চাপ প্রয়োগ করে বরখাস্তকৃত প্রধানশিক্ষককে পুনর্বহাল এবং তাদের পছন্দমত লোকদের নিয়ে কমিটি গঠনের জন্য। তারা সাদা কাগজে সকল শিক্ষকদের চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। তাদের কথা না শোনায় তারা শিক্ষকদের সাথে খারাপ ব্যবহার শুরু করে। এভাবে দীর্ঘক্ষন চলার পর শিক্ষার্থীরা বিষয়টি সেনাবাহিনীকে অবহিত করে। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে আসলে ওই সকল নামধারী শিক্ষার্থীরা স্কুল থেকে পালিয়ে যায়। সেনাবাহিনী সেখান থেকে চারজনকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বুধবার রাতে সেনাবাহিনী ওই চারজনকে কোতোয়ালী মডেল থানায় সোপর্দ করে। ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক আশরাফুন্নেছাসহ একাধিক সহকারি শিক্ষক অভিযোগ করেন, মঙ্গলবারও একই কায়দায় ওই সকল শিক্ষার্থীরা স্কুলে প্রবেশ করে। এ সময় তারা শিক্ষকদের হাতে থাকা মোবাইল পর্যন্ত কেড়ে নেয়। তাদের কোন কথাই বলতে দিচ্ছিল না। তাদের নির্দেশ কাগজে স্বাক্ষর করতে হবে। তাদের কারণে অনেক শিক্ষক ভয়ে ছুটিতে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে করে স্কুলের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে স্কুলে কোন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করতে এলে তাদেরকে খবর দেয়ার জন্য। এ ব্যাপারে কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, বুধবার রাতে চারজনকে সেনাবাহিনী থানায় সোপর্দ করে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT