দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠে আমন ধান কাটার ধুম দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠে আমন ধান কাটার ধুম - ajkerparibartan.com
দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠে আমন ধান কাটার ধুম

3:57 pm , January 4, 2025

 

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ দক্ষিণাঞ্চলের মাঠে মাঠে এখন আমন ধান কাটার ধুম চলছে। দিগন্ত বিস্তৃত মাঠে মাঠে সোনালী পাকা আমন ধান কৃষকের চোখ জুড়াচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৭০ ভাগ আমন কর্তণ সম্পন্নের কথা জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। প্রকৃতিক নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে কৃষি যোদ্ধারা কঠোর পরিশ্রম করে আমনের আবাদ লক্ষ্য অর্জন করে ভাল ফলনের দ্বার প্রান্তে।
সদ্য সমাপ্ত খরিপ-২ মৌসুমে বরিশাল কৃষি অঞ্চলে প্রায় ৮ লাখ ৮০ হাজার হেক্টরে আবাদের মাধ্যমে প্রায় ২৪ লাখ টন আমন চাল উৎপাদনের লক্ষ্য অর্জনে আশাবাদী মাঠ পর্যায়ের কৃষিবীদরা।
বিগত খরিপ-১ মৌসুমে বরিশাল কৃষি অঞ্চলে মূলত বৈরী আবহাওয়াই আউশের পরে আমনের আবাদকে অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছিল। সদ্যসমাপ্ত খরিফ-১ মৌসুমে আউশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৫০ ভাগও অর্জিত হয়নি। সাথে মৌসুমের শেষভাগে ঘূর্ণিঝড় রিমাল এ ভর করে প্রবল বর্ষণে উঠতি আউশের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় এ অর্থকরী ফসলের উৎপাদনে প্রায় ১ লাখ টন ঘাটতি দেখা দেয়।
আবহাওয়া বিভাগের মতে, গত বছরের শুরু থেকে লাগাতর অনাবৃষ্টির পরে ঘূর্ণিঝড় রিমাল’এ ভর করে বরিশালে স্বাভাবিকের প্রায় ৫০ ভাগ বেশী বৃষ্টি হলেও জুন ও জুলাই মাসে ব্যাপক ঘাটতি লক্ষ্য করা গেছে। অপরদিকে ভাদ্রের পূর্ণিমায় ভর করে লাগাতার প্রবল বর্ষণে আগষ্ট মাসে বৃষ্টিúাতের পরিমান ছিল স্বাভাবিকে ৬২% বেশী। সেপ্টেম্বরেও আবহাওয়া বিভাগ থেকে ২৮৫ থেকে সাড়ে ৩শ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয়া হয়। তবে বরিশালে স্বাভাবিকের প্রায় ৫৩% বেশী বৃষ্টি হয়েছে বলে আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছিল। এমনকি অক্টোবরে ১৭০-২০০ মিলি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয়া হলেও মাসের প্রথম ৩ দিনেই ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
অপরদিকে বরিশাল অঞ্চলে হাইব্রীড সহ উচ্চ ফলনশীল-উফশী জাতের আমনের আবাদ কাঙ্খিত সম্প্রসারণ ঘটেনি। সদ্য সমাপ্ত খরিপ-২ মৌসুমেও বরিশাল অঞ্চলে প্রায় ৮ লাখ ৮৩ হাজার হেক্টরে আমন অবাদ লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে হাইব্রীড’এর লক্ষ্য ছিল মাত্র ২২ হাজার হেক্টরের মত। যার ফলন লক্ষ্য নির্ধারন করা হয়েছিল হেক্টর প্রতি ৩.৬৮ থেকে ৩.৮৮ টন চাল। অপরদিকে এ অঞ্চলে স্থানীয় সনাতন জাতের আমনের আবাদ হচ্ছে প্রায় পৌনে ৩ লাখ হেক্টরে । যার গড় ফলন হেক্টর প্রতি মাত্র ১.৭৭ টন চাল। তবে গত দুই দশকে ‘উফশী জাতের  বেশ কিছু ধানের আবাদ পর্যায়ক্রমে বাড়ছে। বিদায়ী খরিপ-২ মৌসুমেও বরিশাল  অঞ্চলে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ হেক্টরে উফশী জাতের আমন আবাদ করেছিলেন কৃষকরা। অরো অন্তত ৫০ভাগ জমিতে উফশী জাতের আমন আবাদ সম্ভব হলে উদ্বৃত্তের পরিমান প্রায় ৫ লাখ টন বৃদ্ধি করা সম্ভব বলে মাঠ পর্যায়ের কৃষিবীদরা জানিয়েছেন। ১৪ লাখ টন খাদ্য উদ্বৃত্ত বরিশাল অঞ্চলের কৃষকরা এখনো ঘূর্ণিঝড় ‘হেরিকেন’, ‘সিডর’, ‘মহাসেন, ‘আইলা’, ‘ইয়াশ’, ‘অশণি’, ‘সিত্রাং’ ও ‘রিমাল’এর মত ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে লড়াই করেই আউশ, অমন ও বোরা সহ সব ফসলের আবাদ ও উৎপাদন করছেন। কৃষিবীদদের মতে, বরিশাল অঞ্চলে এখনো প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল-আমনের আবাদ ও উৎপাদন পুরোটাই প্রকৃতি নির্ভর। সদ্য সমাপ্ত  খরিপ-২ মৌসুমে দেশে ৫৭ লাখ ১৮ হাজার ৩শ হেক্টরে পৌনে ২ কোটি টনেরও বেশী আমন চাল পাবার লক্ষ্য স্থির করে কৃষি মন্ত্রণালয়।  যার প্রায় ৮৫ ভাগ কর্তণ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। গত বছর দেশে আমনের উৎপাদন ছিল প্রায় ১ কোটি ৭৩ লাখ টন।ডিএই’র মতে, বরিশাল অঞ্চলে ৮ লাখ ৮২ হাজার ৩১০ হেক্টরে আবাদের লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে  ২৩ লাখ ৮০ হাজার ৫৫৮ টন চাল।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT