5:02 pm , December 30, 2024
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ বই এসেছে বরিশালে তবে তা পর্যাপ্ত নয়। প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু বই স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠানোর কথা জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগের উপপরিচালক। বই এলেও উৎসব হবেনা বলে জানানো হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
গতকাল সোমবার বরিশালের জিলা স্কুল, উদয়ন স্কুল, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ বেশকিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বইভর্তি ট্রাক প্রবেশ করতে দেখা গেছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক নিলুফার ইয়াসমিন বলেন, প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু বই এসেছে। ১ জানুয়ারি বই অবশ্যই দেওয়া হবে তবে উৎসব হবেনা।
প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবই প্রয়োজন প্রায় ৪০ কোটি ১৬ লাখ। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) পর্যন্ত সরকার ছাপাতে পেরেছে মাত্র ৬ কোটির কিছু বেশি বই। ফলে বছরের শুরুতে সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছানো সম্ভব হবে না।
পাঠ্যবই ছাপার কাজ শেষ না হওয়ায় ১ জানুয়ারি কোন কোন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বই পাবে, আর কোন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বই পাবে না তা নিয়ে উৎকণ্ঠায় শিক্ষক-অভিভাবকরা।
এনসিটিবি সূত্র জানায়, প্রাথমিকের প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির ৭০ লটের বই ছাপা শেষ। সেগুলো উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তবে পুনঃটেন্ডার হওয়ায় বাকি ২৭ লটের বই এখনও ছাপা শেষ হয়নি। এ তিন শ্রেণির বাকি বইগুলো ছাপা শেষ করে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দিতে জানুয়ারি মাসের পুরো সময় লেগে যেতে পারে।
প্রাথমিকের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির অল্প কিছু বই ছাপা হয়েছে। বেশিরভাগ বই ছাপার কাজ এখনো শুরু হয়নি। সেক্ষেত্রে এ দুটি শ্রেণির খুব অল্পসংখ্যক শিক্ষার্থী দুটি করে নতুন বই হাতে পেতে পারে। বাকি শিক্ষার্থীদের জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সব বই পৌঁছাতে এনসিটিবির পুরো জানুয়ারি মাস লেগে যেতে পারে।
মাধ্যমিকে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির দেড় কোটির কিছু বেশি বই ছাপা হয়েছে, যারমধ্যে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে প্রায় এক কোটি বই ছাপানো হয়েছে। সাধারণ প্রেস মালিকদের ছাপাখানায়ও ষষ্ঠ-সপ্তমের কিছু বই ছাপার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
সব মিলিয়ে ষষ্ঠ-সপ্তমের দুটি থেকে তিনটি করে বই কিছু উপজেলার স্কুলে যেতে পারে। দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা দুই থেকে তিনটি করে বই পেতে পারে।
তবে অষ্টম ও নবম শ্রেণির অধিকাংশ শিক্ষার্থী বছরের শুরুতে কোনো বই নাও পেতে পারে। বই হাতে পেতে তাদের পুরো জানুয়ারি মাস অপেক্ষা করতে হবে। অষ্টম-নবমের শিক্ষার্থীদের হাতে সব ক’টি বই পৌঁছে দিতে আরও দেড় থেকে দুইমাস সময় লাগতে পারে বলে এনসিটিবি সূত্র জানিয়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) অধ্যাপক ড. রিয়াদ চৌধুরী বলেন, ৬৫৫টি বই সংশোধন-পরিমার্জন করতে হয়েছে। সব শ্রেণির বইয়ের পাণ্ডুলিপি নতুন করে করা। তাছাড়া জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে গল্প-গ্রাফিতি নির্বাচন করে বইয়ে যুক্ত করা হয়েছে। এসব করতে বড় একটা সময় লেগে গেছে।
আবার অন্যবার ৩০-৩২ কোটির মতো বই ছাপানো হয়। এবার বইয়ের সংখ্যা অনেক বেশি; প্রায় সোয়া ৪০ কোটি।তিনি আরও বলেন, খোঁজ নিয়ে দেখেন, জুন থেকে বইয়ের টেন্ডার, ক্রয় অনুমোদন, নেওয়ার কাজ শুরু হয়। আমরা তো দায়িত্ব নিয়েছি সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে। তারপর প্রথম থেকে আবার শুরু করতে হয়েছে। এ বাস্তবতাগুলোর দিকেও তাকাতে হবে। তারপরও আমরা জাতির স্বার্থে দিনরাত কাজ করছি। গতকাল সারারাত (শনিবার দিনগত রাত) আমি অফিসে ছিলাম। কাজের চাপে ঘরে ফেরা হয়নি।