মুলাদীতেও মেলা শুরুর খবরে আনন্দিত এলাকাবাসী মুলাদীতেও মেলা শুরুর খবরে আনন্দিত এলাকাবাসী - ajkerparibartan.com
মুলাদীতেও মেলা শুরুর খবরে আনন্দিত এলাকাবাসী

3:52 pm , December 29, 2024

জামদানী মেলায় গ্রামবাসীর সাথে আনন্দিত শিক্ষার্থীরাও

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বছরের পর বছর ধরে বিনোদন থেকে বঞ্চিত গৌরনদী উপজেলায় জামদানী মেলা উৎসবের মেলায় পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা নতুন বছরে শিক্ষাজীবন শুরুর পূর্বে মুহূর্তে এ ধরনের মেলা পেয়ে দারুন খুশী। এদের সাথে আনন্দিত তাদের অভিভাবকরা। তবে সকলের একটাই দাবি আনন্দ উৎসব যেন কোন অনৈতিক কর্মকান্ডে ম্লান হয়ে না যায়। মুলাদীতেও একইভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে জামদানী মেলা। এ খবরে আনন্দিত মুলাদীবাসী। গৌরনদী থানা সংলগ্ন পৌরসভার বালুর মাঠে এক মাসব্যাপী ‘দেশীয় পণ্য জামদানী মেলা ২০২৪ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বাংলাদেশ জামদানী ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্ট এসোসিয়েশনের উদ্যোগে ১৮ ডিসেম্বর থেকে এ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেলার আয়োজনের শুরু থেকেই গৌরনদী উপজেলাবাসীর মধ্যে বইতে শুরু করে আনন্দ। কারন বিগত ১৫ বছরের অধিক সময় ধরে উপজেলায় তেমন কোন উৎসব ছিল না। এ কারনে জেলা শহরের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের দিকে তাকিয়ে থাকতে হতো বিনোদনপ্রেমীদের। আর সকলের পক্ষে জেলা শহরে এসে বিনোদন উপভোগ করা সম্ভব ছিল না। দীর্ঘদিন পর হলেও জামদানী মেলা সেই বিনোদনের স্থানটা দখল করে নিয়েছে। মেলায় আসা কমল ঘোষ ও মো. আতিক বলেন, তারা বাটাজোর ও সরিকল এলাকা থেকে এসেছেন ছেলেমেয়েদের নিয়ে জামদানী মেলা উপভোগ করতে। এ মুহূর্তে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার চাপ নেই। তাছাড়া সারা বছর লেখাপড়ার পর প্রতি পরিবারে প্রয়োজন হয় বিনোদনের। কেউ বিনোদন উপভোগ করেন বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াতে। আবার কেউ স্থানীয় পর্যায় বিনোদন থেকেই সকল ধরনের আনন্দ উপভোগ করতে চান। সে ক্ষেত্রে জামদানী মেলা আমাদের সেই বিনোদনের জায়গাটা এনে দিয়েছে। তবে সেখানে যেন কোন ধরনের অনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালিত না হয় সেদিকটা সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি দেয়ার অনুরোধ জানান। মেলায় রয়েছে জামদানী শাড়ির স্টল থেকে শুরু করে ফুসকা-চটপটির স্টল, একটি নৌকার দোলা (রাইড), ১টি ড্রাগন ট্রেন রাইড, বড় একটি শাড়ি থ্রি-পিচের স্টল, ২টি রাইড, ভূতের ঘরসহ বিভিন্ন বিনোদনের ব্যবস্থা। সেখানে মোট ৬০টি স্টল নির্মিত হয়েছে। বিনোদনের সাথে সাথে চলছে কেনাকাটাও। গৌরনদী ও আগৈলঝাড়াসহ পাশর্^বর্তী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার লোকজন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ প্রতিদিন ৫/৬ সহ¯্রাধিক দর্শনার্থী মেলায় আসেন। রাত বাড়ার সাথে সাথে মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড়ও বাড়তে থাকে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান মেলায় আগত দর্শনার্থীরা। তারা মেলায় লক্ষ্মণ দাস সার্কাস আনার জন্য অনুরোধ জানান। তাহলে মেলা প্রাঙ্গন বিনোদনে ভরপুর হবে বলে ধারনা তাদের। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ জামদানী ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্ট এসোসিয়েশনের  কার্যকরী সদস্য এ মাজেদ বলেন, উপজেলা এবং গ্রামবাসীর বিনোদনের বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি দিয়ে গৌরনদী ও মুলাদী উপজেলায় জামদানী মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এতে করে উপজেলা এবং গ্রামবাসী দারুন খুশী। এ ক্ষেত্রে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের শর্ত মেনেই মেলার বিনোদন এগিয়ে চলছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার চাপ না থাকায় এ সময়টা বেছে নেয়া হয়েছে। একমাসব্যাপী চলবে জামদানী মেলা। এরপর দর্শনার্থীরা চাইলে মেলার সময় বাড়ানো হবে। এভাবে উপজেলা এবং প্রতিটি গ্রামবাসীকে বিনোদন দিতে জামদানী মেলা দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে আসছি। এ ব্যাপারে বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মো. শহীদউল্লাহ বলেন, ১৪টি শর্তে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত জামদানী মেলার অনুমতি দেয়া হয়েছে। কোনভাবে শর্ত ভঙ্গের কিছু পাওয়া গেলে সাথে সাথে মেলা বন্ধ করে দেয়া হবে। এদিকে মুলাদীতে জামদানী মেলা আয়োজনকে অভিনন্দন জানিয়েছে সর্বস্তরের জনগন সহ রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ। নদী বেষ্টিত মুলাদী উপজেলায় কোন রকম পার্ক কিংবা দর্শনীয় স্থান না থাকায় দীর্ঘদিন থেকে বিনোদন বঞ্চিত হয়ে আছে মুলাদীর মানুষ। কোন প্রকার বিনোদন স্পট না থাকায় যুবসমাজ সময় কাটাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছে বিভিন্ন নেশাসহ অসামাজিক কর্মকান্ডে। এরই প্রেক্ষিতে মুলাদী উপজেলার হিজলা-মুলাদী সংযোগ সেতুর পূর্বপাড়ে নদীর তীরে পরিত্যক্ত খালি জায়গায় জামদানী মেলা আয়োজনের জন্য বরিশাল জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেন। মুলাদী থানার অফিসার ইনচার্জ জহিরুল আলম সরেজমিনে পরিদর্শন করে উচ্চস্বরে কোন প্রকার মাইক কিংবা সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার না করাসহ ১৩টি শর্ত মেনে উক্ত জায়গায় জামদানী মেলার অনুমতি প্রদান করে। যা গত ২০ নভেম্বর পুলিশ সুপার লিখিতভাবে জানান। দীর্ঘদিন পরে এ ধরনের মেলার খবর ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের মাঝে আনন্দের উৎসব দেখা গেছে। এ ব্যাপারে মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য এ মাজেদ বলেন, উচ্চস্বরে কোন প্রকার মাইক কিংবা সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার না করা, জুয়া, হাউজিং, লটারী বন্ধসহ ১৩টি শর্ত মেনে আমি মেলা পরিচালনা করবো। যদি কোন শর্ত অমান্য করি তাহলে আমার বিরুদ্ধে আইগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT