পবিত্র কুরআন ও রাসুলের আদর্শ যাদের মধ্যে নেই তারা ইসলাম নয় : মাওলানা মিজান পবিত্র কুরআন ও রাসুলের আদর্শ যাদের মধ্যে নেই তারা ইসলাম নয় : মাওলানা মিজান - ajkerparibartan.com
পবিত্র কুরআন ও রাসুলের আদর্শ যাদের মধ্যে নেই তারা ইসলাম নয় : মাওলানা মিজান

3:40 pm , December 20, 2024

জুম্মাবার

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ সহীহ বুখারীর প্রথম হাদিস হচ্ছে – নিয়তকে সহীহ কর নিয়ে। এই হাদিসটি বুখারী শরীফের সাতটি স্থানে উল্লেখ করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে – আমি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি যে, “যাবতীয় কার্য নিয়ত বা সংকল্পের উপর নির্ভরশীল। আর মানুষের জন্য তাই প্রাপ্য হবে, যার সে নিয়ত করবে। অতএব যে ব্যক্তির হিজরত (স্বদেশত্যাগ) আল্লাহর (সন্তোষ লাভের) উদ্দেশ্যে ও তাঁর রসূলের জন্য হবে; তার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রসূলের জন্যই হবে। আর যে ব্যক্তির হিজরত পার্থিব সম্পদ অর্জন কিংবা কোন মহিলাকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যেই হবে, তার হিজরত যে সংকল্প নিয়ে করবে তারই জন্য হবে।” (বুখারী ১নং, মুসলিম ১৯০৭নং) এই হাদীসটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইমাম শাফেয়ী (রঃ) ও ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বাল (রঃ) এটিকে ‘এক তৃতীয়াংশ অথবা অর্ধেক দ্বীন’ বলে অভিহিত করেছেন।
এটিকে ইমাম বুখারী (রঃ) তাঁর গ্রন্থ সহীহ বুখারীতে সাত জায়গায় বর্ণনা করেছেন। (১, ৫৪, ২৫২৯, ৩৮৯৮, ৫০৭০, ৬৬৮৯, ৬৯৫৩নং) প্রত্যেক স্থানে এই হাদীসটি উল্লেখ করার উদ্দেশ্য হল কর্মের বিশুদ্ধতা ও কর্মের প্রতিদান নিয়তের সাথে সম্পৃক্ত—-সে কথা প্রমাণ করা।  মুসলমানদের দ্বিতীয় হজ্জসম স্থান হিসেবে বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে আজ এই হাদিসটির গুরুত্ব অপরিসীম বলে জানালেন মাওলানা মিজানুর রহমান। ২০ ডিসেম্বর বরিশালের ভাটিখানা মোড়ের স্ব-রোডে অবস্থিত পুরাতন ভাটিখানা মসজিদ হিসেবে পরিচিত বাইতুল আমান জামে মসজিদের ঈমাম মাওলানা মিজানুর রহমান উপস্থিত মুসল্লীদের কাছে স্পষ্ট করে বলেন, যেই মুহূর্তে বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে তাবলীগ জমায়েত দুভাগে বিভক্ত হয়েছে, ঐ মুহূর্তে তাদের নিয়তে দুনিয়া প্রাধান্য পেয়েছে। ঐ মুহূর্ত থেকে তারা ইসলাম থেকে সরে গেছেন। তিনজন হত্যা ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এই ঘটনার জন্য যে বা যারাই কাজটা করে থাকুক, দায়ী কিন্তু সাদ ও জুবায়ের পন্থী উভয়েই। কারণ, তাদের দ্বন্দ্ব, তাদের আগ্রাসী আচরণ তাদের ইগো এবং নেতৃত্ব নিয়ে মাঠ দখলে রাখা এসবই তৃতীয় পক্ষকে সুযোগ করে দিয়েছে।
মাওলানা মিজানুর রহমান এসময় আরো বলেন, পবিত্র কুরআন ঢেকে রাখার যে কাপড়, সেটাকে গেলাবস বলা হয়, ঐ গেলাবস মাটিতে পড়ে গেলে আমরা কি করি, দ্রুত তুলে চুমু খাই, বুকে চোখে জড়িয়ে ধরি। একটি সাধারণ কাপড় নিয়ে কি তা করি কুরআন এর সংস্পর্শে ঐ গেলাবস এর সম্মান বেড়ে গেছে। আল্লাহ ও রাসুলে করিম (সাঃ) এর সংস্পর্শে যারা থাকেন তাঁদেরও সম্মান ও মর্যাদা আল্লাহ বৃদ্ধি করে দেন। উদাহরণতো আমাদের পাশেই রয়েছেন ছারছীনা পীর সাহেব
আল্লামা নেছারুদ্দীন আহমদ (১৮৭৩-১৯৫২) এবং
চরমোনাই পীর মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ ইসহাক (১৯১৫-১৯৭৭)। এছাড়াও সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে ঘুমিয়ে আছেন আমাদের পথপ্রদর্শক অসংখ্য ওলি আকরামগণ। (আল্লাহ তাঁদের শান্তিতে রাখুন) হযরত শাহজালাল (রহঃ), শাহ পরান (রহঃ) শাহ আলী (রহঃ) প্রমুখদের সম্মান দিনকে দিন আল্লাহ  বৃদ্ধি করে দিয়েছেন। তাদের কারণে ঐ অঞ্চলের উপর আল্লাহর রহমত ঝরেছে।
এ সময় তিনি পবিত্র কুরআন থেকে সূরা নিসা ও হাশর এর আয়াত পাঠ করেন।- হে ঈমানদারগণ! আনুগত্য করো আল্লাহর এবং আনুগত্য করো রসূলের আর সেই সব লোকের যারা তোমাদের মধ্যে দায়িত্ব ও ক্ষমতার অধিকারী। এরপর যদি তোমাদের মধ্যে কোন ব্যাপারে বিরোধ দেখা দেয় তাহলে তাকে আল্লাহ ও রসূলের দিকে ফিরিয়ে দাও। যদি তোমরা যথার্থই আল্লাহ ও পরকালের ওপর ঈমান এনে থাকো। এটিই একটি সঠিক কর্মপদ্ধতি এবং পরিণতির দিক দিয়েও এটিই উৎকৃষ্ট (সুরা আন-নিসা: ৫৯)। এছাড়াও সূরা হাশরের ৭ নং আয়াতে আল্লাহ  বলেন: রসূল যা কিছু তোমাদের দেন তা গ্রহণ করো এবং যে জিনিস থেকে তিনি তোমাদের বিরত রাখেন তা থেকে বিরত থাকো। আল্লাহকে ভয় করো। আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।
উক্ত আয়াতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে রাসূল (সা:) এর উপর যে নির্দেশনা এসেছে তা অনুসরণ করতে হবে। সেক্ষেত্রে কোন ছাড় নেই। যদি এমন কোন ব্যাপার হয় যা আমাদের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থের সাথে জড়িত, অথবা এ সংক্রান্ত কোন বিষয় নিয়ে পরস্পরের মধ্যে বাদানুবাদ হয় তবে সে-সব কিছুর সমাধানের জন্য মুমিনদেরকে সরাসরি আল্লাহর নির্দেশ এবং রাসূল (সা:) এর পদ্ধতি অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। এখন আপনারা মুসল্লীরা বুঝে নিন এই তাবলীগ জমায়েত দুভাগে বিভক্ত হওয়ার পর তারা কি আর ইসলামের মধ্যে আদৌ আছে। পরষ্পরকে নাজেহাল করতে এখন তারা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। তারপরও রাসুল (সাঃ) এর পথে সমাধান ফিরিয়ে নিচ্ছেন না। আল্লাহ সবাইকে হেদায়েতের উপর প্রতিষ্ঠিত করুন। আমিন।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT