দুই বছর আগের যৌবনে ফিরলো লঞ্চ কেবিনের টিকিটের জন্য হাহাকার ! দুই বছর আগের যৌবনে ফিরলো লঞ্চ কেবিনের টিকিটের জন্য হাহাকার ! - ajkerparibartan.com
দুই বছর আগের যৌবনে ফিরলো লঞ্চ কেবিনের টিকিটের জন্য হাহাকার !

2:59 pm , December 19, 2024

ঢাকা-বরিশাল রুটে চলছে মাত্র ২টি লঞ্চ

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দুই বছর আগের যৌবন ফিরেছে ঢাকা-বরিশাল রুটের লঞ্চে। আর এ যৌবন ফেরাতে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে রোটেশন পদ্ধতি। এতে করে মালিকরা লাভবান হলেও বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা। কারণ রোটেশন করে এ রুটে চলাচল করছে মাত্র দুটি লঞ্চ। যা দিয়ে কোনভাবেই যাত্রী সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। ডেকের যাত্রীদের কোন ধরণের সমস্যা না হলেও কেবিন যাত্রীদের বেলায় মহাসংকট তৈরী হয়েছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে লঞ্চের একটি কেবিন ছিলো সোনার হরিণ। এখন সেই অবস্থা আবার হয়েছে। বিশেষ করে গত কয়েকদিন ধরে কোন ধরণের কেবিনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছেনা। একদিকে শীত মৌসুম অন্যদিকে সরকারি লম্বা ছুটির কারণে এ সংকট তৈরী হয়েছে বলে জানিয়েছেন লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। তবে সাধারণ যাত্রীদের অভিযোগ রোটেশন করে মাত্র দুটি লঞ্চ চালানোর কারনে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ২০২২ সালের ২৬ জুলাই চলাচলের জন্য পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ার পর লঞ্চ ব্যবসায় ধ্বস নামে। এ সেতু উদ্বোধনের আগে প্রতিদিন বরিশাল-ঢাকা রুটে ৮টি করে লঞ্চ চলাচল করতো। এতগুলো লঞ্চ থাকার পরেও খুব সহজে কেবিন পাওয়া যেতনা। এছাড়া প্রত্যেকটি লঞ্চের ডেকও থাকতো যাত্রীতে ভরপুর। দালালদের মাধ্যমে বেশিরভাগ সময় দ্বিগুন টাকা দিয়ে কিনতে হতো লঞ্চের কেবিন। কিন্তু পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরই সেইসব চিত্র পাল্টে যেতে শুরু করে। এক পর্যায়ে ধ্বস নামে লঞ্চ ব্যবসায়। কারণ অধিকাংশ কেবিন থাকতো খালি, ডেকেও ছিলোনা কাঙ্খিত যাত্রী। যাত্রী সংকটের কারণে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নৌপথে চলাচলকারী লঞ্চগুলো একে একে বন্ধ হয়ে যায়। একই সঙ্গে বন্ধ হতে শুরু করে নৌপথগুলোও। পদ্মা সেতু চালুর পর নৌপথে যাত্রী কমে যাওয়া এবং দুই দফায় জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে লোকসানের মুখে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া শুরু করেন মালিকরা। এতে একসময় যাত্রীদের কোলাহলে মুখর নদীবন্দরগুলোয় দেখা দেয় সুনসান নীরবতা। একটি বেসরকারী সংস্থার রিপোর্ট বলছে পদ্মা সেতু চালুর আগে প্রতিদিন ঢাকা থেকে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ লঞ্চে বরিশালসহ উপকূলীয় বিভিন্ন জেলায় যেত। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ ছিল বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, পিরোজপুর ও ঝালকাঠিগামী লঞ্চের যাত্রী। এক বছরের ব্যবধানে এ সংখ্যা ১৭ হাজার কমে ৩৩ হাজার হয়েছে। এই হিসাবে ঢাকার লঞ্চযাত্রী কমেছে ৩৪ শতাংশ। বিআইডব্লিউটিএ সূত্র বলছে, ঢাকা থেকে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের ১৪টি রুটের মধ্যে ৩টি চূড়ান্তভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এগুলো হলো বরগুনা, আমতলী, ভান্ডারিয়া। এ ছাড়া ঝালকাঠি রুটটিতে অনিয়মিত একটি লঞ্চ চলাচল করছে। বরিশাল ও পটুয়াখালী রুটে লঞ্চের সংখ্যা কমিয়ে যথাক্রমে দুটি ও একটি করা হয়েছে। কেবল ভোলা জেলার আটটি রুটে এখনো নিয়মিত আগের মতোই লঞ্চ চলাচল করলেও যাত্রীর সংখ্যা কমেছে। এ অঞ্চলের ১৮টি ঘাটের ৮টি এখনো ইজারা দেওয়ার লোক পাওয়া যাচ্ছে না।
দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বেশি যাত্রী পরিবহন করা রুট হচ্ছে বরিশাল-ঢাকা। এই রুটে দেশের সর্ববৃহৎ ও বিলাসবহুল লঞ্চগুলো যাত্রী পরিবহন করতো। আগে প্রতিদিন যেখানে সাত থেকে আটটি লঞ্চ যাত্রী পরিবহনে নিয়োজিত ছিল, সেখানে এখন মাত্র দুটি লঞ্চ চলাচল করছে।
সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২২ আগস্ট বরগুনা-ঢাকা নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এখান থেকে আগে প্রতিদিন তিনটি লঞ্চ চলাচল করলেও বছরখানেক আগে তা কমিয়ে একটি করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত সেটিও বন্ধ করা হয় যাত্রী সংকটের কারণে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT