4:15 pm , December 11, 2024
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নিউমোনিয়া জেঁকে বসেছে বরিশালে। প্রতিবছর বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এবছর শিশু মৃত্যু বেড়েছে গতবারের চেয়ে ৬ গুন। অসচেতনাকে দায়ি করছে কর্তৃপক্ষ। শিশু মৃত্যু ঠেকাতে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু আইসিইউ স্থাপনের চেষ্টা চলছে। হাসপাতালে এখন নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুর ভীড়। এদের বয়স একমাস থেকে ৬ বছরের মধ্যে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হিসেব অনুযায়ী প্রতিদিন এখানে গড়ে ৩৮১ জন নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ বছর এ পর্যন্ত হাসপাতালে নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ১১ হাজার ৪৫৭ জন শিশু। এরমধ্যে মারা গেছে ১৩৫ জন। শিশু মৃত্যুর এ হার গত বছরের চেয়ে ৬ গুন বেশি। গত বছর এখানে ৭ হাজার ২৬৬ জন শিশু নিউমোনিয়া নিয়ে ভর্তি হয় যার মধ্যে মারা যায় ২২ জন।
শেবাচিমের সহকারি পরিচালক ডা মোঃ রেজওয়ানুর আলম বলেন, বরিশালে নিউমোনিয়ায় শিশু আক্রান্ত ও মৃত্যু হার অবশ্যই ভয়াবহ। দিনে দিনে এ হার বেড়েই চলেছে। অনেকেই নিজেদের সিদ্ধান্তে ওষুধ খাওয়াচ্ছে। প্রতিদিন আমরা গড়ে ৩৮১ শিশুকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এজন্য অবশ্যই অসচেতনতাকে দায়ি করা যায়।
এদিকে আক্রান্ত শিশুদের মায়েরা বলছেন জ্বর-সর্দির সাথে শিশুদের শ্বাস কষ্ট খুব বেশি বেড়ে যাচ্ছে। জেলা পর্যায়ের হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে তারা মেডিকেলমুখী হচ্ছেন।
আক্রান্ত এক শিশুর মা বলেন, ঠান্ডা পড়ার পর আমার শিশুর শ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিলো। বুকে কফ জমে গিয়েছে, খাবার খাচ্ছিলো না। শুধু কান্না করছিলো। আমরা ডাক্তার দেখাবার পর নিউমোনিয়া নিশ্চিত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। ঘরে ঘরে এ অবস্থাই চলছে।
দিনে গরম আর রাতে ঠান্ডায় শিশুটা কাবু হয়ে আছে। শ্বাস কস্ট হচ্ছে, বুকের দুধও টানতে পারছে না।
শিশুটার কাপিয়ে অনেক জ্বর ওঠে। ছেড়ে ছেড়ে জ্বর ওঠে। বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৭ দিন ভর্তি ছিলো, সেখানে কোনই উন্নতি হচ্ছে না দেখে বরিশাল মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে এসেছি।
শেবাচিমের উপ পরিচালক এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, এ হাসপাতালে মাত্র ৪৮টি শিশু বেডের বিপরীতে এখন ভর্তি আছে ৩ শতাধিক শিশু। এক বেডে দুই থেকে তিনজন রোগী রাখতে হচ্ছে। আমাদের চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে, ওষুধও দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি শিশুদের জন্য ৫ বেডের আইসিইউর চালুর কাজ চলছে।
এদিকে বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় এক বছরে আরো ২৯ হাজার জন আবাল বৃদ্ধ বনিতা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত এবং ৪১ জনের মৃত্যুর খবর রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, নিউমোনিয়া শনাক্ত করে চিকিৎসা দেয়ার জন্য আমাদের তৃণমূল পর্যায়ে দক্ষ চিকিৎসকসহ দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মি আছে। আছে পর্যাপ্ত ওষুধ।