4:09 pm , December 9, 2024
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ভোজনরসিক বাঙালির খাবার তালিকায় পিঠা-পুলির স্থান সব থেকে উপরে। শীত এলে তো কথাই নেই। প্রতিবারের মতো এবারও শীতের আমেজ প্রকৃতিতে পড়ার সাথে সাথে নগরীর বিভিন্ন স্থানে বসেছে পিঠার দোকান। গত ১৫ দিন আগ থেকেই রাস্তার মোড়ে মোড়ে শীতের পিঠার ভ্রাম্যমান দোকানে পসরা সাজিয়ে বসেছেন অনেকে। শীতে এই ব্যবসায় স্ব-পরিবারে কাজ করতে দেখা যায় অনেক নি¤œ আয়ের মানুষকে। অস্থায়ী এই দোকানগুলোতে বিক্রিও হয় বেশ ভালই। বর্তমানে মৌসুমী পিঠা বিক্রেতারা বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন।
নগরীসহ সারাদেশের অতিপরিচিত একটি পিঠার নাম চিতই। প্রায় সারাবছরই এ পিঠার দেখা মিললেও শীত এলে কদর বেড়ে যায় কয়েকগুণ। শহরের রাস্তার পাশে মাটির চুলোয় টাটকা খেজুরের রসের পিঠাসহ নানা ধরনের পিঠা পাওয়া গেলেও নগরীতে মূলত ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, চাপটি পিঠা ও তেল পিঠাই বেশি। এসকল পিঠা মূলত সন্ধ্যায় বিক্রি হয় চলে রাত ৯-১০টা পর্যন্ত। চৌমাথা মোড়ে পিঠা বিক্রি করে নারী সহ ৫/৬ জন। তাদের একজন মিনারা বেগম বলেন, শীত শুরু হওয়ায় পিঠার কদর বেড়েছে। সারাবছরের তুলনায় শীতে পিঠার বিক্রি বেশি হয়। পিঠার অর্ডারও বেড়েছে। অর্ডার দিয়ে পিঠা নিতে হলে অন্তত একদিন আগে অর্ডার দিতে হয়। শহরে সারাবছর যেসব পিঠা পাওয়া যায়, তার অধিকাংশ থাকে চিতই পিঠা। দোকানিরা পিঠা প্রেমিকদের আকর্ষণ করার জন্য সরিষাসহ হরেক রকমের ভর্তার ব্যবস্থা করে রাখেন। লঞ্চঘাট এলাকার দোকানি সিরাজ বলেন, ১২ মাসই চিতই পিঠা বিক্রি করি। তবে অন্যান্য সময়ের চাইতে শীতে পিঠা বিক্রি অনেকগুণ বেড়ে যায়। কারণ এ সময় চিতই পিঠার সঙ্গে খেজুরের গুড়ের ভাপা পিঠাও বিক্রি হয়। শীত মৌসুমে পিঠা বিক্রি করে প্রতিদিন ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা লাভ থাকে বলে জানান তিনি। হাসপাতাল রোড এলাকার ফুটপাথের পিঠার দোকানি পারভেজ বলেন, শীতে পিঠার ব্যবসা বেশ ভালই চলে। পিঠার সাথে কয়েক ধরণের ভর্তা দেয়া হয় যাতে মানুষ খেয়ে মজা পায়, আর বারবার খেতে আসে। শীতের মধ্যে কয়েক রকমের পিঠা তৈরি করে থাকি। পিঠার বিক্রি এখনই বেড়েছে। শীত আরেকটু বাড়লে বেচাবিক্রি আরো বাড়বে। বর্তমানে নগরীর বিভিন্ন স্থান মিলিয়ে ২শ থেকে ৩শ ভ্রাম্যমান ও অস্থায়ী দোকান হয়েছে। নগরীর বেলসপার্কে পিঠা খেতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবি শিবলি বলেন, শীতের সময় এখানকার নি¤œ আয়ের অনেক মানুষের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন ভাপা পিঠার ব্যবসা। এছাড়া সন্ধ্যার পর বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, অফিস, দোকান, ক্লাব, আড্ডায়ও পিঠার আয়োজন লক্ষ্য করা যায়। শীতকালে শ্রমজীবি সহ অভিজাত পরিবারের লোকজনেরও প্রিয় শীতের এ পিঠা। প্রায় প্রতিদিন বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা ও পাটিসাপটা পিঠা খেতে পিঠা প্রেমীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে নগরীর সর্বত্র। সব স্থানে পিঠার স্বাদ বেশ ভালই।