3:11 pm , December 7, 2024
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নগরীর পাইকারী ও খুচরা কাঁচা বাজারগুলোতে আসছে প্রচুর পরিমানে শীতের সবজি। বিগত দিনে ডিসেম্বরের আগেই দাম কমে যেত শীতকালীন সবজির। তবে এবার ডিসেম্বর মাসের এক সপ্তাহ পার হলেও কমছে না দাম। কাঁচা বাজারে ৮০ টাকার নীচে মিলছে না অনেক সবজি। বাজারে নতুন আলুর কেজি ১২০ টাকা আর করল্লা, বিচিওয়ালা শিম, টমেটো, গাজর ১০০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। গতকাল নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। নগরীর বড় বাজার, চৌমাথা বাজার, বাংলা বাজার, বটতলা বাজার সহ বিভিন্ন এলাকার ভ্রাম্যমান সবজির বাজারে দেখা যায়, প্রতি কেজি নতুন আলু ১২০, টমেটো ১৪০ থেকে ১৬০, কাচা মরিচ ১২০ থেকে ১৪০, বরবটি ৮০ থেকে ১০০, শসা ৬০, করলা ১০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া কাঁচা টমেটো ৬০, মুলা ৪০, পটোল ৬০, বিচিওয়ালা শিম প্রতি কেজি ১০০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। অন্যদিকে সাধারণ শিম ৬০, কচুর লতি ৮০, গোল বেগুন ৮০, লম্বা বেগুন ৬০, শালগম ৬০, পেঁপে ৪০ থেকে ৫০, মিষ্টিকুমড়া ৪০ থেকে ৫০, পিঁয়াজের ফুল প্রতি আঁটি ৪০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতি পিস ফুলকপি, বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
চৌমাথা বাজারের ক্রেতা রাকিবুল ইসলাম বলেন, এখনো বাজারের প্রায় সব সবজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা করে দাম হাকাচ্ছে। আর অন্যগুলোর দাম ১০০ টাকার ওপরে। বিগত সময়ে শীতের এই সময়ে তথা ডিসেম্বরের শুরুতেই কমে আসতো শীতকালীন এসকল সবজির দাম। এই সময়ে বাজারে সকল ধরনের সবজির পর্যাপ্ত যোগান থাকায় দাম থাকতো পুরোটাই হাতের নাগালে। তবে এবছরের চিত্র ভিন্ন। বাজারে সবজির কমতি না থাকলেও দামা এখনও অনেক বেশি। তিনি আরও বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি অস্থিতিশীল। ব্যবসায়িরা এর সুযোগ নিচ্ছে। এছাড়া নিয়মিতভাবে বাজার মনিটরিংয়ের কোনো ব্যবস্থা নেই। ব্যবসায়ীরা যে যার মতো করে দাম আদায় করে নিচ্ছে সুযোগ বুঝে। ক্রেতাদের বাধ্য হয়ে সেই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের উচিত বাজার মনিটরিং করে সবকিছুর দাম নির্ধারণ করা এবং ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসা এবং এই প্রক্রিয়ার নিয়মিত তদারকি করা।
বিক্রেতাদের দাবি, বাজারে সবজির প্রতুলতা থাকলেও তারা চাইলেও দাম কমিয়ে বিক্রি করতে পারছেন না। কারন তাদের সবজি আমদানির খরচ নাকি পূর্বের তুলনায় এখন বেশি। তবে গতমাসের তুলনায় দাম কিছুটা কমেছে বলে দাবি তাদের। এছাড়া আমদানিকৃত সবজির মানভেদে দাম কমবেশি হয়ে থাকে। একই সবজি বাচাইকৃত গুলোর দাম কিছুটা বেশি। আবার বাছাইয়ের পর যা থাকে সেসকল সবজির দাম কিছুটা কম। এখন ভাল মানের হলে দাম একটু বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে বিগত দিনে বছরের এমন সময়ে দাম যা থাকতো সেই তুলনায় এখন দাম একটু বেশি বলে স্বীকার করেন বিক্রেতারা। আর এখন পরিবহন ব্যায় সহ সব ধরনের খরচ পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে তাই চাইলেও আগের মত দামে বিক্রি সম্ভব না।
অন্যদিকে বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতি কেজি খাসির মাংস ১ হাজার ৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৯০ টাকা। দেশি মুরগি ৬৫০-৭০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৯০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায় এবং প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০- ৩২০ টাকায়। ডিমের ডজন ১৩৫ থেকে ১৪৫ টাকা। এ ছাড়া পুরনো আলু ৭৫-৮০ টাকা, পিঁয়াজ ৯০- ১২০ টাকা, আদা ১২০ টাকা ও রসুন ২৪০-২৬০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়।
এদিকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় হঠাৎ দেখা দেয়া সয়াবিন তেলের সংকট এখন তীব্র হয়েছে। অধিকাংশ বাজারেই মিলছে না তেল। দু-একটি দোকানে পাওয়া গেলেও বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটারে ২০ থেকে ২৫ টাকা বেশি দামে। ক্রেতার চোখে ধুলা দিতে সয়াবিন তেলের বোতল রাখা হচ্ছে গোপনে। সুপারশপগুলোতে তেল থাকলেও একজন ক্রেতাকে একটির বেশি বোতল দেওয়া হচ্ছে না।