3:56 pm , November 30, 2024
দাশগুপ্ত আশিষ ॥ দেশের অধিকাংশ শিক্ষিত মানুষ অতিমাত্রায় আত্মকেন্দ্রিক। অতিরিক্ত অর্থলোভি। রূপবদলাতে মহা ওস্তাদ। দূর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। এবং এরা সাধারণভাবে জনবিরোধী। শিক্ষিত জনগোষ্ঠী সম্পর্কে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধারণা এই রকমই। কিন্তু ব্যতিক্রম অবশ্যই রয়েছে। এই ব্যতিক্রমীদের একজন শিক্ষাবিদ, শিক্ষক নেতা, মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত এম আব্দুল গফুর । তিনি অনন্য। এবং অসাধারণ।
আমার জীবনে চল্লিশ বছর এম আব্দুল গফুরকে চাক্ষুস এবং অন্তরঙ্গতায় যেমন দেখেছি। এমন পরোপকারী শিক্ষিত ব্যক্তি আমি কম দেখেছি।
শিক্ষা প্রসারে অন্তপ্রাণ সুনাগরিক সৃষ্টির এমন কৃতকর্মা শিক্ষক এখন দুর্লভ। কোন শিক্ষার্থী কম মেধাবী নয়। উপযুক্ত পথপ্রদর্শক ও সহযোগিতা পেলে সকলেই যোগ্যতা প্রমাণে সক্ষম। এই ছিল তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস।
এমন সাহসী শিক্ষক হিতাকাঙ্খী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিতাকাঙ্খী সত্যনিষ্ঠ শিক্ষক নেতা আমি আমার জীবনে কম দেখেছি।
নিজে একজন অত্যন্ত মেধাবী হয়েও নানা ক্ষেত্রে গুণী মানুষদের সমাদর করা, তাঁদের কাছ নিজে কিছু জানা এবং অন্যান্যদের জানানোর ঔদার্য দেখে মুগ্ধ হয়েছি। এখন এমন ঔদার্য নাই বললেই চলে।ল্যাঙ মারায় এখন অগ্রগণ্যরা ব্যস্ত।
এমন মুক্তমনা উদার অসাম্প্রদায়িক মনুষ্যত্ববোধ সম্পন্ন সাহসী মানুষ এখন নাই বললেই চলে। উদারতা আছে সাহস নাই। অসাম্প্রদায়িক কিন্তু সাহস নাই -এরকম মানুষ দেখা মিললেও দৃঢ় চরিত্রের বহুগুণে সমাহার ছিল এম আব্দুল গফুরের মধ্যে।
কৃষি ও পরিবেশ সচেতন এই রকম মানুষ এখন হাতেগোনা। রাস্তা ঘাটে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আঙিনায় কাগজের টুকরা তাঁর নজরে আসলে তুলে ফেলে দিতে দেখেছি। কিন্তু তাঁকে অনুসরণে ব্যর্থ হয়েছি।
সর্বশেষ বলছি কঠিন ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে এম আব্দুল গফুরের মত সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার মতো সাহসী যোদ্ধা এখন কোথায়? প্রয়াণ দিবসে তাঁর সম্পর্কে অল্পই বলা হল। তাঁকে তুলে ধরার যোগ্যতা আমার নাই। তাঁর সাথে সম্পর্ক আমার জন্মজন্মান্তরের ভাগ্য। স্যালুট এম আব্দুল গফুর।