4:11 pm , November 23, 2024
জুবায়ের হোসেন ॥ বরিশালে দিন দিন বেড়েই চলেছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন অসংখ্য রোগী। এখন পর্যন্ত বিভাগে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৪৯ জনের। ডেঙ্গুর প্রকোপ ও মশার উপদ্রপ বাড়ায় আতঙ্কে দিন কাটছে নগরবাসীর। সিটি কর্পোরেশন বলছে, মশক নিধনে নানা ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আর ডেঙ্গুর ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকের। দেশের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি বরিশালেও বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গেল বছর আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। এবার এর মধ্যে বেড়েছে মশার উপদ্রবও। তাই এডিস মশা নিধনে সিটি কর্পোরেশনের নজরদারী বাড়ানোর দাবি নগরীর বাসিন্দাদের। সাধারন নগরবাসীরা জানায়, কিছুদিন থেকে মশার উপদ্রপ বেড়েছে। সন্ধ্যায় পুরো দমে আক্রমন শুরু করলেও দিনের বেলাতেও মশার উপদ্রপ থাকে। প্রকোপ বাড়ছে তাই বেশ আতংকিত নগরবাসী। শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর জন্য চালু হয়েছে আলাদা ওয়ার্ড। যেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা। বেড সংকট থাকায় অনেককেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে মেঝেতে। গত মাসের মাঝামাঝি থেকে রোগীদের চাপ বাড়ছে বলে জানান হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা: মুনিরুজ্জামান। তবে রোগীদের সেবায় ওষুধসহ সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। রোগীদের মধ্যে একজন জানান, জ্বর উঠছিল প্রচন্ড। আর শরীর ব্যাথা ছিল। প্রথমে ভাবছি স্বাভাবিক পরে টেস্ট করার পর ডেঙ্গু ধরা পড়ছে। শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মুনিরুজ্জামান বলেন, প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সেক্ষেত্রে আমরা আগে থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। প্রতি ইউনিটে ডেঙ্গু ওয়ার্ড করা আছে। এছাড়াও ডেঙ্গু রোগীদের পর্যাপ্ত সেবার জন্য সব ব্যবস্থা আমাদের আছে। জ্বর ও সুনির্দিষ্ট লক্ষন দেখা দিলে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। সেইসঙ্গে ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষায় সারাবছর মশা নিধনসহ অন্যান্য কার্যক্রম চালু রাখার কথা বলেন চিকিৎসকরা।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল জানান, ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘন্টায় বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন সরকারী হাসপাতালে এ বছরে সর্বোচ্চ সংখ্যক ১৪৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। এছাড়াও একজনের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া ওই রোগী হলেন রক্তিম রায় (২১)। সে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার বাসিন্দা। বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন তিনি। এ নিয়ে বরিশাল বিভাগে এ বছর ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হয়ে ৪৯ জন মারা গেছেন। বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হয়ে গত ১ জানুয়ারী থেকে শনিবার পর্যন্ত বিভাগের দুইটি মেডিকেল কলেজসহ সরকারী হাসপাতালে ভর্তি হয় সাত হাজার ৪৩৮ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন সাত হাজার ২৫ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩৬৪ জন। সবচেয়ে বেশি রোগী মারা গেছেন বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়, ৩৮ জন। এছাড়া পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন, পটুয়াখালীতে একজন, ভোলা, পিরোজপুর ও বরগুনায় তিন জন করে মারা গেছেন। সিটি কর্পোরেশন বলছে, মেশিন স্বল্পতায় মশক নিধন কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। ওয়ার্ডভিত্তিক ১৫ দিন পর পর হ্যান্ড স্প্রে ও ফগার মেশিনে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি সচেতনতা বাড়াতে বিলি করা হচ্ছে লিফলেট। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. পল্লবী বলেন, ‘আমরা একটা টেন্ডার পাশ করেছি। আমাদের ৯০ টা হ্যান্ড স্প্রে আসবে ও ৩০ টা ফগার মেশিন আসবে। এইগুলো আসলে আমাদের কার্যক্রম আরো বাড়বে।