3:32 pm , November 21, 2024
বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বরিশাল বিভাগে প্রতিদিন ১১ লাখ ডিম চাহিদার চেয়ে বেশি উৎপাদন হচ্ছে। তার পরেও বাজারে দাম কমছে না। এজন্য খুচরা ব্যবসায়ি ও খামারিরা দুষছেন একে অপরকে। প্রানি সম্পদ বিভাগের দাবি সিন্ডিকেট হতে পারে। সবার দাবি খুচরা পর্যায়ে অভিযানের।
প্রানি সম্পদ বিভাগ সূত্র জানায়, বরিশাল বিভাগে প্রতিদিন ৪০ লাখ ডিম উৎপাদন হয়। এখানে ডিমের চাহিদা রয়েছে প্রতিদিন ২৯ লাখ। ১১ লাখ ডিম অতিরিক্ত হাতে থাকার পরেও বরিশালে ডিমের বাজারে আগুন চলছে। পাইকারি বাজারে ৫২ টাকা ডিমের হালি বিক্রি হলেও খুচরা বাজার বে-পরোয়া আর গ্রামের বাজার আরো চড়া। খুচরা বিক্রেতা ও ক্রেতারা জানান, খামারিরা ডিমের দাম বেশি নিচ্ছে বলে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। খামার পর্যায়ে অভিযান চালালে ডিমের দাম কমবে। তাদের মতে কদিন আগেও ৪০ টাকা হালি ডিম কিনেছি, এখন বিক্রি হচ্ছে অনেক বেশি দামে। ডিমের জন্য রীতিমত হাহাকার চলছে। অনেকের দাবি খামারেও ডিম আছে, বাজারেও ডিম আছে, কোথাও ঘাটতি নেই, তার পরেও ডিমের বাজারে অস্বাভাবিক দাম নেয়া হচ্ছে। খামারিরা বলছেন- ডিমের দাম বাড়ে এর উৎপাদন খরচ বাড়ে বলে। বাচ্চা মুরগীর দাম যেখানে ৪০ টাকা হওয়া উচিত সেখানে নেয়া হচ্ছে ৮৫ টাকা। পোল্ট্রি ফিডের দাম বস্তা প্রতি দ্বিগুনেরও বেশি বেড়েছে। এর উপর রয়েছে খুচরা ব্যবসায়িদের দৌরাত্ম। তাদের মতে সব খরচ ডিমের উপর বর্তায় বলেই ডিমের দাম কমার সম্ভাবনা থাকে কম। এনায়েত হোসেন ও জসিম উদ্দীন নামে দু’জন খামারি বলেন, এখন একটা ডিমের উৎপাদন খরচ সাড়ে ১০ টাকা। খামার থেকে বিক্রি হয় সাড়ে ১২ টাকা প্রতিটি। বাজার পর্যায়ে প্রতিটি ডিম ১৪ টাকার বেশি হবার কথা নয়। এটা করছে খুচরা অসাধু ব্যবসায়িরা। ডিমের দাম কমাতে হলে বাচ্চা মুরগীর দাম ও পোল্ট্রি খাবারের দাম কমাতে হবে। তাদের মতে চাল-চুলোর সব খরচ গিয়ে বর্তাচ্ছে ডিমের উপর। বিদ্যুৎ বিলে যে সহায়তা পাবার কথা ছিলো তা আমরা পাচ্ছি না। এছাড়া খামারের সব ডেমারেজ হিসেব করেই ডিমের দাম নির্ধারন হচ্ছে বলে দাম কমছে না। বরিশাল জেলা প্রানি সম্পদ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে প্রতিদিন এ জেলায় চাহিদার চেয়ে এক লাখ ৭০ হাজার ডিম বেশি উৎপাদন হচ্ছে। তার পরেও দাম না কমায় এদের সন্দেহ সিন্ডিকেটের দিকে।জেলা প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা ডা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বরিশালে লেয়ার খামার আছে ৩৯৯টা। ডিমের উৎপাদন, ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রন আমাদের কাজ নয়। ডিমের বাজার মূলত উৎপাদন খরচের উপর নির্ভর করে। কিন্তু দাম বৃদ্ধিতে সিন্ডিকেট জড়িত থাকতে পারে। এর পরেও খামারিদের সাথে লিংকেজ করে আমরা দাম সহনশীল রাখতে চেষ্টা করছি।এদিকে বিভাগীয় দপ্তর বলছে বরিশাল বিভাগের ২১০৮টি লেয়ার খামারে প্রতিদিন ৪০ লাখ ডিম উৎপাদন হচ্ছে। চাহিদার চেয়ে এটা ১১ লাখ বেশি। তাদের মতে ডিমের দাম কমাতে খুচরা বিক্রেতা পর্যায়ে অভিযান চালাতে হবে। প্রাণি সম্পদ বিভাগের পরিচালক মোঃ লুৎফর রহমান বলেন, ডিমের চাহিদার চেয়ে উৎপাদন এখানে বেশি হলেও চাহিদার কারনে বেশির ভাগ ডিম অন্য জেলায় চলে যাচ্ছে। যেখানে ডিমের দাম বেশি মিলছে সেখানেই চলে যাচ্ছে। এছাড়া পাইকারি থেকে খুচরা পর্যায়ে যে অস্বাভাবিক তারতম্য তা ঠেকাতে খুচরা পর্যায়ে নিয়মিত অভিযান চালাতে হবে।