3:27 pm , November 21, 2024
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে একই বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন (বহিষ্কৃত) এক শিক্ষকের কর্মকান্ডের ফলে উত্যপ্ত অবস্থায় রয়েছে হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন দীর্ঘ সময় এমন অবস্থা চলতে থাকলে প্রতিষ্ঠানটিতে সার্বিক শিক্ষার পরিবেশ চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হতে পারে। ইতোমধ্যে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন ও জেলা শিক্ষা অফিস। বহিষ্কৃত খন্ডকালীন শিক্ষক মাইদুল ইসলামের দাবী প্রধান শিক্ষক স্কুলে অনেক অনিয়ম দুর্নীতি করেন। এর প্রতিবাদ করায় তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে প্রধান শিক্ষকের দাবী খন্ডকালীন শিক্ষক শৃঙ্খলা বহির্র্ভূত আচরন করায় তাকে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বরখাস্ত করা হয়েছে।
৬ষ্ঠ শ্রেণির কয়েকজন ছাত্রীকে বিভিন্ন সময়ে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে খন্ডকালীন শিক্ষক মাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে গত ৬ মে প্রধান শিক্ষক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়।
এরই প্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষক ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পায়। এরপর পরিচালনা পর্ষদের সভায় মাইদুল ইসলামকে বরখাস্ত করা হয়। এতে শিক্ষক মাইদুল ইসলাম ক্ষুব্ধ হয়ে প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকদের বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি দেখানোসহ অশোভন আচরণ করে এবং অপরাধ ধামাচাপা দেয়ার জন্য বরিশাল শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান, স্কুলের সভাপতি, প্রধান শিক্ষকসহ মোট ৮জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন। মাইদুল ইসলামের শৃঙ্খলা বহির্ভূত আচরনের কারণে কয়েকবার সর্তকতামূলক নোটিশ প্রদান করা হয়।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, স্কুল সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককে স্কুল কোচিং এর ৪০ ভাগ টাকা দিতে হয়। যেখানে স্কুলে গত দুই বছর ধরে কোন কোচিংই হচ্ছে না। সেখানে প্রধান শিক্ষককে ৪০ ভাগ দেওয়ার প্রশ্ন বা অভিযোগ অবান্তর বটে।
উল্লেখ্য, খন্ডকালীন শিক্ষক মাইদুল ইসলাম বরখাস্ত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত প্রধান শিক্ষকের নামে কোথাও কোন অভিযোগ করেননি। বহিষ্কার হওয়ার পর প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিভিন্ন অফিসে দরখাস্ত দেয় এবং সাইবার ট্রাইব্যুনালে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকসহ মোট চারজনের নামে মামলা করেন। এতে প্রমানিত হয় মাইদুল ইসলাম ক্ষুব্ধ ও প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে এ কাজগুলো করছে।
স্কুলের উন্নয়নের টাকা লুটপাট নিয়েও অভিযোগ করেছেন খন্ডকালীন শিক্ষক মাইদুল। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি বেসরকারী স্কুলে উন্নয়ন কমিটি থাকে। তারাই মূলত স্কুলের উন্নয়নমূলক কাজ করে থাকেন। এতে প্রধান শিক্ষকের কোন হস্তক্ষেপ থাকে না। শিক্ষক মাইদুল ইসলাম বাসা ভাড়া করে কোচিং সেন্টার পরিচালনা করেন। তিনি একজন খন্ডকালীন শিক্ষক হয়ে ছয়মাস পূর্বে বরিশাল শহরে কোটি টাকার উপরে জমি ক্রয় করেছেন। তার এই টাকার উৎস্য কি?
খন্ডকালীন শিক্ষক মাইদুল ইসলামের পূর্বে বিদ্যালয়ের অন্য কোন শিক্ষক বহিষ্কার হননি। শিক্ষক মাইদুল ইসলামের অশোভন আচরনে ক্ষুব্ধ হয়ে অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে। যাতে তার চাকরি ফিরিয়ে দেয়া না হয়।
উল্লেখ্য যে সার্বিক বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে বরিশাল জেলা প্রশাসন ও প্রশাসনের বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থা।