4:11 pm , November 19, 2024
ভান্ডারিয়া প্রতিবেদক ॥ পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় রাজপাশা দারুস শরীয়াত দাখিল মাদ্রাসার টিনশেড ভবনটি ঘুর্ণিঝড় রিমালে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে যায়। ফলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে খোলা আকাশের নিচে চলছে পাঠদান। দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি ভবন নির্মাণের দাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর।
জানা গেছে, ভান্ডারিয়া উপজেলার ধাওয়া ইউনিয়নে ১৯৮৫ সালে এলাকার লোকজন মিলে রাজপাশা দারুস শরীয়াত দাখিল মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার দুই বছর পরে ১৯৮৭ সালে এমপিওভূক্ত হয়। সরকারিভাবে বরাদ্দ পেয়ে একটি টিনশেড ঘর নির্মাণ করে পাঠদান পরিচালনা করে আসছিলেন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। মাদ্রাসায় শিশু শ্রেণি থেকে দাখিল পর্যন্ত ক্লাস রয়েছে। পার্শ্ববর্তী উপজেলা কাঠালিয়া সহ ধাওয়া ইউনিয়নের ২৩২ শিক্ষার্থী এখানে পড়াশুনা করছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত ২৭ মে ঘূর্ণিঝড় রিমালের তান্ডবে ৬ কক্ষ বিশিষ্ট লম্বা টিনের ঘরটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এখন ক্লাস হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে। এতে করে শিক্ষা কার্যক্রমে বড় ধরণের সমস্যা হচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থী মাদ্রাসা ছেড়ে চলে গেছে অন্য প্রতিষ্ঠানে। ঝড় বৃষ্টির কারনে পাশ্ববর্তী ৫২নং রাজপাশা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যাক্ত ভবনে পাঠদান করালেও সেখানে রয়েছে বাঁধা-বিপত্তি। তাই শিক্ষার্থীরা পাঠদান করতে বাধ্য হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে।
এক শিক্ষার্থীরা বলেন, সামনে আমাদের বার্ষিক পরীক্ষা। ক্লাস না করলে আমরা পিছিয়ে পড়বো। তাই রোদের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করানো হচ্ছে। অতিদ্রুত আমরা ভবন চাই।
অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, রিমালে মাদ্রাসাটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে হচ্ছে। বৃষ্টি হলে পাশ^বর্তী সাইক্লোন শেল্টারের নিচে ক্লাস করতে গেলে বাঁধা বিপত্তি আসে। গরমে বাইরে ক্লাস করতে খুবই সমস্যা হয়।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী লামিয়া আক্তার বলেন, এখানে লেখাপড়ার কোন পরিবেশ নেই। শ্রেণিকক্ষ না থাকায় অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষা দেয়া সম্ভব হয়নি। সামনে বার্ষিক পরীক্ষা। এখন পাঠদান করতে না পারলে শিক্ষা জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
অভিভাবক আব্দুর কুদ্দুস ও রুবিনা বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অনেক বছরের পুরনো একটি মাদ্রাসা। পড়াশুনা ও ফলাফলেও ভালো। এ কারণে আমার মেয়েকে এই মাদ্রাসায় ভর্তি করেছি। অথচ মাদ্রাসাটিতে কোনো পাকা ভবন নেই। খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে হচ্ছে।
মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন, মাদ্রাসাটিতে একটি মাত্র টিনশেড ভবন ছিল। একই ভবনে প্রশাসনিক কার্যক্রম ও পাঠদান হতো। ঘূর্ণিঝড় রিমালে মাদ্রাসাটি বিধ্বস্ত হয়। যে কারনে শিক্ষার্থীদের খোলা মাঠে পাঠদান করানো হচ্ছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী আফিসার মোঃ ইয়াছিন আরাফাত রানা বলেন, সুপার সাহেব আমাকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। পাশ^বর্তী ৫২নং রাজপাশা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কৃর্তপক্ষের সাথে সমন্বয় করে দেয়া হয়েছে। আপাতত সেখানে পাঠদান চলবে। শিক্ষার্থীরা যাতে পাঠদানে ফিরতে পারে তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।