3:44 pm , November 10, 2024
সরোয়ারের নির্বাচনী প্রচারণাকালে যুবদল নেতাকে অপহরণ
মো:জিয়াউদ্দিন বাবু ॥ যুবদল নেতাকে অপহরণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ কমিশনারসহ ৩৯ জনের বিরুদ্ধে নালিশী মামলা করা হয়েছে। রোববার বরিশালের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলা করেন বরিশাল জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারন মো. মশিউল আলম খান। অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. হাবিবুর রহমান চৌধুরী নালিশী অভিযোগ এজাহার হিসেবে রুজু করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য মহানগর পুলিশের বন্দর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে বেঞ্চ সহকারী আরমান হোসেন জানিয়েছেন।
মামলার নামধারী আসামীরা হলেন : সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও বরিশাল-৫ আসনের সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুক শামীম, সাবেক পুলিশ কমিশনার এসএম রুহুল আমিন, সাবেক জেলা প্রশাসক অজিয়র রহমান, সাবেক উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঁইয়া, বন্দর থানার সাবেক ওসি মো. মোস্তফা কামাল হায়দার, সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) শাহ মো. ফয়সাল আহম্মেদ, এসআই আব্দুল মালেক, কনষ্টেবল ফয়জুল, এএসআই এরফান হোসেন মৃদুল, সহিদুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, রাসেল মিয়া, মোহাম্মদ মিলন বিশ্বাস ও মো. মেহেদি হাসান। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা ২৫ জনকে আসামী করা হয়েছে।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী এমএ মালেক বলেন, আসামীদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে পথরোধ করে অপহরণ করে হত্যা চেষ্টা, মারধর, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি প্রদানের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার বরাতে বেঞ্চ সহকারী মো. আরমান হোসেন বলেন, আসামীরা পুলিশের ও প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। তারা বিগত সরকারের অন্যায় এজেন্ডা বাস্তাবায়ন করে মানুষের মৌলিক অধিকারকে হরন করেছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালে শেখ হাসিনার পাতানো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকার দলের মনোয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী কে বিনা ভোটে নির্বাচিত করার চক্রান্তে লিপ্ত হয়। মামলার প্রধান আসামী জাহিদ ফারুক শামীম সরকার দলের প্রার্থী এবং মামলার প্রধান সাক্ষী এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ার বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। আসামীরা বিএনপির প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত জানতে পেরে প্রচারনায় বাঁধা, কর্মীদের মারধর, হুমকি, মিথ্যা মামলায় গণ গ্রেপ্তার করাসহ গুম করার মতো প্রক্রিয়া শুরু করে। ২০১৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর দুপুরে সদর উপজেলার চন্দ্রমোহন বাজারে লিফলেট বিতরণ করে বরিশাল নগরীতে সমাবেশে অংশ নিতে প্রার্থী সরোয়ারসহ অন্যান্য কর্মীরা রওয়ানা দেন। তারা সদর উপজেলার বিশ্বাসের হাট নদীর পাড়ে এসে পৌছলে প্রধান তিন আসামীর পরিকল্পনা ও হুকুমে অন্যান্য আসামীরা দুধর্ষ সন্ত্রাসীর মতো পুলিশের পোশাক পড়ে এসে তাদের দুই পাশ থেকে ঘিরে ধরে। বিএনপির প্রার্থীকে প্রাননাশের হুমকি দিয়ে নির্বাচনী প্রচারনা বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। বাদী বাঁধা দিলে আসামীরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে টেনে হেচড়ে বাদীকে স্প্রীড বোট থেকে অপহরণ করে। পরে একটি বদ্ধ ঘরে নিয়ে তার কাছে অস্ত্র ও গান পাউডার আছে এবং নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ততা আছে বলে মিথ্যা স্বীকারোক্তি চায়। বাদী যুবদল নেতা স্বীকারোক্তি দিতে না চাইলে পায়ের বুট দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। এছাড়াও রাইফেলের বাট ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে ক্রসফায়ারে হত্যা করে লাশ গুম করার আলোচনা করে।
ক্রসফায়ার দেয়ার উদ্দেশ্যে বদ্ধ ঘর থেকে নিয়ে বের হলে আসামীরা জানতে পারে, বাদীকে নেয়ার সময়ের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তখন তাকে বন্দর থানায় সোপর্দ করে। এরপর তাকে দুইটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠানো হয়।
স্বৈরশাসন বহাল থাকায় নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভেবে এতদিন মামলা করেননি বলে বাদী এজাহারে উল্লেখ করেছেন।