4:07 pm , November 9, 2024
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল নগরীর কাউনিয়া আমিন বাড়ি এলাকায় দুই ভাই এবং তার ছেলেদের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ের অভিযোগ উঠেছে। এই পরিবারটি যে দল ক্ষমতায় থাকে সে দলের কতিপয় নেতাদের ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে কাউনিয়া থানাসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে ছাত্র-জনতা আন্দোলনে আওয়ামীলীগের সাথে মিশে নগরীর বিভিন্ন স্থানে হামলা চালানোর অভিযোগও। ক্ষমতার দাপটে কোন ধরনের প্ল্যান ছাড়াই গড়ে তুলেছেন ভবন। অভিযুক্তরা হচ্ছে : আমিন বাড়ি এলাকার রশিদের ছেলে মনির ও জনি। তবে জনি গুম হয়েছে বলে জানা গেছে। গুম হওয়ার আগ পর্যন্ত জনিও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল। এছাড়া রশিদের ভাই রুস্তুম এবং তার তিন ছেলে ইমরান, মেহেদী ও আসিফ মাদক ব্যবসার সাথে জড়িয়ে আছে। এদের সাথে সাথে পরিবারের নারীরাও তাদের মদদ দিয়ে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে আছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, আওয়ামীলীগ ক্ষমতার আমলে একচেটিয়া ফেন্সিডিলের ব্যবসা চালিয়ে আসছিল রুস্তুম। আর রুস্তুমের ভাই রশিদ একটি বিড়ি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন। এর আড়ালেই চলে মাদক ব্যবসা। রুস্তুমের সাথে সাথে ব্যবসার হাল ধরে তাদের দুই ভাইর ৫ ছেলে। তারা ফেন্সিডিলের পাশাপাশি ইয়াবা ও গাঁজার ব্যবসা শুরু করে। ব্যবসা করতে গিয়ে বেশ কয়েকবার আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে আটক হয় তারা। কিন্তু কারাগার থেকে বের হয়ে আবারো পূর্বের পেশায় ফিরে যায়। আর এ ব্যবসা করতে যাতে করে স্থানীয়রা কোনভাবে তাদের বিরক্ত না করে এ জন্য স্থানীয় পর্যায়ে আওয়ামীলীগ নেতাদের উপর ভর করে তারা। সিটি মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর আমলে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী রইজ মান্নার অনুসারী বনে যায় রশিদের ছেলে এবং রুস্তুম ও তার ছেলেরা। মান্নাকে আর্থিকভাবে ম্যানেজ করে চালিয়েছে মাদক ব্যবসা। সাদিকের ক্ষমতার পালাবদলে সিটি মেয়র খোকন সেরনিয়াবাতের অনুসারী অসীম দেওয়ান ওই এলাকায় ক্ষমতাধর হয়। রশিদ ও রুস্তুমের ছেলেরা বনে যায় অসীমের ক্যাডার। তারা অসীমের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়ে চালিয়ে যায় মাদক ব্যবসা। আর এতে সমর্থন জোগায় রশিদ ও রুস্তুম। এমনকি তাদের পরিবারের নারী সদস্যরাও ছিলেন সম্পৃক্ত। এ জন্য অসীমও তাদের কাছ থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হতেন বলে এলাকায় প্রচার রয়েছে। আর আওয়ামীলীগের ক্ষমতাধর নেতাদের ছত্রছায়ায় থাকার কারনে তাদের বিরুদ্ধে কেউ টা-টু শব্দ পর্যন্ত করতে পারতো না। আর কেউ তাদের বিরুদ্ধাচারন করলে উল্টো তাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হতো। এমনকি মাদক ব্যবসায়ীদের ঘরের নারীরা পর্যন্ত ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের উপর হামলা চালাতো। এ কারনে এলাকাবাসী সব জানার পরও চুপ থাকতে বাধ্য হয়। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলেও তাদের মাদক ব্যবসা চলছে। ইয়াবা নিতে প্রতিদিন বিভিন্ন বয়সী পুরুষ আসে। নতুন নতুন মুখ দেখা যায়। তাদের গোপনীয়তা রক্ষা করে ইয়াবা দেয়া হলেও তা এলাকাবাসী দেখেও না দেখার ভান করে। এদিকে নগরীতে কোন ধরনের ভবন উত্তোলন করতে হলে সেখানে সিটি কর্পোরেশনের প্ল্যান বাধ্যতামূলক। কিন্তু ওই মাদক পরিবারের বেলায় ঘটেছে ভিন্নতা। তারা আওয়ামীলীগের ক্ষমতা ব্যবহার করে কোন ধরনের প্ল্যান ছাড়াই ভবন নির্মান করায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। এ ব্যাপারে কথা বললেও তাতেও মারাত্মক রূপ ধারন করে মাদক পরিবারের প্রতিটি সদস্য। যার কারনে কেউ কোন শব্দ পর্যন্ত করতে পারছে না। অভিযোগ রয়েছে ছাত্র-জনতা আন্দোলন চলাকালীন রশিদ ও রুস্তুমের ছেলেরা অসীম দেওয়ানের সাথে একত্রিত হয়ে ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের ধাওয়া করে। এমনকি বিভিন্ন স্থানে হামলা চালানোরও অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। বর্তমানে বিএনপি সাজতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ওই মাদক পরিবারটি। এ ব্যাপারে বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়ার থানার ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা বলেন, এদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলার পাশাপাশি অভিযোগ রয়েছে। এরপরও এলাকাবাসী লিখিতভাবে অভিযোগ পেলে তা খতিয়ে দেখে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।