4:10 pm , October 11, 2024
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি ফিরছে না। বন্যা আর সরবরাহ ঘটতির অজুহাতে বাজারে সবজির দাম বাড়তি। প্রায় প্রতিটি সবজির দাম এখন ৮০ টাকার উপরে। ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে অনেককে।সপ্তাহের ব্যবধানে বরিশালের বাজারগুলোতে পেঁপে ও মিষ্টি কুমড়াসহ দুই-একটি পণ্য ছাড়া সব ধরনের সবজির দাম বেড়ে কেজি ৮০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব বাজারে মাছ ও মুরগির দামও বেড়েছে।গতকাল শুক্রবার নগরীর কয়েকটি বাজার বাজারঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।দোকানগুলোতে দেখা যায়, সপ্তাহ ব্যবধানে সব ধরনের সবজি দাম ২০ টাকা থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখীর কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, বেগুন ১০০ থেকে ১৪০ টাকা, করলা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, কাঁকরোল ১২০ টাকা, পটল ১০০ টাকা, ঢেঁড়স ১০০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকায়, পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ধুন্দল ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ১০০ টাকা, কচুর লতি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, ঝিঙ্গা ১২০ টাকা এবং শসার কেজি ৮০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা, চাল কুমড়া ৮০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়া ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচকলার হালি ৮০ টাকা আর লেবুর হালি রাখা হচ্ছে আকারভেদে ৩০ থেকে ৬০ টাকা।কাঁচামরিচের কেজি ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। সরবরাহ কম থাকায় কাঁচামরিচের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বলে জানিয়েছেন খুচরা বিক্রেতারা। তারা জানান, গত সপ্তাহের তুলনায় কাঁচামরিচের দাম কেজিতে ৬০ টাকা বেড়েছে।বাজারে শীতকালীন সবজি শিম ৪৮০ টাকা কেজি, পাকা টমেটো প্রকারভেদে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, গাজর ১৮০ টাকা, মুলা ৮০ টাকা এবং জলপাই ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা পিস এবং বাঁধা কপি ছোট সাইজের প্রতি পিস রাখা হচ্ছে ৮০ টাকা।শাকের আঁটি মিলছে না ২০ টাকার নিচে। বাজারে লাল শাক ২৫ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৫০ টাকা, মূলা শাক ২৫ টাকা, কলমি শাক ২০ টাকা, পুঁই শাক ৪০ টাকা এবং ডাঁটাশাকের আঁটি ৩০ টাকা বিক্রি করতে দেখা গেছে। ধনে পাতার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা পর্যন্ত।দেশি পেঁয়াজ ১২০ টাকা, আদা ৩২০ টাকা, রসুন ২২০ টাকা, নতুন আলু ১২০ টাকা, বগুড়ার আলু ১০০ টাকা এবং পুরান আলু কেজি ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।এদিকে গত সপ্তাহের মতো চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মুরগি। গত সপ্তাহের মতোই ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একই সঙ্গে সোনালি মুরগি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ২৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোনালি হাইব্রিড ২৬০ টাকা, দেশি মুরগি ৫২০ টাকা, লেয়ার লাল মুরগি ৩৩০ টাকা এবং সাদা লেয়ার মুরগি ৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।এসব বাজারে গরুর মাংস কেজি প্রতি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, গরুর কলিজা ৮০০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খাসির মাংস কেজি প্রতি ১১৫০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়, হাঁসের ডিম ২৩০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৯০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।অন্যদিকে বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ মাছ। এসব বাজারে ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১১০০ টাকা এবং ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশ ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকা, এক কেজি ওজনের ইলিশ ১৮০০ থেকে ১৯০০ টাকা এবং দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ২২০০ থেকে ২৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।এক কেজি চাষের শিং মাছ (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকায়, প্রতি কেজি রুই মাছ (আকারভেদে) ৩৮০ থেকে ৫০০ টাকায়, দেশি মাগুর মাছ ৮০০ থেকে ১১০০ টাকা, মৃগেল ৩২০ থেকে ৪০০ টাকায়, চাষের পাঙ্গাস ২০০ থেকে ২২০ টাকায়, চিংড়ি ৭০০ থেকে ১৪০০ টাকায়, বোয়ালমাছ ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়, কাতল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়, পোয়া মাছ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়, পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, কৈ মাছ ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়, মলা ৫৫০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১৩০০ টাকায়, টেংরা মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি মাছ ৫০০ টাকায়, পাঁচমিশালি মাছ ২২০ টাকায়, রূপচাঁদা ১২০০ টাকা, বাইম মাছ ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা, দেশি কই ১২০০ টাকা, শোল মাছ ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা, আইড় মাছ ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা, বেলে মাছ ৮০০ টাকা এবং কাকিলা মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।এসব বাজারে পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের বোতল ৮১৮ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১৪০ টাকা, মুগ ডাল ১৮০ টাকা, মিনিকেট চাল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা এবং নাজিরশাইল চাল ৭৫ থেকে ৮২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। রফিকুল আজাদ নামের এক ক্রেতা বলেন, সবকিছুর দাম বাড়ার কারণে মাসের খাবার খরচ বেড়েছে। কিন্তু আয় তো বাড়েনি। বাজার করতে এসে হিমসিম খেতে হচ্ছে।