4:07 pm , October 11, 2024
আজ রাত ১২টা থেকে ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ইলিশের প্রজনন রক্ষায় বঙ্গোপসাগরসহ বরিশালের অভ্যন্তরীণ নদ-নদী থেকে ইলিশ মাছ শিকার, মজুদ, বিক্রি ও পরিবহণের ওপর নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে আজ দিবাগত রাত ১২টা থেকে। একেবারে শেষ মুহূর্তে তাই ইলিশের গরম বাজার এখন টাগবগ করে ফুটছে। শেষ দিনে ইলিশের দাম আর চাহিদা দুটোই ছিলো আকাশছোঁয়া। গতকাল শুক্রবার সকালে পোর্টরোড মোকামে গিয়ে দেখা গেছে, আড়তগুলোর সামনে পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীদের হাঁক-ডাক। স্তূপ করে রাখা ইলিশগুলো হাঁক-ডাক দিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে বড় আকারের ইলিশের চেয়ে ছোট আকারের অর্থাৎ জাটকা ইলিশের সংখ্যাই বেশি। বাজারের একাধিক খুচরা ইলিশ বিক্রেতার সঙ্গে দাম নিয়ে কথা হয়। ব্যবসায়ীরা জানান, ১ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ খুচরা বিক্রি হচ্ছে ২২০০-২৫০০ টাকা কেজি। ৮শ থেকে ৯শ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮শ থেকে ২ হাজার টাকায়। ৫শ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৩শ থেকে ১ হাজার ৫শ টাকায়। আর ছোট আকারের অর্থ্যাৎ ২৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকা কেজি দরে। ক্রেতা সোলাইমান বলেন, গত এক সপ্তাহ আগেও ইলিশের দাম আরও কম ছিল। ইলিশ ধরা বন্ধ হবে এ কারণে ছোট-বড় প্রতি কেজি ইলিশ দাম বেড়েছে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। কেনার ইচ্ছা থাকলেও দাম বেশি হওয়ার কারণে কেনা হবে না। ঢাকা থেকে ইলিশ কিনতে এসেছেন নাজনিন সুলতানা। তিনি বলেন, আড়তগুলো ঘুরে দেখছি। দাম অনেক চড়া। তেতুলিয়া, কালাবদর আর আড়িয়াল খাঁ নদীর ইলিশ চেনা কিছুটা কঠিন। বিশ্বাসের ওপর কিনতে হবে। শিকদার মৎস্য আড়তের শাকিল শিকদার বলেন, ইলিশের দাম এখন সর্বোচ্চ। এর কারণ হচ্ছে সামনে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। মাছ সরবরাহের তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা বেশি। সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খুচরা বিক্রেতার লাইন লেগে থাকে। আজ রাত (১২ অক্টোবর) দিবাগত রাত থেকে ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা। ২২ দিন ইলিশ বিক্রিও বন্ধ থাকবে। শেষ মুহূর্তে ইলিশ কিনতে লোকজন ঘাটে আসছেন। সরবরাহ কম হওয়ায় ইলিশ এখন সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে। বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কান্তি ঘোষ বলেন, ইলিশ ডিম ছাড়ার জন্য এই সময়টাতে মিঠাপানিতে ছুটে আসে। ১৩ অক্টোবর থেকে ২২ দিন বঙ্গোপসাগরসহ বরিশালের অভ্যন্তরীণ নদ-নদী থেকে ইলিশ মাছ শিকার, মজুদ, বিক্রি ও পরিবহণ নিষিদ্ধ থাকবে। মা ইলিশ রক্ষায় ইতিমধ্যে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে টাস্কফোর্স সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, নিষিদ্ধ সময় জেলেদের মাঝে চাল বিতরণ করবে সরকার। আমরা আশাবাদী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চাল বিতরণ করতে পারবো। মা ইলিশ শিকারে জেলেরা যেন নদীতে না নামে সেজন্য এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ইলিশ শিকার নিষিদ্ধ সময়ে বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার ৪১ উপজেলায় ৩ লাখ ১৯ হাজার ৮৩০ জন জেলে চাল পাবে। এ জন্য ৭ হাজার ৯৯৫ দশমিক ৭৫০ মেট্টিক টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ওই চাল বিতরণ করা হচ্ছে।