4:08 pm , October 2, 2024
বরিশালের রফিক সহ গুলশানে জোড়া খুন
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাজধানীর গুলশান-২ এ একটি চায়ের দোকানে কাজ করতে গিয়ে অল্প বেতন এবং কাজ নিয়ে মালিক মো. রফিকের (৬২) সঙ্গে মনোমালিন্য হয় দোকানের কর্মচারী মো. রুমনের (২৭)। পর পর কয়েক দফা বাকবিত-াও হয় তাদের। এরই জেরে রফিককে হত্যা করে রুমন। এই ঘটনা দেখে ফেললে হত্যা করা হয় ওই চায়ের দোকানের আরেক কর্মচারী সাব্বিরকেও (১৬)।
গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস এসব কথা বলেন। এর আগে মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহর এলাকায় থেকে রুমনকে গ্রেফতার করা হয়। র্যাব সদর দফতর গোয়েন্দা শাখা, র্যাব-১ ও র্যাব-৭ এর যৌথ আভিযানিক দল তাকে গ্রেফতার করে। রুমনের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি।
রুমানের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, চায়ের দোকানে কাজ করতে গিয়ে অল্প বেতন এবং কাজ নিয়ে মালিক রফিকের সঙ্গে মনোমালিন্য হয় দোকানের কর্মচারী মো. রুমনের। পর পর কয়েক দফা বাকবিত-াও হয় তাদের। এরই জের এবং আরেকটি পক্ষের ইন্ধনে রফিককে হত্যা করে রুমন। এই ঘটনা দেখে ফেললে দোকানের আরেক কর্মচারী সাব্বিরকেও হত্যা করা হয়। রুমনসহ এই হত্যায় আরও দুজন জড়িত।
মুনীম ফেরদৌস বলেন, “গুলশান-২ এর একটি বাড়ির কেয়ারটেকার ছিলেন রফিক। পাশেই তার চায়ের দোকান। সাব্বির ছিল ওই দোকানের কর্মচারী। সে কাজ ছাড়ার কথা জানালে রুমনকে কাজে রাখেন রফিক।” র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, “রফিকের সঙ্গে একটি পক্ষের লেনদেন নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। ওই পক্ষটি রুমনকে টাকার লোভ দেখিয়ে হত্যায় জড়িত করে। রুমনসহ এই হত্যায় আরও দুজন জড়িত। তাদের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। আরেকজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
র্যাব জানায়, ঘটনার দিন গত ২৬ সেপ্টেম্বর রফিক, সাব্বির এবং রুমন দোকানের কার্যক্রম শেষে রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়েন। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী রাত আনুমানিক ২টার দিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রথমে রফিকের মাথায়, গলায় ও শরীরের আঘাত করা হয়। সাব্বির দেখে ফেললে তাকেও মাথায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে গুরুতর জখম করে মৃত্যু নিশ্চিত করে বিছানার চাদর দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। এরপর রুমন দোকান তল্লাশি করে নগদ টাকা লুট করেন ও কফি মেশিনসহ দোকানের মূল্যবান মালামাল বেশ কয়েকটি বস্তার মধ্যে ঢুকিয়ে রাখেন। পরে সকাল ৭টার দিকে একটি পিকআপে করে দোকানের মালামাল নিয়ে রুমন ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এয়ারপোর্ট এলাকায় গিয়ে বাসযোগে মালামালসহ তার নিজ বাড়িতে চলে যান। লুণ্ঠিত মালামালগুলো তার আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছেন বলে জানা যায়। র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তার রুমন আগে নিজ এলাকায় কৃষিকাজের পাশাপাশি ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। ১/২ বছর আগে রাজধানীর উত্তরায় একটি দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন বলে জানান। আসামি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেপ্তার এড়াতে কিশোরগঞ্জে তার বোনের বাড়িতে আত্মগোপন করেন। সেখানে অবস্থানের পরে রুমন চট্টগ্রামে তার নিকট আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপনে চলে যান। আত্মগোপনে থাকাকালে র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে। এই হত্যাকা-ে জড়িত বাকি আসামিদের ধরতে র্যাব কাজ করছে। এছাড় হত্যা মামলায় রুমনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে পুলিশের মাধ্যমে আদালতে পাঠানো হবে বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা। উল্লেখ্য, নিহত রফিকের বরিশাল নগরীর অক্সফোর্ড মিশন রোডে।