4:06 pm , September 28, 2024
শেবাচিমে চিকিৎসকদের ওপর রোগির স্বজনদের হামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রোগীর স্বজনদের হামলার প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করেছে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। গতকাল শনিবার সকাল ১০টা থেকে চার দফা দাবিতে এই কর্মবিরতি চলছে বলে জানিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক মো. আকিব। চার দিন আগে হাসপাতালে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসকদের ওপর হামলা করেছিল রোগির স্বজনরা। কর্মবিরতি পালনকালে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার, কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসকদের ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা, রোগীর চিকিৎসায় বেড অনুযায়ী ভর্তির ব্যবস্থা এবং চিকিৎসক সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন তারা। ওয়ার্ড মাস্টার আবুল কালাম আজাদ জানান, ২৪ সেপ্টেম্বর নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত আট বছর বয়সী জুনায়েদকে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাতে শিশুটি মারা যায়। শিশুটির মৃত্যুতে স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং ডাক-চিৎকার করতে থাকেন। এ সময় ইন্টার্ন চিকিৎসক সাইফা মোহসেনা প্রিমা এবং কর্তব্যরত নার্স সান্ত¡না দিতে তাদের কাছে যান। এক পর্যায়ে শিশুটির মা সাথী বেগম ওই চিকিৎসকের ওপর হামলা করেন।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, এ ঘটনায় হাসপাতালের পক্ষে একজন বাদী হয়ে ওই নারীকে আসামিকে করে মামলা করা হয়েছে। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। ইন্টার্ন চিকিৎসক আকিব বিস্তারিত বলেন, হামলাকারীদের গ্রেপ্তারসহ চার দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। দাবি মেনে নেয়ার বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালকের কাছে লিখিত চাওয়া হয়েছে। তবে দাবি বাস্তবায়নে পরিচালক ২৪ ঘণ্টা সময় চেয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে পরিচালকে পদত্যাগ করতে হবে তিনি বলেন। আজ রোববার এ বিষয় নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। দাবি মেনে না নিলে, কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। বর্তমানে হাসপাতালে ২২০ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক রয়েছেন। সকলে কর্মবিরতি পালন করছেন। তাদের এ আন্দোলনে সব চিকিৎসক একাত্মতা প্রকাশ করবেন বলে নিশ্চিত করেছেন আকিব।
হাসপাতালের পরিচালক এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে যেসব দাবি উত্থাপন করা হয়েছে, তা বাস্তবায়ন করা হবে। তবে এ জন্য সময়ের প্রয়োজন। আন্দোলনকারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পদত্যাগের মুচলেকা দিতে চাচ্ছেন না কেন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাদের দাবি বাস্তবায়নে আমাকে সময় দিতে হবে। এতে সামান্যতম কোনো ধরনের সমস্যা হবে না। তবে পদত্যাগের বিষয়টি এড়িয়ে যান হাসপাতালের পরিচালক এইচ এম সাইফুল ইসলাম। হাসপাতালের উপ-পরিচালক মনিরুজ্জামান শাহীন বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রাখার জন্য সকল ইউনিট প্রধানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা চিকিৎসা সেবা চালিয়ে নেবেন।