3:40 pm , September 25, 2024
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ হাঁটু কাঁদাজলে, উঁচু নীচু এবড়োথেবড়ো পথে বছরের পর বছর চলাচল বরিশালের আপামর মানুষের। নগরীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের উপর উপজেলা ভূমি অফিস, পাইকারী ও খুচরা বাজার ছাড়াও রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। রয়েছে আবাসিক হোটেলসহ আরো অনেক কিছু। ঐতিহ্যবাহী পোর্ট রোড বাজারে যেতে হলেও এই সড়কের বিকল্প নেই। তবে বরিশাল সিটি করপোরেশনের আওতাধীন হলেও এই সড়কটি কিন্তু বিআইডব্লিউটিএর বলে জানালেন সড়কের ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা। পোর্ট রোড নামে পরিচিত এই সড়কের ৪০০ মিটারের মতো অংশের চিত্র এটি। সড়ক নয়, যেন গ্রামের মেঠোপথ। পোর্ট রোড বাজার ও ভূমি অফিসে আসা প্রতিদিন হাজারো মানুষের চরম ভোগান্তি এই সড়কে। অটোরিকশা ও ইজিবাইক চালকদের অভিযোগ, এই সড়কে চলতে গিয়ে উল্টে গিয়ে হাত-পা ভেঙেছেন অসংখ্য যাত্রী। আবার কত যে ইজিবাইক ও অটোরিকশা নষ্ট হয়েছে তার হিসাব নেই বলে জানালেন তারা।
ভূমি অফিস থেকে বের হওয়া বাকেরগঞ্জের দুধল ইউনিয়নের সুন্দরকাঠী গ্রামের বাসিন্দা ফিরোজ হাওলাদার বললেন, আমাদের গ্রামের রাস্তাও এর চেয়ে ভালো। আর ভূমি অফিসের দেলোয়ার নামে ভূমি জরিপ কর্মী বলেন, এটা ভূমি অফিসের সামনে হলেও আমাদের কিছু করনীয় নেই। এ নিয়ে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি। তবে পোর্ট রোড বাজার অংশে বাজারের সামনের সড়ক কিন্তু পাকা এবং সিমেন্ট ঢালাই। এখানের প্রবীণ ব্যবসায়ী দুলাল ফরাজি বলেন, গত চার- পাঁচ বছর ধরেই এই সড়কটি এভাবে পড়ে আছে। ছোট লঞ্চঘাট এলাকার বালুর মাঠ টেম্পুস্ট্যান্ড থেকে পোর্ট রোড ব্রীজ পর্যন্ত এই সড়ক বিআইডব্লিউটিএর অধীনে। সিটি করপোরেশনের হলে এতোদিনে এটিও এই সামনের অংশের মতোই সিমেন্ট ঢালাই হয়ে যেত।
পাশের আরেক ব্যবসায়ী ইমরান বললেন, সাদিক আব্দুল্লাহ মেয়র হওয়ার পর বিআইডব্লিউটিএর বাধা দেওয়ার কারণে বাকী প্রায় আধা কিলোমিটার সড়কের কাজ আর করা হয়নি। তাই পোর্ট রোডের ঐ অংশের সড়কের এরকম অবস্থা। বিআইডব্লিউটিএ প্রশাসন এ বিষয়ে অবগত থাকলেও তারা হবে হচ্ছে বলে সময় পার করছেন বলে জানালেন একাধিক ব্যবসায়ী।
জানা গেছে, প্রয়াত মেয়র শওকত হোসেন হিরণ প্রথম এই সড়কের পুরো নির্মাণ কাজ করেছিলেন। তখনও বিআইডব্লিউটিএ আপত্তি করেছিল। কিন্তু হিরণ তা কর্ণপাত করেননি। তিনি জনস্বার্থে সড়কের নির্মাণ শেষ করেন। এরপর আর এই সড়কের খোঁজ কেউ রাখেনি। পাইকারী তিন-চারটি বাজার ও শিল্প কারখানার কারণে প্রতিদিন অসংখ্য ভারী যানবাহন চলাচল করে এই সড়কে। ফলে ধীরে ধীরে সড়কটির এই করুন পরিণতি হয়েছে বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সড়কটি বিআইডব্লিউটিএর অধীনে এটা সঠিক। তবে এটির রক্ষণাবেক্ষণ নির্বাহী প্রকৌশল দপ্তরের। বন্দর কর্তৃপক্ষের নয়। তবে শুনেছি সড়কটি মেরামতের জন্য ঢাকায় প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। হয়তো খুব শীঘ্রই এটির কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।