তিন নিত্য পণ্যের দাম নির্ধারনের পর তা আরও বেড়ে গেছে তিন নিত্য পণ্যের দাম নির্ধারনের পর তা আরও বেড়ে গেছে - ajkerparibartan.com
তিন নিত্য পণ্যের দাম নির্ধারনের পর তা আরও বেড়ে গেছে

4:11 pm , September 23, 2024

 

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ অস্থির হয়ে উঠেছে নগরীর নিত্য পণ্যের বাজার। সরকার তিন নিত্য পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পর দাম আরও বেড়ে গেছে। মুরগির ডিম, ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম আগের তুলনায় ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর দুই সপ্তাহ আগে আলু ও পেয়াজ আমদানিতে শুল্ক কমানো হলেও তার কোন সুফল মেলেনি। এছাড়া প্রায় সব সবজির দামও বেড়েছে আগের তুলনায়। গতকাল নগরীর বাজার রোডের বড় বাজার, চৌমাথা বাজার, বটতলা বাজার, নথুল্লাবাদ বাজার, বাংলা বাজার সহ বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর প্রানিসম্পদ অধিদপ্তর খুচরা পর্যায়ে প্রতিটি ডিমের দাম নির্ধারন করে দেয় ১১ টাকা ৮৭ পয়সা। সেই হিসেবে প্রতি ডজনের দাম হয় প্রায় ১৪৩ টাকা। জখন ডিমের দাম বেধে দেয়া হয়েছিল, তখন প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হতো ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা। যা এরপর আরও বেড়ে এখন ১৬৫ টাকা হয়েছে। আর্থাৎ দাম বেধে দেয়ার পর ডজনে আরও ১০ টাকা বেড়েছে। একই অবস্থা ব্রয়লার ও সোনালি জাতের মুরগির ক্ষেত্রেও। বাজারে যখন প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৭০ ও সোনালি ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল, তখন সরকার দাম বেধে দেয় প্রতি কেজি যথাক্রমে ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা এবং ২৬৯ টাকা ৬৪ পয়সা। এর পরই কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে এসকল মুরগির দাম। এখন বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা, সোনালি জাতের মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায়। উৎপাদনকারী থেকে খুচরা ব্যবসায়ী কেউই মানছে না বেধে দেয়া দাম। ফলে আমিষ জাতীয় খাদ্য পণ্য দুটি আগের থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। আলু ও পেয়াজ আমদানিতে শুল্ক কমানোর পরেও প্রতি কেজি পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। কিন্তু পেয়াজ রপ্তানির ওপর শুল্ক কমানোর পাশাপাশি বেধে দেয়া দর প্রত্যাহার করেছে ভারত সরকার। দুটি ব্যবস্থাই এরমধ্যে কার্যকর হয়েছে। কিন্তু নগরী সহ দেশের বাজারে এর কোন প্রভাব নেই। এছাড়া বাজারে আলুর দামও কমেনি। প্রতি কেজি আলু আগের মত ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি দেশি রোসন ২২০-২৪০ টাকা, আমদানি করা রোসন ২৪০-২৬০ টাকা, টাকা ও মানভেদে আদা বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৮০ টাকায়। সবজির বাজারে দেখা গেছে প্রতিকেজি বেগুন ৭০-৮০, করলা ৫০-৭০, ঢ্যাড়শ ৫০-৬০, বরবটি ৬০-৭০, মুলা ৫০, লতি ৬০-৮০, পটল ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি পেপে ৩০, কচুরমুখি ৬০-৭০, টমেটো ১৫০-১৬০, শিম ১৮০-২০০ এবং শসা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। প্রতিপিস লাউয়ের জন্য গুনতে হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। বাজারে লালশাকের আটি ২০, পাট শাক ১৫, পুই শাক ৩০, লাউ শাক ৪০, মুলা শাক ২০, ডাটা শাক ২০, কলমি শাক ১০-১৫ এবং পালংশাক ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে না কমে অপরিবর্তিত আছে গরু ও খাসির মাংস ১ হাজার ৫০ থেকে ১১০০ টাকা এবং ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়। মাছের দামে উল্লেখযোগ্য কোন পরিবর্তন নেই। বিক্রি হচ্ছে আগের বাড়তি দামেই। চাষের পাঙ্গাস জাত ভেদে ১৫০-২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৮০-২২০ টাকা, চাষের কই ২২০-২৬০ টাকা, চাষের শিং প্রতি কেজি ৫০০-৫৫০ টাকা, কোরাল ৭০০ টাকা, টেংরা ৬০০-৭০০, আইড় ৭৫০-৮০০ টাকা এবং পাবদা ৫০০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
দামের বিষয়ে বাজারের একাধিক বিক্রেতাদের দাবি, তারা যেমন কিনছে ঠিক সেই অনুসারেই বিক্রি করছে। বেশি দামে কেনা তাই বেশি দামে বিক্রি। সরকার নির্ধারিত দামে কোথাও কিছু বিক্রি হচ্ছে না বাস্তবে। এতে ক্রেতাদের কোন ধরনের সুবিধা তারা চাইলেও দিতে পারছেন না।
অন্যদিকে বাজারে আসা একাধিক ক্রেতারা জানান, পূর্বের সরকারের ওপর জনগনের অনিহার অন্যতম কারন ছিল দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি। তারা ভেবেছিল নতুনের হাতে কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রনে আসবে দ্রব্যমূল্য। “তবে যে লাউ সেই কদু”। বাজারের কোন সিন্ডিকেট এখনও ভাঙা সম্ভব হয়নি। শুধুমাত্র সিন্ডিকেট পরিচালনাকারিরা পরিবর্তিত হয়েছে মাত্র। তাই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রনে আসেনি উল্টো নির্ধারিত দামের প্রভাবে উল্টো তা আরও বেড়েছে। সব মিলিয়ে জনগনের ভোগান্তীর শেষটা আসলে কোথায় এমন প্রশ্ন তুলেছেন তারা।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT