3:37 pm , September 21, 2024
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ সড়ক নয়, যেন ড্রেনের উপর দিয়ে চলাচল বরিশালের হেমায়েতউদ্দিন আহম্মেদ ডায়াবেটিস ও জেনারেল হাসপাতালের রোগী এবংং আশেপাশের এলাকাবাসীর। বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক দুই সিইও এসে দেখে যাওয়ার পরও আজ পর্যন্ত এ সড়কের জন্য কোনো কাজ হয়নি বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে ২১ সেপ্টেম্বর শনিবার বরিশালের বাঁধ রোড মুক্তিযোদ্ধা পার্কের বিপরীতে অবস্থিত হেমায়েতউদ্দিন আহম্মেদ ডায়াবেটিস ও জেনারেল হাসপাতালে প্রবেশ পথে এসে থমকে যেতে হল সড়কে জমা নোংরা ময়লা পানির জন্য। পায়েচলা রোগী ছাড়াও প্রাইভেটকার, ইজিবাইক ও মোটরসাইকেল চালকদেরও থমকে যেতে দেখা যায় এখানে এসে। সামনের সড়কটি ডুবে আছেপানিতে। রাতে বৃষ্টি হওয়ার কারণে এই মুহূর্তে সড়কে পানির গভীরতা বোঝা যাচ্ছেনা। কয়েকজন মহিলা রোগী ইজিবাইক থেকে নেমে খুব সংকোচে ও সতর্কতার সাথে চাইনিজ রেষ্টুরেন্টের নীচতলা হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এখানে আবার চা দোকান ও আড্ডাবাজ লোকদের জটলা। এসব এড়িয়ে মহিলাদের চলাচল চেষ্টা দেখা গেল। কয়েকজন আবার ওপাশে পাবলিক লাইব্রেরী অংশের ড্রেনের স্লাবের উপর দিয়ে চলাচল করছেন। হাসপাতালের পিছনের এলাকার একজন বাসিন্দা বশির এসে বললেন, ভয় নেই, হাঁটুপানি এখানে। অটোরিকশা আর রিকশায় যেতে পারবেন। আর ঐ ড্রেনের স্লাবের উপর দিয়ে কিংবা চাইনিজ রেষ্টুরেন্টের নীচতলার ভিতর দিয়ে হেঁটে পার হতে সমস্যা হবে না। তবে প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল ঝুঁকি নিয়ে যেতে হবে।
তিনি আরো জানালেন, বৃষ্টি হোক বা না হোক এই সড়কে সবসময় ড্রেন উপচেপড়া নোংরা পানি থাকবেই। বৃষ্টি হলে বরং একটু পরিষ্কার পানি থাকে বলে জানান তিনি।
বরিশালের বাঁধ রোডের এই হাসপাতাল সড়কের একপাশে (উত্তরে) চরম অবহেলা ও অযতেœ পড়ে আছ ইতিহাস ঐতিহ্যের গর্বিত অহংকার বরিশাল পাবলিক লাইব্রেরী। দূর থেকে মনে হবে পানিতে তলিয়ে আছে এই লাইব্রেরীর সামনের অংশ। ডায়াবেটিস হাসপাতাল সড়কের গাঁ ঘেঁষেই (দক্ষিণে) বরিশালের প্রথম চাইনিজ রেষ্টুরেন্ট ও অডিটোরিয়ামটি দাঁড়িয়ে আছে প্রধান সড়কে। নীচতলা পুরোপুরি ফাঁকা। সেখানে স্থান পেয়েছে ভাসমান তিন-চারটি চা দোকান। যা দখল করেছে সড়কের অনেকটা অংশ। সোজা পশ্চিমে তাকালেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে হেমায়েতউদ্দিন আহম্মেদ ডায়াবেটিস ও জেনারেল হাসপাতালের বিশাল সাইনবোর্ড ও ভবনটি। প্রতিদিন এই হাসপাতালকে ঘীরে হাজারো রোগী ও স্বজনদের আসা-যাওয়া এই সড়কে। যেই মানুষের ভিড়কে কেন্দ্র করেই এখানে সড়ক ও আশপাশে বাণিজ্যিক পসরা সাজিয়ে বসেছেন আশপাশের হতদরিদ্র মানুষ।
তথ্যসূত্রে জানা যায়, ১৯৮৫ সালে বরিশালের ইতিহাস ঐতিহ্যের অন্যতম বরিশালে ডায়াবেটিস সমিতির যাত্রা শুরু হয়। ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে বাঁধ রোডে এই ডায়াবেটিস ও জেনারেল হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করা হয় বলে জানান হেমায়েতউদ্দিন আহম্মেদ ডায়াবেটিস সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব মোর্শেদ শামীম। তিনি বলেন, এই সড়কে হাসপাতালে আসা-যাওয়া রোগীদেরই যে ভোগান্তি তা নয়, এখানে রয়েছে গার্লস গাইড ও শতাধিক ঘরবাড়ি। সড়কটি সিটি করপোরেশনের আওতায় ১০ নং ওয়ার্ডের অধীনে। সাবেক দুইজন সিইও এসে দেখে যাওয়ার পর শুনেছি টেন্ডারও হয়েছে। অথচ আজ পর্যন্ত এই সড়ক ও আশপাশের ড্রেনেজ ব্যবস্থার কোনো উন্নতি চোখে পড়েনি বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জয়নাল আবেদীন বলেন, সিটি করপোরেশন এলাকার প্রায় সব সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার কাজের টেন্ডার হয়েছে। কাজও চলমান রয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই সড়কের কাজ কখন ধরবেন তা তারাই বলতে পারবেন।
এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের প্রশাসক বিভাগীয় কমিশনার শওকত আলী বলেন, এ বিষয়ে জানা ছিল না আমার। আপনার পাঠানো ছবি দেখে তবেই জানতে পেরেছি। দ্রুত এই কাজটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।