3:56 pm , September 17, 2024
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ বরিশাল মহানগরীর অনেক জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক ক্রমশ যান চলাচল সহ ভয়াবহ জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে। মেরামত ও রক্ষনাবেক্ষনে দীর্ঘদিনের উদাসীনতা এবংং প্রবল বর্ষণে নগরীর অনেক সড়কের অবস্থা বর্ণনাতীত। কিন্তু এসব সড়কের মেরামত দূরের কথা জরুরী রক্ষনাবেক্ষনেও কোন পদক্ষেপ নেই। সাম্প্রতিক পট পরিবর্তনের পরে সিটি মেয়রকে অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও নগর উন্নয়নে কোন ধরণের পদক্ষেপ দৃশ্যমান নেই। ফলে নগর ভবন এখন ‘নিয়মিত কর্মকান্ড’ এবং ‘পর্যবেক্ষন’ এ সীমাবদ্ধ থাকায় জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও ঝুলে আছে। এতে করে নগরবাসীর ভোগান্তি বাড়ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। তবে তহবিলের তেমন সংকট নেই। বর্তমান নগর পরিষদ দায়িত্ব গ্রহণের দিন কয়েক আগেই বরিশাল মহানগরীর সড়ক ও ড্রেন সহ অবকাঠামো উন্নয়নে প্রায় ৮শ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করে একনেক। চলতি অর্থ বছরে সে প্রকল্পের আওতায় দেড়শ কোটি টাকা পাবার আশা করছে নগর ভবন। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতির পরে মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি নিয়ে কিছু জানান হয়নি। তবে সদ্য বিদায়ী নগর মেয়রের সময়ে প্রকল্পটির অর্থ প্রাপ্তি সাপেক্ষ ৩২২ কোটি টাকা ব্যয় সম্বলিত ১৬৫টি রাস্তার পুন:নির্মান, সংস্কার ও উন্নয়ন এবং ৫৫ কিলোমিটার ড্রেন নির্মানে দরপত্র আহবান করে নির্মান প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যাদেশও দেয়া হয়েছিল। ভরা বর্ষায় কিছু সড়কের কাজ শুরুও হয়েছে। এছাড়া বিদায়ী মেয়রের সময় আরো কিছু সড়কের জরুরী মেরামত ও উন্নয়নে প্রাক্কলন তৈরী করে তা অনুমোদনের অপেক্ষায় ছিলো। কিন্তু এরই মধ্যে সরকার পরিবর্তন হওয়ায় মেয়রকে অপসারণ করা হয়।
ফলে বরিশাল মহানগরীর অনেক জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কের বেহাল দশা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে। এমনকি গত দু’মাসের প্রবল বর্ষণ ও প্লাবনে নগরীর অনেক জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তার মেরামত সহ জরুরী রক্ষনাবেক্ষন ব্যবস্থা অনুপস্থিত।
নগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ডের রাজকুমার ঘোষ রোডটির পরস্থিতি এখন সব বর্ণনার বাইরে। মাত্র সাড়ে ৩শ মিটারের এ সড়কটিতে ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানীর বিভাগীয় পণ্যাগার ছাড়াও অন্তত ২শ পরিবারের বাস। কিন্তু বিগত দুটি নগর পরিষদ এ সড়কটির উন্নয়ন দূরের কথা, মেরামত ও রক্ষনাবেক্ষনেও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। নতুন প্রকল্পের আওতায় এ সড়কটির সংস্কার সহ উন্নয়নের লক্ষে একটি প্রাক্কলন তৈরীর কথা বলেছেন সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলী। তবে সদ্য বিদায়ী নগর পিতার কাছে তা উপস্থাপন না হওয়ায় অনুমোদনও হয়নি। নগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ডের এ সড়কটি দেখভাল কার কাছে তাও এলাকাবাসীর কাছে অজ্ঞাত।
বর্তমান নগর পরিষদ দায়িত্ব গ্রহণের আগে ২২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মৃত্যুর পরে বিধি অনুযায়ী নির্বাচনও হয়নি আইনগত জটিলতায়। ফলে পুরো ২২ নম্বর ওয়ার্ডবাসীর মত রাজকুমার ঘোষ রোডটিও এখন অনেকটা অভিবাবক শূন্য। অথচ সামান্য বৃষ্টিতে এ সড়কটি নিমজ্জিত হচ্ছে। মাছ চাষের নমে সাবেক ইজারাদার পাশের লেকটির পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ করলেও নগর ভবন তা অপসারণ করে ভঙ্গুর সড়কটি রক্ষায় কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। ফলে ভঙ্গুর রাজকুমার ঘোষ রোড ইতোমধ্যে যান চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিক প্রবল বর্ষণে লেকের পানিতে সয়লাব হয়ে গেছে। ফলে পথচারীদের চলাচলও প্রায় বন্ধ রাজকুমার ঘোষ রোডে।
এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল বাশার বলেন, রাজকুমার ঘোষ রোডের পরিপূর্ণ মেরামত সহ বিটুমিনাস কার্পেটিং-এর লক্ষে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে।