বরিশালে টিসিবি’র পণ্য পাচ্ছেন বিগত সরকারের রাজনৈতিক সুবিধাভোগীরা বরিশালে টিসিবি’র পণ্য পাচ্ছেন বিগত সরকারের রাজনৈতিক সুবিধাভোগীরা - ajkerparibartan.com
বরিশালে টিসিবি’র পণ্য পাচ্ছেন বিগত সরকারের রাজনৈতিক সুবিধাভোগীরা

3:51 pm , August 31, 2024

বিশেষ প্রতিবেদক ॥  বরিশালে  সরকারী ভর্তূকির টিসিবি’র পণ্য কারা ভোগ করছে সে বিষয়টি ভেবে দেখার সময় এসেছে বলে দাবী সাধারন মানুষ সহ বাজার পর্যবেক্ষকদের। বাজারে নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রনে ২০০৫-০৬ অর্থ বছর থেকে প্রথমে ঢাকায় ও পরবর্তিতে পর্যায়ক্রমে সব বিভাগীয় সদর থেকে বিগত সরকার আমলে জেলা উপজেলা পর্যায়ে কিছুটা সাশ্রয়ীমূল্যে খোলাবাজারে টিসিবি’র পণ্য বিক্রী কার্যক্রম শুরু হয়।
কিন্তু ২০২২ সাল থেকে আকষ্মিকভাবেই খোলা বাজারের পরিবর্তে কিছু লোকের জন্য টিসিবি’র পণ্য বিক্রি কার্যক্রম সীমিত করা হয়। ফলে সারা দেশের মত এ অঞ্চলের বৃহৎ জনগোষ্ঠী সরকারী ভর্তূকির পণ্য সংগ্রহ থেকে বঞ্চিত হয় বলে অভিযোগ উঠলেও তা আমলে নেয়নি বিগত সরকারের নীতি নির্ধারকরা। ২০২২ সাল থেকে খোলা বাজারের পরিবর্তে টিসিবি সারা দেশে ‘১ কোটি পরিবারের মাধ্যে পণ্যবিক্রী কার্য়ক্রম’ নামে একটি কর্মসূচী চালু করে। ঐ কর্মসূচীর আলোকে টিসিবি’র বরিশাল আঞ্চলিক অফিসের আওতায় প্রায় ৬ লাখ মানুষকে ভোক্তা কার্ড প্রদান করে নির্দিষ্ট কিছু পণ্য বিক্রী করা হচ্ছে। তবে গত কয়েকমাস ধরে টিসিবির পণ্য বিক্রীও অনিয়মিত এবং নির্দিষ্ট পণ্যও সরবরাহ করা হচ্ছে না।
অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক বিবেচনায় ইউনিয়ন পর্যায় থেকে উপজেলা হয়ে জেলা প্রশাসনের তালিকা অনুযায়ী যারা টিসিবি’র পণ্য ক্রয়ের তালিকাভূক্ত হয়েছেন, তাদের বেশীরভাগই বিগত সরকারী দলের অনুসারী। তবে এক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের বক্তব্য, ‘ইউনিয়নগুলোর সদস্যদের প্রনীত তালিকা পরিষদের অনুমোদনের পরে উপজেলা হয়ে জেলা প্রশাসনে পাঠানোর পরে চূড়ান্ত করা হয়েছিল’। সুতরাং এক্ষেত্রে প্রশাসনের খুব ভূমিকা নেই’।  টিসিবি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ‘তারা প্রশাসনের তালিকা অনুযায়ী বরিশাল মহানগরীর ৯০ হাজার মানুষকে ১০৭ জন ডিলারের মাধ্যমে তাদের পণ্য বিক্রী করছেন। একইভাবে বরিশাল অঞ্চলে ৫শ ডিলারের মাধ্যমে ৫ লাখ ৯৮ হাজার ৯৬৮ জন সুবিধাভোগীর কাছে টিসিবির পণ্য বিক্রীর কথা জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় বানিজ্য সংস্থাটির দায়িত্বশীল মহল।
কিন্তু এসব সুবিধাভোগীর তালিকা নিয়ে বিপুল অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বেশীরভাগ ইউনিয়ন পরিষদ থেকেই রাজনৈতিক বিবেচনায় টিসিবি’র সুবিধাভোগীদের তালিকা প্রনয়ন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। অনেক অবস্থা সম্পন্ন পরিবারও একাধিক কার্ড পেয়েছেন, এমন অভিযোগও প্রতিষ্ঠিত সত্য। ৩০টি ওয়ার্ডের ৫ লক্ষাধিক জনসংখ্যার বরিশাল মহানগরীতে টিসিবি’র সুবিধাভোগীর সংখ্যা মাত্র ৯০ হাজার।
এদিকে প্রায় দু’মাস পরে ২৭ আগস্ট থেকে বরিশালে ২ লিটার ভোজ্য তেল ও ২ কেজি করে ডাল ছাড়াও খাদ্য বিভাগের সহায়তায় ৫ কেজি করে চাল বিক্রী করছে রাষ্ট্রীয় বানিজ্য সংস্থাটি। চিনি, পেঁয়াজ সহ অন্য কয়েকটি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নেই গত কয়েক মাস ধরে । তবে এসব পণ্য পাচ্ছে ৯১ লাখ মানুষের মধ্যে মাত্র ৬ লাখ ভাগ্যবান। তারাও কোন না কোনভাবেই সদ্য বিদায়ী সরকারী দলের সুবিধাভোগী বলে অভিযোগ রয়েছে।
ফলে সরকারী এ কার্যক্রম বাজার নিয়ন্ত্রনে কোন কার্যকর ভূমিকা রাখছেনা বলে দাবী বাজার পর্যবেক্ষকদের। একইভাবে বাজার পর্যবেক্ষক সহ সাধারন মানুষের দাবী মাঠ পর্যায়ে পুনরায় যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে নতুন তালিকা প্রনয়ন করে বর্তমান ব্যবস্থা চালু রাখা যেতে পারে। তবে পাশাপাশি পূর্বের ন্যায় বরিশাল সিটি করপেরেশন ও পৌর এলাকা সহ প্রতিটি উপজেলার খোলা বাজারে ট্রাকযোগে টিসিবি পণ্য বিক্রী করলে বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রন সহ আমজনতা কিছুটা সাশ্রয়ী মূল্যে সরকারী পণ্য সংগ্রহের সুবিধা পবেন। যা বাজারে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পাশাপাশি সাধারন মানুষকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে বলে মনে করছেন বাজার পর্যবেক্ষক সহ সাধারন মানুষ।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT