মাকে না জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ॥ মাথায় গুলিতে গেল প্রাণ মাকে না জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ॥ মাথায় গুলিতে গেল প্রাণ - ajkerparibartan.com
মাকে না জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ॥ মাথায় গুলিতে গেল প্রাণ

4:23 pm , August 12, 2024

মুলাদী প্রতিবেদক ॥ মাকে না জানিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন করছিলেন সিফাত হোসেন (১৬)। গত ৫ আগস্ট দুপুরে রাজধানীর তাতীবাজার এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন তিনি। ছেলেকে না পেয়ে তার মা সুফিয়া বেগম স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে ঢাকা মিটফোর্ট হাসপাতালে খুঁজে পান মাথায় গুলিবিদ্ধ মরদেহ। সিফাত হোসেন মুলাদী উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের খৈলারচর গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদারের ছেলে। তিনি শরীয়তপুর জেলার নড়িয়ার ভোজেশ্বর এলাকায় শাহেদ আলী হাওলাদার দারুস সুন্নাহ ইসলামিয়া মাদ্রাসায় হাফেজি পড়তেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে বন্ধুদের সঙ্গে যোগ দেন। আন্দোলনের সময় রাতে মায়ের সঙ্গে তাতীবাজারে একটি বাসায় থাকতেন এবং দিন হলেই বেরিয়ে পড়তেন। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে মেজ ছিলেন সিফাত। স্বপ্ন দেখতেন মাদ্রাসার ওস্তাদের মতো মুফতি এবং একজন দেশবরেণ্য বক্তা হওয়ার। সেই স্বপ্ন পূরণের জন্যই মাদ্রাসায় ভর্তি হয়েছিলেন বলে জানান তার ভাই রিফাত। কিন্তু পুলিশের গুলিতে স্বপ্ন শেষ হয়েছে তাদের। গত ৮ আগস্ট গ্রামের বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়েছে বলে জানান পরিবারের সদস্যরা।
নিহতের বড়ভাই রিফাত হোসেন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষিতে মাদ্রাসা বন্ধ হলে সিফাতের মাদ্রাসার অনেকে ঢাকায় যায়। সিফাত মায়ের সঙ্গে তাতীবাজারে থাকতো এবং তাকে না জানিয়ে দিনের বেলা বন্ধুদের সঙ্গে আন্দোলন করতো। গত ৫ আগস্ট সকালে বন্ধুদের সঙ্গে ঢাকার ইংলিশ রোড ও তাতীবাজার এলাকায় মিছিল করে সিফাত। দুপুরের দিকে পুলিশের সঙ্গে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়। সঙ্গীরা মিটফোর্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। কিন্তু তাদের কাছে কারও মোবাইল নম্বর না থাকায় যোগাযোগ করতে পারেননি তারা।
নিহতের মা জানান, গত ৫ আগস্ট রাত ১০টার দিকে তাঁর ছেলে সিফাত বাসায় না ফেরায় খোঁজ শুরু করেন। বিভিন্ন জায়গায় খুঁজে ব্যর্থ হয়ে ৬ আগস্ট জানতে পারেন মিটফোর্ট হাসপাতালে বেশ কিছু পরিচয় শনাক্তবিহীন লাশ আছে। পরে ৬ আগস্ট বিকেলে ওই হাসপাতাল গিয়ে ছেলের মাথায় গুলিবিদ্ধ লাশ দেখতে পান। গুলিটি কানের কাছ দিয়ে একেবারে মাথার মধ্যে ঢুকে গেছে। হাসপাতালের আনুষ্ঠানিকতার কারণে ৭ আগস্ট ছেলের লাশ পেয়েছেন তিনি।
শাহেদ আলী হাওলাদার দারুস সুন্নাহ ইসলামিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মুফতি মুহসিন উদ্দীন বলেন, সিফাত একজন প্রসিদ্ধ মুফতি এবং দেশের বিখ্যাত বক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখতো। ওয়াজ করতে কী বিষয়ে জানা প্রয়োজন সেগুলো আয়ত্ব করতে চাইতো।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT