4:29 pm , July 7, 2024

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় ৭৮ লাখ টাকা আত্মসাতের পর অবশেষে বরিশাল মহানগর পুলিশের জালে ধড়া পড়েছে চক্রের অন্যতম হোতা সোহাগ শেখ। শরিয়তপুরের নড়িয়ার কেদারপুরের জব্বার শেখ-এর ছেলে সোহাগকে গত বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে গ্রেপ্তারের পরে রোববার বরিশাল মহানগর পুলিশ সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়।
বিএমপি’র উপ পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোঃ আলী আশরাফ ভূঁইয়া এক প্রেস ব্রিফিং-এ জানান, বরিশালের একজন বেসরকারী অবসরপ্রাপ্ত চাকুরিজীবীকে গত ১৯ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিমান বন্দরের এভিয়েশন কাস্টমস অফিসার ‘খায়রুন নেসা’ পরিচয় দিয়ে, জনৈক ‘এলিজাবেদ এরিস’ নামের একজন তার নামে একটি লাগেজ পাঠিয়েছে বলে জানায়। পাশাপাশি উক্ত খায়রুন নেসা পরিচয়দানকারী কাস্টমস কর্মকর্তা ঘটনার শিকার ঐ ব্যক্তিকে প্রলুব্ধ করার জন্য লাগেজে বিপুল পরিমান ডলার রয়েছে বলে জানিয়ে তা কাস্টমস থেকে ছাড় করাতে পর্যায়ক্রমে টাকা দাবী করতে থাকেন। এমনকি ঐ সূত্রধরে ব্যাংক এশিয়া, সিটি ব্যাংক ও পূবালী ব্যাংক সহ বিভিন্ন ব্যাংক হিসেবে প্রতারণার শিকার ঐ ব্যক্তিকে ৭৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা প্রদানে বাধ্য করেন। কিন্তু এরপরেও আরো টাকা দাবী করলে ‘প্রতারণার ফাঁদে পড়েছেন’ বলে মনে করে প্রতারিত ব্যক্তি গত ২৫ ডিসেম্বর বিএমপির কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
দায়েরকৃত মামলাটি কোতয়ালী থানার সাব-ইনেসপেক্টর মোঃ রেজাউল ইসলাম ’কে তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। এক পর্যায়ে কোতয়ালী থানার ওসি (তদন্ত ) বিপ্লব মিস্ত্রী’ও তদন্ত কার্যক্রমে যোগদেন। ডিসেম্বর থেকে টানা ৬ মাসেরও বেশী তদন্ত শেষে গত ৪ জুন ঢাকার খিলগাঁও থেকে প্রতারক চক্রের অন্যতম মাষ্টারমাইন্ড সোহাগকে গ্রেপ্তারে সক্ষম হয় পুলিশ। গ্রেপ্তারের সময় সোহাগের কাছে প্রতারনার কাজে ব্যবহার করা ৩৫টি ব্যাংকের ৮৬টি এটিএম কার্ড, বিভিন্ন ব্যাংকের ১৫১টি চেকের পাতা, ৮টি মোবাইল সীম ও ৪টি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়েছে বলে অভিযানে অংশ নেয়া ওসি বিপ্লব মিস্ত্রী জানান।
ধৃত সোহাগের সাথে দেশী-বিদেশী একটি বড় ধরনের জালিয়াত চক্র সংশ্লিষ্ট রয়েছে বলে জানিয়ে তাদেরকেও আটকের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে বলে আলী আশরাফ জানিয়েছেন। গ্রেপ্তারকৃত সোহাগের বিরুদ্ধে রাজশাহী ও ঢাকায় আরো একাধিক মামলায় ওয়ারেন্ট রয়েছে বলেও জানান তিনি।