4:10 pm , July 2, 2024

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ আষাঢ়ের ভরা বর্ষার জুন মাসেও স্বাভাবিকের চেয়ে ৬০ভাগ কম বৃষ্টিপাতের পরে গত তিনদিন ধরে মাঝারী থেকে ভারী বর্ষণে বরিশালের জনজীবনে ছন্দপতন ঘটছে। খুব জরুরী প্রয়োজন ছাড়াও কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। মঙ্গলবার ভোর থেকে মেঘাচ্ছন্ন আকাশে মাঝে মাঝে বৃষ্টিতে বরিশাল মহানগরীর জনজীবন অনেকটা স্বাভাবিক থাকলেও দুপুর ২টা থেকেই আষাঢ়ের বর্ষণে সবকিছু প্রায় স্থবির হয়ে গেছে। দুপুরের পরে স্কুল ফেরত ছাত্রÑছাত্রীদের দুর্ভোগ ছিল চরমে। অনেক ছাত্র-ছাত্রীকেই কাক ভেজা হয়ে ঘরে ফিরতেও দেখা গেছে। বিকেলে অফিস ফেরত কর্মীদেরও দুর্ভোগের সীমা ছিলনা। রিক্সা ও ইজিবাইকের সংকটে অনেককেই দীর্ঘ সময় পথে ঘাটে অপেক্ষা করতেও দেখা গেছে।
আবহাওয়া বিভাগের মতে মৌসুমী বায়ু বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। বৃহস্পতিবারের পরবর্তি ৫ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবনতা কমে আসবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে দপ্তরটি। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বরিশাল নদী বন্দরে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৩নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া বিভাগ। মঙ্গলবার সকালের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় বরিশাল অঞ্চলে ৮৪ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। মাসের প্রথম দিনেও বরিশালে ২০ মিলিমিটার বৃষ্টি ঝড়েছে। আগামী ৩দিনই অস্থায়ী দমকা হাওয়া সহ হালকা থেকে মাঝারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছে আবহাওয়া বিভাগ ।
এবার বছরের প্রথম ৪ মাসই বরিশালে বৃষ্টিপাতের ব্যাপক ঘাটতি জনস্বাস্থ্য ও কৃষির জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠলেও ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’এ ভর করে মে মাসে স্বাভাবিক ২৬০ মিলিমিটারের স্থলে ৩৮৮ মিলি বৃষ্টি হয়। যা ছিল স্বাভাবিকের প্রায় ৫০ ভাগ বেশী। গত এপ্রিল মাসে বরিশালে বৃষ্টির পরিমান ছিল স্বাভাবিকের ৮৬% এবং মার্চে ৩০% কম।
কিন্তু জুন মাসে ৬০ভাগ কম বৃষ্টিপাতের পরে চলতি মাসে স্বাভাবিক ৫১৯ মিলিমিটারের স্থলে ৪২০ থেকে ৫৭০ মিলি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া বিভাগ। চলতি মাসে স্বাভাবিক ২২ দিনের স্থলে বরিশালে ২০-২৫ দিন বৃষ্টিপাতের কথাও জানান হয়েছে আবহাওয়া বিভাগের দীর্ঘ মেয়াদী বুলেটিনে।
বৃষ্টির অভাবে এবার বরিশাল কৃষি অঞ্চলে বীজতলা তৈরী সহ রোপন ব্যাহত হওয়ার পরে গত ২৫ মে’র ঘূর্ণিঝড় রিমাল’এ মাঠের অন্যসব ফসলের সাথে আউশেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফলে সদ্য সমাপ্ত খরিপ-১ মৌসুমে বরিশাল অঞ্চলে আউশের আবাদ লক্ষ্য ৬০ ভাগও অর্জিত হয়নি। অথচ সারা দেশের প্রায় ৩০ ভাগ আউশের আবাদ ও উৎপাদন হয় বরিশালে।