3:32 pm , June 30, 2024

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ বরিশালবাসীর রাতের নিরাপত্তা বিপন্ন করে মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত ভয়াবহ বিদ্যুৎ ঘাটতির পরে রোববার দুপুর ১২টা থেকে চাহিদার প্রায় ৬০ ভাগ লোডশেডিং এ জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পরে। রোববার সকাল ১০টা থেকে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের আওতায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রায় ৬৫ হাজার ছাত্র-ছাত্রী  অংশ নিলেও দুপুর ১২টা থেকে পুনরায় বিদ্যুৎ রেশনিং শুরু হওয়ায় কেন্দ্রগুলোতে পরিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হন। অনেক ছাত্র-ছাত্রী ঘর্মাক্ত শরীরে পরীক্ষা দিতে গিয়ে খাতাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অসহনীয় বিদ্যুৎ ঘাটতির ফলে শিশুদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও মানবেতর পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। সরকারী-বেসরকারী অফিস সমূহে দুর্ভোগের শেষ নেই। বরিশালের বেশ কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠানে শনিবার রাতের শিফটে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
গত ২৪ জুন থেকে চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎ ঘাটতি শুরুর হবার পরে শনিবার ঘাটতি ৪০ ভাগে উন্নীত হয়। রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে তা প্রায় ৬০ ভাগে উন্নীত হয়েছে। এমনকি শনিবার রাত ১০টার পরে নতুন করে বরিশালে বিদ্যুৎ রেশনিং শুরু হয়ে মধ্যরাত পেরিয়ে রোববার ভোর পর্যন্ত তা অব্যাহত ছিল। ফলে মহানগরী সহ পুরো জেলাবাসী রাতভর অনেকটাই নিরাপত্তহীন ছিলেন। গভীর রাতের ঘুটঘুটে অন্ধকারের সাথে দুঃসহ গরমে সাধারন মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছে।
ঘন্টার পর ঘন্টা এ বিদ্যুৎ ঘাটতিতে সরকারী-বেসরকারী হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা ব্যবস্থা চরম বিপর্যয়ের কবলে। এমনকি ১ হাজার শয্যার বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বরিশাল জেনারেল হাসপাতাল সহ অন্যসব চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও জরুরী অস্ত্রপচার পর্যন্ত ব্যাহত হচ্ছে। সুস্থ সমাজ ব্যবস্থার সাথে শিল্প ও ব্যবসা বানিজ্যও স্থবির হয়ে পড়ছে। গত কয়েকদিন ধরে বরিশালের অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানে এক শিফটে কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন মালিক পক্ষ।
মেরামত ও রক্ষনাবেক্ষনের জন্য দেশের অন্যতম বৃহত্তম পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট গত ২৪ জুন বন্ধ করে দেয়ায় জাতীয় গ্রীড থেকে বরিশালেও সরবরাহ চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ থেকে ৬০ ভাগ পর্যন্ত হ্রাস করা হচ্ছে। পিজিসিবি এবং ওজোপাডিকো’র একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রের মতে, পায়রা সহ বিভিন্নস্থানের একাধিক ইউনিট বন্ধ থাকায় উৎপাদন ঘাটতির ফলে বরিশালেও সরবরাহ হ্রাস করা হয়েছে। আগামী ৪ জুলাই ১,৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বন্ধ থাকা ৬৬০ মেগাওয়াটের ইউনিটটি উৎপাদনে ফিরলে পরিস্থিতির উন্নতির আশা করছেন দায়িত্বশীল মহল।