4:34 pm , June 25, 2024

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ তাপমাত্রার পারদ স্বাভাবিকের প্রায় ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস ওপরে উঠে যাবার মধ্যেই বরিশালে চাহিদার প্রায় এক তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎ ঘাটতিতে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে। পানি সরবরাহ সহ হাসপাতাল সমূহে জরুরী অস্ত্রপচার এবং চিকিৎসা পরিসেবাও বিপর্যয়ের কবলে। শিল্প প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন ব্যাহত হবার সাথে ব্যবসা-বানিজ্যেও স্থবিরতা নেমে এসেছে। ভয়াবহ এ ঘাটতির সাথে বরিশাল মহানগরী সহ বাইরের এলাকাতেও বিতরণ ব্যবস্থার গলদে সিমাহীন বিদ্যুৎ বিভ্রাট পরিস্থিতিকে আরো অসহনীয় করে তুলছে।
মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষনের জন্য দেশের অন্যতম বৃহত্তম পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়াট একটি ইউনিট জরুরী ভিত্তিতে বন্ধ করে দেয়ায় জাতীয় গ্রীড থেকে বরিশালেও সরবরাহ চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ হ্রাস করা হয়েছে। পিজিসিবি এবং ওজোপাডিকো’র একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রের মতে, পায়রা সহ বিভিন্নস্থানের একাধিক ইউনিট বন্ধ থাকায় উৎপাদন ঘাটতির ফলে বরিশালেও সরবরাহ হ্রাস করা হয়েছে। আগামী ৪ জুলাই পর্যন্ত ১,৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়াটের ১টি ইউনিট বন্ধ থাকবে। এরপর পরিস্থিতির উন্নতির আশা করছেন দায়িত্বশীল মহল।
তবে সোমবার দুপুর ১টার পর থেকেই সমগ্র বরিশাল অঞ্চল ভয়াবহ বিদ্যুৎ ঘাটিতির কবলে পড়ে। ফলে জনজীবনে চরম বিপর্যয় নেমে আসে। জুন মাসে বরিশালে স্বাভাবিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রী সেলসিয়াসের স্থলে মঙ্গলবারও বরিশালে তাপমাত্রার পারদ প্রায় ৩৬ ডিগ্রীতে উঠে যায়। আর এ দুঃসহ গরমের মধ্যেই দিন-রাত লোডশেডিং-এ জন জীবনে দুর্ভোগ এখন সব বর্ণনার বাইরে।
ঘন্টার পর ঘন্টা এ বিদ্যুৎ ঘাটতিতে হাসপাতালগুলোতে  চিকিৎসা ব্যবস্থা চরম বিপর্যয়ের কবলে। ১ হাজার শয্যার বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বরিশাল জেনারেল হাসপাতাল সহ অন্যসব হাসপাতালগুলোতেও জরুরী অস্ত্রপচার ব্যাহত হচ্ছে। সুস্থ সমাজ ব্যবস্থার সাথে শিল্প ও ব্যবসা বানিজ্য স্থবির হয়ে পড়ছে। গত দুদিন বরিশালের অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানে এক শিফটে কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন মালিক পক্ষ।
বিদ্যুৎ ঘাটতির ফলে শিশুদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মানবেতর পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে।  সরকারি-বেসরকারি অফিস সমূহে দুর্ভোগের শেষ নেই।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আগের দিনের মতই বরিশালে চাহিদার ৩৩ থেকে ৩৫ ভাগ পর্যন্ত বিদ্যুৎ ঘাটতি অব্যাহত ছিল। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী বরিশাল মহানগরীর ১৮টি ফিডারের অন্তত ৫টিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। সান্ধ্যপীক আওয়ারে পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে যাবে তা বলতে পারছেন না  বিদুৎ বিতরণ কোম্পানী- ওজোপাডিকো’র কর্মকর্তারা।