কর্মস্থলমুখী জনস্রোতে প্রাণচঞ্চল বরিশাল নদী বন্দরে ॥ সড়ক পথে ভোগান্তির শেষ নেই কর্মস্থলমুখী জনস্রোতে প্রাণচঞ্চল বরিশাল নদী বন্দরে ॥ সড়ক পথে ভোগান্তির শেষ নেই - ajkerparibartan.com
কর্মস্থলমুখী জনস্রোতে প্রাণচঞ্চল বরিশাল নদী বন্দরে ॥ সড়ক পথে ভোগান্তির শেষ নেই

4:27 pm , June 22, 2024

বিশেষ প্রতিবেদক ॥  ঈদ উল আযহাকে কেন্দ্র করে আবার সাময়িকভাবে প্রাণ ফিরে পেয়েছে  বরিশাল নদীবন্দর। ঈদের আগের ৪ দিন ঢাকা ও চাঁদপুর থেকে ঘরে ফেরা মানুষকে নিয়ে বরিশাল নদীবন্দরে ১০ থেকে ১৫টি পর্যন্ত তিনতলা যাত্রীবাহী বেসরকারী নৌযান বরিশাল বন্দরে নোঙর করে। অনুরুপভাবে ঈদ পরবর্তি গত কয়েক দিন ধরে ১২-১৩টি নৌযান বরিশাল নদীবন্দর থেকে চাঁদপুর ও ঢাকা যাচ্ছে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে কর্মরত শ্রমজীবী ও কর্মজীবী মানুষ ফিরছে বরিশাল থেকে চাঁদপুর হয়ে ট্রেন ও বাসে। আর রাজধানী ও সন্নিহিত এলাকার বিশাল কর্মজীবী ও শ্রমজীবীরা বরিশাল সহ সন্নিহিত এলাকা থেকে নৌপথে ঢাকা ফিরছেন। ফলে পদ্মা সেতু চালু হবার পরে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী বন্দরটি সাময়িকভাবে হলেও গত কয়েকদিন ধরে আবার মুখরিত।
রেললাইনবিহীন বরিশালে দীর্ঘ বছর ধরে নৌপথেই প্রায় ৭৫-৮০ ভাগ যাত্রী চলাচল করলেও পদ্মা সেতু চালুর পরে ৬০-৬৫ ভাগ যাত্রী সড়কপথে ঢাকাসহ সন্নিহিত এলাকায় যাতায়াত করছেন। কিন্তু ধারন ক্ষমতার অতিরিক্ত যানবাহনের কারণে বরিশাল থেকে পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়ের সংযোগস্থল ভাঙ্গা পর্যন্ত ৯১ কিলোমিটার অপ্রশস্ত সড়ক পথ অতিক্রমেই গত কয়েকদিন ধরে ৪ ঘন্টারও বেশী সময় লাগছে। ফলে ঢাকা পর্যন্ত সাড়ে ৩ ঘন্টার সড়ক পথে এখন সময় লাগছে ৬-৭ ঘন্টা। ঈদকে কেন্দ্র করে এবারো সড়ক পথে বেসরকারী পরিবহন সংস্থাগুলো নিজেদের মত করে ভাড়া আদায় করছে। অনেক সড়ক পরিবহন কোম্পানী রুট পারমিটের বাইরেও বাস নিয়ে আসছে বরিশাল সহ আশে পাশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রুটে। ভাড়াও আদায় করছে তাদের মত করে। বরিশাল থেকে মাত্র ১৬৫ কিলোমিটার সড়ক পথে ঢাকার বাতানুকুল বাসে সাড়ে ১২শ টাকা ভাড়া আদায় এখন স্বাভাবিক ঘটনা। অথচ বিআরটিসি একই পথে ৬শ টাকায় যাত্রী পরিবহন করছে। তবে রাষ্ট্রীয় এ সড়ক পরিবহন সংস্থাটি ঈদ উপলক্ষে কোন বিশেষ বাস সার্ভিস প্রবর্তন করতে পারেনি যানবাহন স্বল্পতার কারণে।
পাশাপাশি যানবাহনের অভাবে কর্মস্থলমুখী বিপুল সংখ্যক মানুষই ঢাকা ও সন্নিহিত এলাকার কর্মস্থলে ফিরতে বাড়তি বিড়ম্বনা এড়াতে গত কয়েকদিন ধরে নৌপথমুখী হচ্ছেন। ফলে বরিশাল নদীবন্দরে পুনরায় পুরনো ছবি ফুটে উঠছে। আগামী শনিবার পর্যন্ত বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চল থেকে ঢাকামুখী নৌযানে ভীড় অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছেন বিআইডব্লিউটিএ সহ নৌযান  মালিক ও শ্রমিকরা। গত শুক্রবার শুধু বরিশাল নদীবন্দর থেকেই ১৩টি নৌযান চাঁদপুর ও ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। শনিবারেও ছিল একই চিত্র। আর এসব নৌযানে তিল ধারণের ঠাঁই ছিলনা। প্রতিটি নৌযানে দুই থেকে তিনগুন পর্যন্ত যাত্রী বহন করেছে।
বরিশাল-ঢাকা নৌপথে রুট পারমিটধারী প্রায় ২৯টি যাত্রীবাহী নৌযানের ১০টি ইতোমধ্যে হারিয়ে গেছে। অবশিষ্টগুলো কোনমতে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখলেও দুটি ঈদ বাদে ১১ মাস যাত্রীর খরায় তার সবগুলোই ধুকছে। তবে নিকটজনের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঘরে ফেরা শ্রমজীবী ও কর্মজীবী মানুষ আগামী শনিবার পর্যন্তই বরিশাল ও সন্নিহিত এলাকা থেকে কর্মস্থলে ফিরবেন বলে আশা করছেন সড়ক ও নৌ পরিবহনের সাথে সংশ্লিষ্টরা।
রাষ্ট্রীয় নৌ পরিবহন সংস্থা-বিআইডব্লিউটিসি ঈদের আগে দুদিন ও পরে মাত্র একদিন ১টি নৌযান পরিচালনের পরে গতকাল তার পরিসমাপ্তি ঘটেছে। সংস্থাটির পৌনে দুইশ বছরের ঐতিহ্যবাহী ঢাকা-বরিশাল নৌপথের রকেট স্টিমার সার্ভিসটি বন্ধ করোনা মহামারী শুরুর পর থেকেই। রাষ্ট্রীয় আকাশ পরিবহন সংস্থা বিমান-এর ‘ঈদ পরবর্তি একমাত্র বিশেষ ফ্লাইট’এর  শুরু ও শেষ ছিল গতকালই । অথচ বরিশাল সহ সন্নিহিত এলাকা থেকে রাজধানী ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের কর্মস্থলমুখী জন¯্রােত অব্যাহত থাকবে আগামী ২৯ জুন পর্যন্ত।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT