আলো ভাইকে যেমন দেখেছি আলো ভাইকে যেমন দেখেছি - ajkerparibartan.com
আলো ভাইকে যেমন দেখেছি

3:34 pm , June 20, 2024

এম.এম.আমজাদ হোসাইন
বরিশালের অন্যতম আলোচিত নাম আলো কমিশনার খ্যাত আলমগীর খান আলো প্রায় দেড়মাস কোমায় থাকার পর মৃত্যুবরন করেছেন। ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন। গতবছর তিনি একমাত্র পুত্রের অসুস্থতার খোজঁ নিতে আমেরিকা যান এবং নিজেই অসুস্থ অবস্থায় (অচেতন) ফিরে আসেন। তারপর আর তার জ্ঞান ফেরেনি।
আলমগীর খান আলো ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ফুটবলার, ক্রীড়া সংগঠক, জনপ্রতিনিধি, প্রথম শ্রেনীর ঠিকাদার, সমাজসেবক, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সদস্য এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অন্যতম পরিচালক।
সদালাপী, স্পষ্টভাষী এবং মুক্ত মনের এই আলো ভাইর সাথে আমার পরিচয় মূলত আশির দশক থেকে। আমি ঝালকাঠীর কলেজ অব এডুকেশনের অধ্যক্ষ থাকার সময় প্রায়ই ডেকে পাঠিয়ে তার গাড়ীতে বরিশাল নিয়ে আসতেন। হালিমা খাতুন স্কুলের প্রধান শিক্ষক থাকার সময় তৎকালীন জননন্দিত মেয়র শওকত হোসেন হিরণের পরামর্শে আলো ভাইকে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি করা হয়। এটা তিনি নিজেও জানতেন। অথচ কোন অনুষ্ঠানে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা বা ব্যক্তি বর্গের সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিতে বলতেন, এই হেড মাস্টার আমাকে সভাপতি বানিয়েছেন।
আলো ভাইর হাত ধরেই মূলত হালিমা খাতুন স্কুলের উন্নয়নের ধারা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। আমি ২০১৩ সালে অবসরে যাওয়ার পরও তার অসুস্থতার পূর্ব পর্যন্ত তিনি সভাপতি ছিলেন। আলো ভাই’র স্বহৃদয় সহানুভূতির কারনেই প্লাম্বার ফকরুদ্দিন (মৃত) সহ বেশ কয়েকজন আয়া-পিয়ন চাকরি পেয়েছে। প্রকৃত পক্ষে আলো ভাই’র সাথে যে বা যারা মিশেনি সে বা তাদেরকে আলো ভাই সম্পর্ক লিখে ধারনা দেয়া যাবেনা। সঙ্গী সাথী বা সহকর্মীদের খাওয়ানোর ব্যাপারে তিনি ছিলেন একেবারেই উদার মনের মানুষ। আমার কাছে সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার হলো একজন প্রথম শ্রেনীর ঠিকাদার হওয়া সত্বেত্ত তার কোন হিসাবের খাতা ছিলনা। তার ম্যানেজার বা দায়িত্ব প্রাপ্তদের কখন কোন কাজে কত টাকা দিয়েছেন তা তিনি মুখস্থ বলতে পারতেন। আমি মনে করি এ ব্যাপারে তার কর্মসহযোগীরাও বিস্মিত হতেন। তার বাসার ছোট বেলা থেকে কাজ করা এক ছেলেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি দিয়েছেন। ছেলেটি সুনামের সাথে এখনো কাজ করছে।
বাজারে তিনি মাছের দাম করতেন না, পছন্দের হলে ব্যাগে পুরে বাসায় পাঠিয়ে দিতে বলতেন। অথচ বিক্রেতা কখনো দাম চাইতনা। কেননা সেও জানে আলো ভাই বেশি ছাড়া কম দিবেন না। সে কারনেই হয়তো বিক্রেতারা তাকে ঘিরে ধরত। আসলে আলোভাই একজনই ছিলেন। আমরা জানি, দোষে গুনেই মানুষ, কিন্তু আলো ভাই’র গুনের পাল্লাটাই আমি ভারী দেখেছি। তবে যেহেতু তিনি স্পষ্ট কথায় অনেকের দোষ-গুন বলে ফেলতেন সে কারনে হয়তো কারো মনকষ্ট থাকতেই পারে। তিনি তো আর আজ আমাদের মাঝে নেই আর কখনো ফিরেও আসবেন না। কিন্তু তার জীবনধারা বিস্মৃত হওয়ার নয় বলেই আমার ধারনা। আমি তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা ও শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT