4:43 pm , June 13, 2024

জুবায়ের হোসেন ॥ নগরীতে তেমন না জমলেও সদর উপজেলা সহ আশপাশের ইউনিয়ন গুলোতে জমে উঠেছে কোরবানীর পশুর হাট। ঈদুল আযহার আর মাত্র ৩ দিন বাকি থাকলেও গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর রুপাতলী, বাঘিয়া, কাউনিয়া সহ বিভিন্ন ছোট বড় হাটে ক্রেতাদের তেমন ভীড় লক্ষ করা যায়নি। তবে সদর উপজেলার চরমোনাই, ঝালকাঠীর সুগন্ধিয়া পশুর হাটে জমজমাট বেচাকেনা করতে দেখা গেছে বেপারীদের। ক্রেতাদের ভীড়ও ছিল চোখে পড়ার মত। বেপারীরা জানায়, হাট সবেমাত্র জমে উঠেছে। আজ শুক্রবার থেকে শুরু হবে মূল বেচাকেনা। এসকল হাটে কোরবানীর পশুর প্রাচুর্য থাকলেও দাম ছিল ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। গরু এবং ছাগল উভয় পশুর দাম তুলনামূলক বেশিই হাকানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে প্রায় সবগুলো হাটের ক্রেতারা। তবে এবছর হাটের বাইরে বিভিন্ন খামারে তুলনামূলক লাভে পশু ক্রয় করা যাচ্ছে বলেও জানান তারা। এসকল খামারে কোন ধরনের ভোগান্তি ছাড়া পশু কিনতে পারছেন এবং খাজনা ছাড়া পশু ক্রয়ে লাভও হচ্ছে ভালই। এছাড়া খামার থেকে কেনা গরু ক্রেতাদের বাড়ি পর্যন্ত পৌছে দিচ্ছেন অনেক খামারি তাই বেশ কিছুদিন আগ থেকেই বরিশাল নগরীর আশপাশের খামারের গরু বেচাকেনা জমজমাট রয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রুপাতলী হাটে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতা রয়েছে তবে বিক্রি কম। বেশিরভাগ ক্রেতারা এখানে কেনার জন্য পশু যাচাই করতে এসেছেন। খুব সুবিধাজনক দামে না পেলে কিনছেন কম। এই হাটে লাখ টাকার নিচে গরু নেই বল্লেই চলে। ছাগলের দামও বেশ চড়া। দেশি গরু খুব কম উঠেছে। ফ্রিজিয়ান জাতের গরুর সংখ্যা বেশি। ছাগল রয়েছে বিভিন্ন জাতের তবে তাও বেশ দাম বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। এই হাটে ৬ টি গরু নিয়ে আসা গৌরনদীর বেপারী আনোয়ার মল্লিক জানান, ৬ টির মধ্যে দুটি গরু তারা নিজের গৃহস্থলিতে পালন করা। শতভাগ দেশি এই গরু দুটির দাম তিনি ৩ লাখ টাকা চেয়েছেন। ৪ টি গরু ফ্রিজিয়ান জাতের। এই হাটে ক্রেতা খুবই কম তাই আজ বেচাকেনার পরিস্থিতি বুঝে চরমোনাই হাটে যাবেন বলে জানান। এখন ক্রেতরা কেনার চাইতে বেশিই যাচাইবাছাই করতে আসছে। এদের মধ্যে যারা দাম বলছে তা আশার তুলনায় অনেক কম। রেমালের কারনে এবার প্রচুর পরিমানে পশু মারা যাওয়া, খাবারের ক্ষতি হওয়া সহ বেশ কিছু কারনে এবার পশুর দাম বেশি। এক্ষেত্রে তারা চাইলেও কিছু করতে পারছেন না বলে দাবি করেন। আজ শুক্রবার থেকে বিক্রি বাড়তে পারে বলে আশা করেনে তিনি। তা না হলে পাইকার বা কসাইদের কাছে কেনা দামে বিক্রী করে চলে যাবেন।
চরমোনাই পশুর হাটে গিয়ে দেখা গেছে, সব মিলিয়ে প্রায় ৪ হাজার বিভিন্ন জাতের গরু উঠেছে বিশাল এই হাটে। এর মধ্যে সিংহভাগ ফ্রিজিয়ান। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গরু নিয়ে খামারি সহ বেপারীরা এসেছে এখানে। সর্বোচ্চ ৮ লাখ টাকা একটি ফ্রিজিয়ান গরুর দাম হাকা হয়েছে। গাজীপুর থেকে আসা এক খামারী বজলু শেখ তার এই গরুটির নাম দিয়েছেন “ফাইটার”। তার আনা ২০ টি গরুর সবগুলো ফ্রিজিয়ান জাতের। সবছেয়ে বড় গরু ফাইটারকে তিনি নিজেই লালন পালন করেছেন। প্রথম দিনেই সাড়ে ৫ লাখ টাকা উঠেছে গরুটির দাম। এটিই চরমোনাই হাটের সব চেয়ে বড় গরু বলে দাবি তার। শুক্রবার শনিবার মূল বেচাকেনা হবে বলে জানান তিনি। গতবছর প্রথম এই হাটে কারবার করতে এসছেন বলেন। এই হাটের সার্বিক ব্যাবস্থাপনা বেশ ভাল তাই এবছর আবারও এসছেন। আশা করছেন লাভ করতে পারবেন। তবে এবছর ক্রেতারা দাম বলছে তুলনামূলক খুবই কম। হাটে পাইকারী বিক্রেতা ও কসাইদের কারনে বেপারীরা দাম পাচ্ছেনা বলে অভিযোগ করেন তিনি।
চরমোনাই হাটে আসা ক্রেতা আনিস মৃধা বলেন, আজ মাত্র গরুর হাট জমেছে। কাল পরশু দুই দিন দাম কিছুটা কমতে পারে। বৃহস্পতিবার চড়া দর হেকেছে সব বিক্রেতারা। ৭ ভাগে ২ লাখ টাকার একটি গরু কিনতে এসছেন। তবে পছন্দ হয়নি, যা পছন্দ হয়েছে তা মেলেনি দামে। এবছর গরু ও ছাগল উভয় পশুর দাম বেশ চড়া। দেশি গরু নেই বল্লেই চলে। ঈদের আগের দিন কিনবেন অথবা পরিচিত কোন খামারে গিয়ে বাজেটের মধ্যে পশু কেনার চেষ্টা করবেন।