4:15 pm , June 10, 2024

বাকেরগঞ্জ প্রতিবেদক ॥ নিজের প্রথম সভা কোরাম সংকটে করতে পারেননি বাকেরগঞ্জের নব নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান। উপজেলার আইনশৃংখলা কমিটির প্রথম মাসিক সভা ছিলো গতকাল সোমবার। কিন্তু সেই সভায় দুই ভাইস চেয়ারম্যানসহ ১২ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আসেননি। তাই উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে পরিচয় সেরে দপ্তর ত্যাগ করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান রাজিব আহম্মেদ তালুকদার।
সভায় না আসা ইউনিয়ন চেয়ারম্যানরা জানিয়েছেন, রোববার কোন ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে না জানিয়ে নতুন উপজেলা চেয়ারম্যান দায়িত্ব গ্রহন করেছেন। এ কারনেই মাসিক সভাসহ উপজেলা প্রশাসনের সকল কাজ বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলেন ইউপি চেয়ারম্যানরা। তাই আসেননি উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান আবদুস সালাম মল্লিক ও মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান জাহানারা বেগমও। সকাল ১০টায় উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভা শুরু হওয়ার কথা থাকলে ছিলো। সভার ১৮ জনের মধ্যে ১৪ সদস্য না আসায় সভা হয়নি। বেলা ১২টায় উপজেলা চেয়ারম্যান রাজিব আহম্মদ তালুকদারের সাথে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের পরিচয় সভা করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের সঞ্চালনায় পরিচিতি সভা দুপুর ২ টার দিকে শেষ হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন পৌর মেয়র লোকমান ডাকুয়া, গারুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান এস এম কাইয়ুম খান, কলসকাঠী ইউপি চেয়ারম্যান ফয়সাল ওয়াহিদ তালুকদার মুন্না, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুনিতি কুমার সাহা, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ কামরুল প্রমূখ। দাঁড়িয়াল ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হাওলাদার জানান, নব-নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথে কোন ধরনের আলাপ-আলোচনা ও সমন্বয় না করেই রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। সেই দায়িত্বভার গ্রহন অনুষ্ঠানে সমন্বয়হীনতার অভিযোগে তিনিসহ উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নের ১২ জন চেয়ারম্যান মাসিক সভা বর্জন করেন। সভা বর্জন করেন রঙ্গশ্রী ইউপি চেয়ারম্যান বসির উদ্দিন সিকদার, ভরপাশা ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান খান খোকন, পাদ্রীশিবপুর ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল হাসান বাবু, চরামদ্দি ইউপি চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন খোকন, দুধল ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোর্শেদ উজ্জল, দুর্গাপাশা ইউপি চেয়ারম্যান হানিফ তালুকদার, ফরিদপুর ইউপি চেয়ারম্যান এস এম শফিকুর রহমান, কবাই ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল হক বাদল তালুকদার, নলুয়া ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ আলম খান, চরাদি ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন ও নিয়ামতি ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হুমায়ুন কবির। তাদের সাথে একাত্মতা পোষণ করে উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান আবদুস সালাম মল্লিক ও মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান জাহানারা বেগম। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, কোরাম সংকটের কারণে উপজেলা পরিষদের মাসিক সভা হয়নি। নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের পরিচিতি সভা হয়েছে। সভা না হওয়ায় উপজেলা পরিষদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হয়নি। সভায় ১৮ জন সদস্যের মাত্র ৪ জন উপস্থিত ছিলেন। সভায় অধিকাংশ ইউপি চেয়ারম্যান অনুপস্থিত ছিলেন এটা সত্য। তবে কি কারনে দুইজন ভাইস-চেয়ারম্যানসহ ১২ জন ইউপি চেয়ারম্যান অনুপস্থিত ছিলেন সে বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। উপজেলা চেয়ারম্যান রাজিব আহম্মদ তালুকদার বলেন, জনপ্রতিনিধিদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া দরকার। মাসিক সভায় ইউপি চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিতি অনভিপ্রেত। নিজেদের মধ্যে কোন ভুল বোঝাবুঝি হলে, সেগুলো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে। তাই দায়িত্বশীল হয়ে সভা বর্জন না করে সহনশীল থেকে আগামী মাসিক সভায় তারা উপস্থিত থাকবেন বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।