4:09 pm , June 10, 2024

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ চিকিৎসক সহ প্রয়োজনীয় জনবল এবং চিকিৎসা সহায়ক সুবিধার অভাবে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগটি নিজেই ধুকছে। প্রতিদিন গড়ে ৩শতাধিক রোগী এ হাসপাতালটির জরুরী বিভাগে এলেও তারা কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত ১শ শয্যার এ হাসপাতালটি ১৯৭৮ সালে নিজস্ব ভবনে ৫শ শয্যার হাসপাতালে সম্প্রসারিত হবার সময় ১০জন ইমার্জেন্সী মেডিকেল অফিসার নিয়ে জরুরী বিভাগ চালু করা হয়। ইতোমধ্যে হাসপাতালটি ১ হাজার শয্যায় উন্নীত করা হলেও এর ৫শ শয্যার জনবলেরও বিপুল সংখ্যক পদ শূন্য। এমনকি দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ সরকারি এ চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানটির জরুরী বিভাগের জন্য মঞ্জুরীকৃত ১০ জন ‘ইমার্জেন্সী মেডিকেল অফিসার’ এর মধ্যে বর্তমানে নিয়োজিত আছেন ৭ জন। তবে এসব চিকিৎসকের মধ্যেও প্রায় প্রতিদিনই গড়ে দু-একজন করে ছুটি সহ নানা অনিবার্য কারণে অনুপস্থিত থাকেন।
ফলে সর্বাধিক জনগুরুত্বপূর্ণ জরুরী বিভাগের ১০ জন ইমার্জেন্সী মেডিকেল অফিসারের চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে হচ্ছে ৫-৬ জন চিকিৎসককে। এমনকি হাসপাতালটির ৮জন গাড়ী চালকের মধ্যে বতমানে কর্মরত আছেন মাত্র ৩ জন। ফলে জরুরী বিভাগের এ্যাম্বুলেন্স পরিসেবাও প্রায় বিপর্যস্ত।
প্রতিষ্ঠার অর্ধ শতাব্দী পরেও আজ পর্যন্ত শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে কোন ক্যাজুয়ালিটি ওয়ার্ড প্রতিষ্ঠিত হয়নি। প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদী ছাড়াই একটি মিনি ওটি থাকলেও সেখানে কোন চিকিৎসক নেই। কয়েকজন মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট আগত কাটা ছেড়া রোগীদের সেলাই সহ প্রাথমিক কিছু চিকিৎসা প্রদান করলেও অস্ত্রপচার কক্ষটি থেকে চিকিৎসা সেবা প্রত্যাসীরা কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চিকিৎসক জানিয়েছেন, চিকিৎসক ও চিকিৎসা সহায়ক সরঞ্জাম সহ জরুরী বিভাগ ও বহির্বিভাগ সংলগ্ন ক্যাজুয়ালিটি বিভাগ চালু করলে এ হাসপাতালটিতে রোগী ভর্তির হার অন্তত ২৫ ভাগ পর্যন্ত হ্রাস করা সম্ভব। ৫শ শয্যার অনুমোদিত জনবল নিয়ে ১ হাজার শয্যার এ হাসপাতালটিতে বর্তমানে গড়ে প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজার রোগী চিকিৎসাধীন থাকছে।
কোন ধরনের অবকাঠামো উন্নয়ন বা সম্প্রসারণ না করেই ৫শ শয্যার এ হাসপাতালটিকে বছর কয়েক আগে এক হাজার শয্যায় উন্নীত করা হলেও আজ পর্যন্ত চিকিৎসক সহ এর জনবল মঞ্জুরী না দেয়ায় পুরো হাসপাতালটির চিকিৎসা সেবা কার্যক্রমই মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম। ৫শ শয্যার জনবলেরও বিপুল সংখ্যক শূন্য পদ নিয়েই ১ হাজার শয্যায় উন্নীত করা হাসপাতালটি সরকারি চিকিৎসা সেবার জানান দিলেও সাধারন মানুষ সুষ্ঠু চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। এ ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলামের সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, জনবল মঞ্জুরী অত্যন্ত কঠিন প্রক্রিয়া। আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়কে ১ হাজার শয্যার জনবল মঞ্জুরীর বিষয়ে বারবারই অবহিত করছি। বহির্বিভাগ ও জরুরী বিভাগের সাথে একটি ক্যাজুয়ালিটি ওয়ার্ড চালু করার মত অবকাঠামো সংকটের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, জরুরী বিভাগের পশ্চিম পাশে একটি ভবন নির্মান করে ক্যাজুয়ালিটি ওয়ার্ড চালু করার লক্ষ্যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। জরুরী বিভাগের চিকিৎসক নিয়োগের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার কথাও জানান তিনি।