ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে নিশ্চিহ্ন কাউখালির জোলাগাতি মাদ্রাসা ॥ খোলা আকাশের নিচে পাঠদান ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে নিশ্চিহ্ন কাউখালির জোলাগাতি মাদ্রাসা ॥ খোলা আকাশের নিচে পাঠদান - ajkerparibartan.com
ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে নিশ্চিহ্ন কাউখালির জোলাগাতি মাদ্রাসা ॥ খোলা আকাশের নিচে পাঠদান

4:23 pm , June 2, 2024

রিয়াদ মাহমুদ সিকদার, কাউখালী  প্রতিবেদক ॥ পিরোজপুর জেলার উপকূলীয় উপজেলা কাউখালীর শিয়ালকাঠী ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী জোলাগাতী ইসলামিয়া ফাজিল ( ডিগ্রি) মাদ্রাসার টিনশেড বিল্ডিং এর ছয়টি শ্রেণিকক্ষ অধ্যাক্ষের  কক্ষ, বঙ্গবন্ধু কর্ণার ও একটি কাঠের ঘরের শ্রেণিকক্ষ, কম্পিউটার, রুমের আসবাবপত্র সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শ্রেণিকক্ষের লেখাপড়ার কার্যক্রম চালিয়ে নিতে এখন নিতে হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে ক্লাশ।
১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত উপজেলার পুরাতন মাদ্রাসাটিতে নূরানী বা শিশু শ্রেণি থেকে ফাজিল (ডিগ্রী) পর্যন্ত পার্শ্ববর্তী দুটি সীমান্তবর্তী উপজেলা ভান্ডারিয়া, রাজাপুর সহ শিয়ালকাঠি ইউনিয়নের ৯টি গ্রামের ৭০০ ছাত্র-ছাত্রী নিয়মিত পাঠ দান করে আসছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়, পুরনো একটিমাত্র টিনের ঘর,২ কক্ষ বিশিষ্ট একটি পাকা ঘর,৫ কক্ষ বিশিষ্ট একটি বহুতল ভবনের কাজ চলছিলো।কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের কারণে এসব ঘরের টিনের ছাউনি উড়ে যায়। টিনশেট লম্বা যে শ্রেণিকক্ষটিতে নিয়মিত ক্লাশ হতো সেটি গাছ পড়ে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে মাদ্রাসাটিতে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
মাদ্রাসার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা আক্তার বলেন, ঘূর্ণিঝড় আমাদের মাদ্রাসা উড়িয়ে নিয়ে গেছে। সামনে আমাদের পরীক্ষা। ক্লাস না করলে আমরা পিছিয়ে পড়বো। তাই রোদের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে আমাদের ক্লাশ করানো হচ্ছে। অতিদ্রুত আমরা মাদ্রাসা ভবন চাই।
তানভীর নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, এখনই ভবন নির্মাণের উদ্যোগ না নিলে আমাদের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়বে। খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে অসুবিধা হচ্ছে। রোদ আর গরমে বসে থাকা যায় না। এ বিষয়ে এমপি মহোদয়ের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি। অভিভাবক আবুল বাশার জানান, ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে পুরো মাদ্রাসাটি ল-ভ- হয়ে গেছে। সামনে পরীক্ষা। তাই এখন শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে লেখাপড়া করতে হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের কোন সিগন্যাল পেলে গ্রামবাসী গবাদিপশু নিয়ে মাদ্রাসার পাকা বিল্ডিং এসে আশ্রয় নেয়। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করছি এই মাদ্রাসায় একটি সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করা হোক।
শিয়ালকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী সিদ্দিকুর রহমান জানান,  এই অঞ্চলের পুরাতন মাদ্রাসা। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার জন্য।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুর রহিম বলেন, শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় যেন পিছিয়ে না পড়ে তাই বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নিচে, ভেঙে পড়া জরাজীর্ণ ভবনে, মসজিদের বারান্দায় ও এতিমখানায় ক্লাস নিতে হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হুমায়ুন কবির তালুকদার রাজু বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই মাদ্রাসাটির আধুনিক ভবন সহ সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ সজল মোল্লা বলেন, শিক্ষা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষতিগ্রস্ত মাদ্রাসাটি পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিষয়টি দেখা হবে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT